ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

ফাহাদের মতো পরিণতি চমেক শিক্ষার্থী আবিদের

নিউজরুম এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ১০, ২০১৯
ফাহাদের মতো পরিণতি চমেক শিক্ষার্থী আবিদের আবিদুর রহমান আবিদ।

চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) ছাত্রাবাসে ২০১১ সালের ১৯ অক্টোবর পিটুনির শিকার হয়ে মৃত্যুবরণ করেছিলেন আবিদুর রহমান আবিদ। তিনি ছিলেন চমেকের ৫১তম ব্যাচের ব্যাচেলর অব ডেন্টাল সার্জারি (বিডিএস) ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী।

স্বজনদের অভিযোগ, ছাত্রদলের কমিটি গঠনের চেষ্টা করায় তৎকালীন ছাত্রলীগ নেতারা কয়েক দফা পিটিয়েছিলেন আবিদকে। এরপর তাকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় বোনের বাসায়।

দুইদিন পর ২১ অক্টোবর রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান আবিদ।

তিনি কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার মধ্যম বড়ইতলী গ্রামের মৃত নুরুল কবির চৌধুরীর ছেলে।

এ ঘটনায় আবিদের মামা নেয়ামত উল্লাহ বাদী হয়ে পাঁচলাইশ থানায় ছাত্রলীগ ও ছাত্রসংসদের ২২ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেছিলেন। ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে মামলার তদন্ত শেষে পুলিশ ১২ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেন।

অভিযুক্তরা হলেন- তৎকালীন ছাত্র সংসদের ভিপি মফিজুর রহমান জুম্মা, চমেক ছাত্রলীগ সভাপতি সোহেল পারভেজ, সাধারণ সম্পাদক বিজয় সরকার, সহ সাধারণ সম্পাদক হিমেল চাকমা, ফেরদৌস রাসেল, শান্ত দেবনাথ, মাহাফুজুর রহমান, নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী, দেবাশীষ চক্রবর্তী, মোস্তফা কামাল, রাশেদুর রহমান সানি ও সালমান মাহমুদ রাফসান।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আসামিদের দোষ প্রমাণ করতে না পারায় চলতি বছরের ১০ জুলাই আবিদ হত্যা মামলার রায়ে ৫ম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক সব আসামিকে খালাস দেন।

ছাত্রদল চমেক শাখার তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ আহমেদ দাবি করেছিলেন, আবিদ তাদের সক্রিয় কর্মী ছিল। আবিদসহ ছাত্রদল কর্মী ফয়সাল, নাজিম ও মাসুমকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে ছাত্রলীগ। পরে আবিদ মারা যায়।

এ ঘটনায় সাধারণ ছাত্রছাত্রীরা মেডিকেল কলেজ প্রশাসনিক ভবনের সামনে বিক্ষোভ করে। একাডেমিক কাউন্সিলের সভা শেষে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. সেলিম মো. জাহাঙ্গীর অনির্দিষ্টকালের জন্য মেডিকেল কলেজ বন্ধ এবং ছাত্র সংসদ কার্যক্রম স্থগিত ও কলেজ ক্যাম্পাসে সকল প্রকার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন।

এ ব্যাপারে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট অশোক কুমার দাশ বাংলানিউজকে বলেন, সাক্ষীরা কোনো আসামি শনাক্ত করতে পারেননি। তারপরও রাষ্ট্রপক্ষ আসামিদের দোষ প্রমাণের চেষ্টা করেছে। কিন্তু সাক্ষ্য ও জেরায় আসামিদের বিরুদ্ধে দোষ প্রমাণিত না হওয়ায় মফিজুর রহমান গংদের এ মামলার দায় হতে খালাস দেওয়া হয়।

তবে এ রায়ে সন্তুষ্ট নন আবিদের পরিবার। নিহতের ভাই মো. জিল্লুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, বুয়েটের ছাত্র আবরার ফাহাদের মতো পরিণতি হয়েছিল আবিদের। কখন রায় ঘোষণা হলো তা আমরা জানতেও পারিনি। এ রায়ের বিরুদ্ধে আমরা আপিল করবো।

তিনি বলেন, মামলার বাদী আমার মামা নেয়ামত উল্লাহ ২২ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলার এজাহার দায়ের করেছিলেন। কিন্তু পুলিশ ১০জন আসামিকে অভিযোগপত্র থেকে বাদ দিয়েছে। আদালতে সাক্ষ্য দিতে গেলে বাধা ও হুমকি দেওয়া হয়। রায়ে আসামিরা সবাই খালাস পাওয়ার কথা শুনে ষাটোর্ধ্ব মা সৈয়দুন্নেছা শুধু কাঁদছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ১০, ২০১৯
এসি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।