ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

নিয়ম না মেনে ৪৭ জনকে পদোন্নতির তোড়জোড় 

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৯, ২০১৯
নিয়ম না মেনে ৪৭ জনকে পদোন্নতির তোড়জোড়  রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের কার্যালয়

চট্টগ্রাম: স্নাতক বা ডিগ্রি পাসের বাধ্যবাধকতা থাকলেও রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলে ৪৭ জনকে পদোন্নতি দেওয়া হচ্ছে যাদের যোগ্যতা অষ্টম শ্রেণি পাস। শুধু তাই নয়, পদোন্নতি বোর্ডের কমিটিতে থাকা তিনজনের মধ্যে একজন দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্তও।

অভিযোগ রয়েছে জনপ্রতি এক থেকে দুই লাখ টাকা নিয়ে তাদের পদোন্নতি দেওয়া হচ্ছে। এ নিয়ে রেলওয়েতে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

সূত্র জানায়, আগামী ৬ নভেম্বর স্টেশন মাস্টার (গ্রেড-২)পদোন্নতি পরীক্ষার আয়োজন করা হয়। ১০৮ জনকে বাছাইও করা হয়।

যাদের মধ্যে ৪৭ জন অন্য বিভাগের। এর মধ্যে সুইপার, খালাসি ও ওয়েম্যানসহ অন্যান্য ক্যাটাগরি রয়েছে।

স্টেশন মাস্টার পদে স্নাতক বা ডিগ্রি পাসের দরকার হলেও ৪৭ জনের কারও ওই যোগ্যতা নেই। ১৯৮০ সালের দিকে তারা অষ্টম শ্রেণি পাসের সনদ দিয়ে চাকরিতে যোগদান করেছিলেন।

অভিযোগ রয়েছে, টাকা নিয়ে তাদের পদোন্নতি দিচ্ছেন কিছু দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা। পদোন্নতি পরীক্ষার জন্য গঠিত বোর্ড কমিটির সদস্যসচিব হলেন রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের সিনিয়র পার্সোনাল অফিসার মো. সিরাজ উল্লাহ। তিনি এর আগে জুনিয়র ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (জেটিআই) পদোন্নতি পরীক্ষায় দুর্নীতি ও অনিয়মের কারণে রেলওয়ের মহাপরিচালকের গঠিত তদন্ত কমিটিতে দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন।

এদিকে পদোন্নতি পরীক্ষা বাতিল চেয়ে গত ২৫ অক্টোবর (শুক্রবার) রেলমন্ত্রী বরারবর চিঠি দিয়েছেন বাংলাদেশ রেলওয়ের স্টেশন মাস্টার ও কর্মচারী ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মোখলেছুর রহমান।

মোখলেছুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, স্টেশন মাস্টার পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে স্নাতক বা ডিগ্রি পাসের প্রয়োজন হয়। যেটি রেলওয়ের নিয়োগ বিধিতে আছে। অথচ অষ্টম শ্রেণির পাস ৪৭ জনকে স্টেশন মাস্টার পদে পদোন্নতি পরীক্ষার জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। যাতে নিয়ম মানা হয়নি। এছাড়া ১০৮ জনের মধ্যে সুইপার, খালাসি ও ওয়েম্যানসহ অন্যান্য ক্যাটাগরি থেকে বাছাই করা হয়েছে, যা নিয়ম বহির্ভূত।

তিনি বলেন, এ ছাড়া পদোন্নতি পরীক্ষার কমিটিতে যাকে সদস্যসচিব করা হয়েছে তার বিরুদ্ধে এর আগে ব্যাপক দুর্নীতির ও অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। এমন লোক পদোন্নতি পরীক্ষায় থাকলে অনিয়ম-তো হবেই। আমরা শিগগরই এ পদোন্নতি পরীক্ষা বাতিল চাই ও যাদের পদোন্নতি দেওয়া হচ্ছে তাদের শিক্ষাগত যোগ্যতাও যাচাই করার অনুরোধ জানাই।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে পদোন্নতি পরীক্ষার সদস্যসচিব রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের সিনিয়র পার্সোনাল অফিসার মো. সিরাজ উল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, জুনিয়র ট্রাফিক ইনসপেক্টর (জেটিআই) পদোন্নতি পরীক্ষা কমিটি বাতিল করা হয়েছিল। এখানে শুধু আমি না, সবাই দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন। যেহেতু তারা আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলছে, আমি কমিটি থেকে সরে গেলে কি সমাধান হবে? আমি রেলওয়ের ডিজিকে অনুরোধ করে আমার নামটা প্রত্যাহার করে নেব।

রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের প্রধান পরিবহন কর্মকর্তা নাজমুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, স্টেশন মাস্টার পদোন্নতি পরীক্ষার অভিযোগের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বসে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১২৫০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৯, ২০১৯
জেইউ/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।