বুধবার (৯ অক্টোবর) বিকেলে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আতাউর রহমান খান কায়সারের ৯ম মৃত্যুবার্ষিকীর সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, অস্থিরতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছি।
তিনি বলেন, চট্টগ্রামের মানুষ কায়সার ভাইকে এখনো ভালোবাসেন। আমি তার মতো হতে পারবো না। আমি চট্টগ্রাম কমার্স কলেজের ছাত্র ছিলাম। ছাত্রলীগ করতাম। আমি এখনো মনে করি আমি আওয়ামী লীগ নয় ছাত্রলীগ করি। সিটি কলেজ ও কমার্স কলেজের ছাত্র সংসদে আমরা জিততাম।
স্মৃতিচারণ করে বলেন, কায়সার ভাইরা ক্ষণজন্মা পুরুষ। তারা মানুষের কল্যাণে জীবন উৎসর্গ করেছেন। তিনি যখন কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত হন তখন ৫ বার সভা হয়েছে। দুপুরে অফিসে, রাতে উনার বাসায় খেতাম। ষাটের দশকে কোরিয়ার অবস্থা আমাদের চেয়ে খারাপ ছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর কোরিয়া ভাগ হয়। তাদের ঘরে খাবার ছিল না। স্কুল ছিল না। তাদের মায়েরা মাথার সোনালি চুল বেচে সন্তানকে স্কুলে পাঠাতেন। ৩০ বছরে অর্থনীতিতে সমৃদ্ধ দেশ হয়েছে।
নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম।
আমিনুল ইসলাম বলেন, পৃথিবীতে এমন কোনো বড়ি নেই যা খেলে রাজনীতিবিদ হওয়া যায়। অনেক কথা টিভি পর্দায় বলা যায় না। আমরা যদি প্রয়াত নেতাদের স্মরণসভায় স্মৃতিচারণ শুনি, বঙ্গবন্ধুর বই 'অসমাপ্ত অাত্মজীবনী' পড়ি তাহলে আদর্শ শিখতে পারি।
তিনি বলেন, ইঞ্চি ইঞ্চি করে শেখ হাসিনার যে অর্জন আমরা নেতা-কর্মীরা তা মাইলের পর মাইল ধ্বংস করছি। আমরা পাষাণ হয়ে যাচ্ছি। ফেসবুকে আমাদের প্রান্তিক কর্মীরা চমৎকার বলেন, নেতারা রাজনীতি করছে কামানোর জন্য, কর্মীরা খরচ করছে দল টিকিয়ে রাখার জন্য।
বক্তব্য দেন নগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নইমউদ্দিন চৌধুরী, খোরশেদ আলম সুজন, আলতাফ হোসেন বাচ্চু, উত্তর জেলা সাধারণ সম্পাদক এমএ সালাম, যুগ্ম সম্পাদক বদিউল আলম, দক্ষিণ জেলা সহ-সভাপতি মো. ইদ্রিস, উত্তর জেলা যুগ্ম সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ।
এমএ সালাম বলেন, কায়সার ভাই গ্রুপ করতেন না। সব গ্রুপকে মিলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করতেন। আমার মনে হয়, পৌনে ১১ বছরে যে উন্নয়ন হয়েছে আমি তা কল্পনাও করতে পারিনি। আকাশে স্যাটেলাইট থেকে তার অর্জন সারা রাত বললেও শেষ করা যাবে না। কয়েকজনের কারণে অর্জন নষ্ট হচ্ছে। এটা আমাদের ব্যর্থতা। সঠিক মানুষকে সঠিক জায়গায় বসাতে হবে।
নইমউদ্দিন চৌধুরী বলেন, সব সমস্যার সমাধান যদি প্রধানমন্ত্রীকে করতে হয় তবে এত মন্ত্রীর দরকার কী! এখন সরকার ও দলের মধ্য দূরত্ব তৈরি হয়েছে। শুধু মেধাবী হলে হবে না, মেধা কোন পর্যায়ে ব্যবহৃত হচ্ছে সেটি দেখতে হবে।
খোরশেদ আলম সুজন বলেন, আতাউর রহমান খান কায়সার ছিলেন হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালা। এরশাদবিরোধী অান্দোলনে জিন্সের প্যান্ট, ক্যাডস পরে তিনি মিছিলে যেতেন।
লুবনা হারুণ চৌধুরী বলেন, বঙ্গবন্ধুর পাশে ত্যাগী নেতারা ছিলেন। তাদের ইতিহাস সংগ্রামের।
বক্তারা বলেন, চট্টগ্রামের অভিভাবক ছিলেন আতাউর রহমান খান কায়সার। তিনি সঠিক সিদ্ধান্ত দিয়ে দলকে দুঃসময়ে এগিয়ে নিয়েছিলেন। তিনি জ্ঞানী, নির্মোহ, ত্যাগী নেতা ছিলেন।
পরিবারের পক্ষে বক্তব্য দেন সংসদ সদস্য ওয়াসিকা আয়েশা খান। সঞ্চালনায় ছিলেন দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৯, ২০১৯
এআর/টিসি