বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) চবি উপাচার্য (রুটিন দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতারের সঙ্গে বিভিন্ন হলের প্রভোস্ট, হাউস টিউটর, প্রক্টোরিয়াল বডির এক বৈঠকে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
বৈঠকে উপস্থিত একজন প্রভোস্ট বাংলানিউজকে জানান, আবাসিক হলগুলোতে সরকার দলীয় ছাত্রসংগঠনের একটা প্রভাব থাকে।
তিনি বলেন, এ রকম ঘটনা যাতে চবিতে ফের না ঘটে সে জন্য আবাসিক হলগুলোতে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বৈঠকে।
প্রভোস্ট কমিটির আহ্বায়ক ও মাস্টার দা সূর্যসেন হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. খালেদ মিসবাহুজ্জামান বাংলানিউজকে জানান, শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা বজায় রেখে চবির সব হলে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। প্রক্টোরিয়াল বডিকে বিষয়টি পর্যালোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য উপাচার্য নির্দেশনা দিয়েছেন।
সহকারী প্রক্টর মুহাম্মদ ইয়াকুব বাংলানিউজকে জানান, হলগুলোতে সিসি ক্যামেরা স্থাপনে উপাচার্য নির্দেশনা দিয়েছেন। কয়েকদিনের মধ্যে সব হল পরিদর্শনে যাবে প্রক্টোরিয়াল বডি। এরপর হলের কোন কোন জায়গায় সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা যেতে পারে- সে বিষয়ে সিদ্ধান্তের পর সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হবে।
তবে ছেলেদের ৮টি হলের বিভিন্ন অংশে এসব সিসি ক্যামেরা বসানো হলেও মেয়েদের ৪টি হলে ‘গোপনীয়তা’ বিবেচনায় সিসি ক্যামেরা বসানো হবে না বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের এ শিক্ষক।
২০১৫ সাল থেকে পর্যায়ক্রমে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের কাজ শুরু হয়। গত কয়েক বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা, মোড়, আবাসিক হলের প্রধান ফটকে বেশকিছু সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়।
কর্তৃপক্ষের দাবি, সিসি ক্যামেরা স্থাপনের পর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অপরাধের মাত্রা কমে আসে। কোনো অপরাধ সংঘটিত হলেও সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে অপরাধীকে দ্রুত শনাক্ত করা যায়।
ক্যাম্পাসের পর বিশ্ববিদ্যালের আবাসিক হলগুলোর করিডোর, বিভিন্ন ব্লক সিসি ক্যামেরার আওতায় আসলে হলে সংঘটিত অপরাধের মাত্রাও কমে আসবে। কেউ অপরাধ করলে দ্রুত শনাক্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হবে। সাধারণ শিক্ষার্থীরা স্বস্তি পাবে।
এদিকে প্রভোস্ট, হাউস টিউটর এবং প্রক্টোরিয়াল বডির সঙ্গে বৈঠকে হলে সার্বক্ষণিক সময় দিতে প্রভোস্ট এবং হাউস টিউটরদের নির্দেশনা দিয়েছেন উপাচার্য (রুটিন দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার।
দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলে সংশ্লিষ্ট শিক্ষককে অব্যাহতি দেওয়া হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
বৈঠকে উপস্থিত এ এফ রহমান হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক এসএম মনিরুল হাসান বাংলানিউজকে জানান, আবাসিক শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াতে উপাচার্য প্রভোস্ট এবং হাউস টিউটরদের নির্দেশনা দিয়েছেন। নিজেদের মধ্যে সমন্বয় করে প্রভোস্ট এবং হাউস টিউটরদের মধ্যে একজনকে সার্বক্ষণিক হলে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন।
তিনি বলেন, বৈঠকে প্রভোস্ট এবং হাউস টিউটরদের হলের প্রতিটি কক্ষ নিয়মিত পরিদর্শন করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আবাসিক শিক্ষার্থীরা নিয়মিত পড়াশোনা করছে কী না- তাদের সুবিধা-অসুবিধাগুলো দেখে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
জানতে চাইলে চবি উপাচার্য (রুটিন দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার বাংলানিউজকে জানান, চবির সব হলে শিক্ষার্থীবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করতে চাই আমরা। এ জন্য হলের প্রভোস্ট এবং হাউস টিউটরদের কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, চবির হলে কোনো অনাকাঙ্খিত ঘটনা দেখতে চাই না আমরা। এ জন্য আগাম সতর্কতার অংশ হিসেবে ব্যবস্থা নিচ্ছে প্রশাসন।
বাংলাদেশ সময়: ২০৫০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১০, ২০১৯
এমআর/টিসি