ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশনের মতে, কিশোর-কিশোরী বা শিক্ষার্থীদের মধ্যে এ প্রবণতা সবচেয়ে বেশি। এর গুরুত্ব উপলব্ধি করে ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটি (ইডিইউ) আয়োজন করেছে মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক এক সেমিনার।
বুধবার (১৬ অক্টোবর) দুপুর ২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সেমিনার হলে ‘নট অল উন্ডস আর ভিজিবল’ অর্থাৎ ‘সব ক্ষত দৃশ্যমান নয়’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
ইডিইউ সোশ্যাল সার্ভিস ক্লাবের উদ্যোগে এ সেমিনারে প্রধান বক্তা ছিলেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট মাহজারিন গাফফার।
সেমিনারের প্রধান অতিথি ইডিইউ উপাচার্য অধ্যাপক মু. সিকান্দার খান বলেন, সাধারণত অন্যান্য অসুস্থতা সকলেই অনুভব করতে বা দেখতে পারে। কিন্তু মানসিক সমস্যার ক্ষেত্রে কেবলমাত্র একজন বিশেষজ্ঞই পারে চিহ্নিত করে তা নিরাময়ের ব্যবস্থা করতে। এই সেমিনার শিক্ষার্থীদের মধ্যে নিজের ও আশপাশের মানুষের মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি করবে।
ইডিইউর প্রতিষ্ঠাতা ভাইস চেয়ারম্যান সাঈদ আল নোমান বলেন, মানসিক অসুস্থতা সবসময় জিনগত নয়। অনেক সময় সামগ্রিক পরিস্থিতি ও প্রতিবেশে নানান ঘটনা জীবনে চলার পথে তীব্রভাবে প্রভাবিত করে, যা সাংঘর্ষিকভাবে আবির্ভূত হয় মানসিক অসুস্থতা রূপে। সে পারিপার্শ্বিকতা বা পরিবেশকে নিয়ন্ত্রণ সবসময় সম্ভব হয়ে ওঠে না। ফলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রায়ই অনেকে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে, যা তাদের পড়ালেখা ব্যাহত করে।
তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদেরকে ন্যূনতম সহযোগিতা দেওয়া আমাদের দায়িত্ব। এই চিন্তা থেকে ইডিইউতে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর জন্য একজন করে একাডেমিক অ্যাডভাইজর দিচ্ছি, যারা একাডেমিক বিষয়ের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের যাবতীয় সমস্যা নিয়ে আলোচনা ও কাউন্সিলিং করবেন।
বক্তা মাহজারিন গাফফার বলেন, সংবেদনশীল প্রাণী হিসেবে যেকোন মানুষই মানসিক সমস্যায় ভুগতে পারে। বাংলাদেশে প্রাপ্ত বয়স্কদের মধ্যে ৩১ শতাংশ এবং অপ্রাপ্ত বয়স্কদের মধ্যে ২২.৯ শতাংশ মানুষ বিভিন্ন মাত্রায় মানসিক সমস্যায় আক্রান্ত। এ বিষয়ে অনেকসময় তারা নিজেরাও ওয়াকিবহাল থাকেন না। এই বিশাল একটি জনসংখ্যা তাদের ব্যক্তিগত নৈপুণ্য পরিপূর্ণভাবে প্রকাশ করতে পারে না। তাদের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ ও সহযোগিতার মাধ্যমে মিশতে হবে আমাদের।
১০ অক্টোবর বিশ্বজুড়ে পালিত হয়েছে বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস। এ উপলক্ষে ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটি আয়োজন করে এ সেমিনার। এ বছর দিবসটি আয়োজনে মূল উপজীব্য হলো- আত্মহত্যার প্রবণতা প্রতিরোধ।
এ বিষয়ের অবতারণা করে মাহজারিন গাফফার বলেন, আত্মহত্যাজনিত মৃত্যুর অধিকাংশই প্রতিরোধযোগ্য। অধিকাংশ ব্যক্তিই আত্মহত্যার সময় কোনো না কোনো মানসিক সমস্যায় আক্রান্ত থাকেন। সাধারণত সেটা গুরুত্ব দেওয়া হয় না বা মানসিক রোগ নিশ্চিত হলেও যথাযথ চিকিৎসা করা হয় না বলেই আত্মহত্যার মত ঘটনা দিনে দিনে বৃদ্ধি পাচ্ছে। মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়নে কাউন্সিলিংয়ের মাধ্যমে আত্মহত্যার হার কমিয়ে আনা সম্ভব।
সেমিনারে ইডিইউর কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক সামস উদ-দোহা, মহাপরিচালক সৈয়দ শফিকউদ্দীন আহমেদ, রেজিস্ট্রার সজল কান্তি বড়ুয়াসহ ফ্যাকাল্টি মেম্বার, কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১০৫৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৭, ২০১৯
এসি/টিসি