ঢাকা, শনিবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

কালুরঘাট বহুমুখী রেল সেতু নির্মাণের দাবি বিএনপির

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৪৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ৫, ২০১৯
কালুরঘাট বহুমুখী রেল সেতু নির্মাণের দাবি বিএনপির বক্তব্য দেন বিএনপি নেতা এরশাদ উল্লাহ

চট্টগ্রাম: পদ্মা সেতু নির্মাণের অভিজ্ঞতার আলোকে কালুরঘাটে কর্ণফুলী নদীর ওপর সড়ক কাম রেল বহুমুখী সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন নগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ।

শনিবার (৫ অক্টোবর) চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে বোয়ালখালী বিএনপি ও অঙ্গসংগঠন আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি সরকারের প্রতি এ দাবি জানান।  

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, বোয়ালখালী তথা দক্ষিণ চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার সঙ্গে একসময় সড়ক ও রেল যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম ছিল কালুরঘাট রেল সেতু।

ব্রিটিশ আমলে নির্মিত এ সেতুর মেয়াদ অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে। কালুরঘাট সেতু দিয়ে প্রতিদিন ৩০-৪০ হাজার মানুষ পায়ে হেঁটে পার হন।
রাত-দিন অসংখ্য ছোট-বড় যানবাহন চলাচল করে। একমুখী সড়ক হওয়াতে ২-৩ ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয় যার কারণে জনসাধারণের দৈনন্দিন কাজ ও ব্যবসা-বাণিজ্যের ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়। অসুস্থ রোগী ও প্রসূতি মা-বোনদের দ্রুত চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করা কঠিন হয়ে যায়। সেতুটির বর্তমান অবস্থা অত্যন্ত নাজুক এবং জরাজীর্ণ। যেকোনো সময় সেতুটি ভেঙে ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

তিনি বলেন, কালুরঘাট সেতু দক্ষিণ চট্টগ্রামের বোয়ালখালী, পটিয়া, রাউজান, রাঙ্গুনিয়া মানুষের কাছে অতীব গুরুত্বপূর্ণ। ১৯৩০ সালে ব্রিটিশ সরকার এ সেতু তৈরি করে। পরে জনগণের বৃহত্তর স্বার্থে পাকিস্তান আমলে যানবাহন চলাচলের জন্য সেতুটি খুলে দেওয়া হয়।

বর্তমান সরকার পতেঙ্গা দিয়ে দক্ষিণ চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার যাওয়ার জন্য ট্যানেল নির্মাণ শুরু করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, ট্যানেল দিয়ে আনোয়ারা থানার জনসাধারণ, দক্ষিণ চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলায় যাতায়াতের জন্য সুবিধা হবে। কিন্তু বোয়ালখালী ও পটিয়া উপজেলার একাংশের জনসাধারণের জন্য কালুরঘাট সেতুটি ছাড়া বিকল্প মাধ্যম নেই। কারণ এসব এলাকার মানুষের পক্ষে শাহ আমানত সেতু বা পতেঙ্গা টানেল দিয়ে যাতায়াত করা অনেক দূরের পথ হওয়ায় যাতায়াতে খরচ অনেক বেশি বহন করতে হয় এবং সময়ক্ষেপণ হতে বাধ্য। তাই কালুরঘাট রেল সেতু বহুমুখীকরণ (দুই লেনের) তৈরি করা অতীব জরুরি।

বিজিএমইএর সাবেক প্রথম সহ-সভাপতি এরশাদ উল্লাহ বলেন, যেহেতু চট্টগ্রাম শহরের ৪১টি ওয়ার্ডে নতুন করে ভারী শিল্পকারখানা গড়ে তোলা সম্ভব নয় তাই বোয়ালখালী উপজেলা নতুন করে শিল্প কল-কারখানা গড়ে তোলার উপযোগী স্থান। ইতিমধ্যে বোয়ালখালী উপজেলার পশ্চিম গোমদণ্ডী ও শাকপুরা ইউনিয়নের বিভিন্ন জায়গায় বহু শিল্পকারখানা গড়ে উঠেছে।

এরশাদ উল্লাহ বলেন, স্থানীয় সংসদ সদস্য মাঈনুদ্দিন খান বাদল এ সেতুর ব্যাপারে আক্ষেপ করে বলেছেন আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে কালুরঘাট সেতু নির্মাণ করা না হলে মহান সংসদকে তিনি সালাম জানাবেন। উনি যেহেতু মহাজোট কর্তৃক উক্ত এলাকার সংসদ সদস্য এবং উনার গ্রামের বাড়ি বোয়ালখালী উপজেলায় তাই রাগ, অভিমান বা আক্ষেপ করা মোটেই সমীচীন নয়। কারণ উনি উনার নির্বাচনী ইশতেহারে এই কালুরঘাট সেতু নির্মাণের ব্যাপারে ২০০৮ এবং ২০১৮ সালের জনগণের কাছে ওয়াদা করেছেন। তাই জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধি হিসেবে আক্ষেপ করে সংসদ সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করার ঘোষণা জনগণের সঙ্গে প্রতারণার বহির্প্রকাশ।

এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, বিএনপির নেতা ও সাবেক মন্ত্রী মোরশেদ খান ২৭৫ কোটি টাকার একটি প্রকল্প নিয়েছিলেন কালুরঘাট সেতু বাস্তবায়নের জন্য কিন্তু সময়ের অভাবে পারেননি।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্য ও বোয়ালখালী থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি আজিজুল হক, নগর বিএনপি নেতা এমএ হাশেম রাজু, নগর বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক আরইউ চৌধুরী শাহিন, চান্দগাঁও থানা বিএনপির সভাপতি কাউন্সিলর মোহাম্মদ আজম, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্য শওকত উল আলম, চান্দগাঁও থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শরিফ উদ্দিন খান, মোহাম্মদ ইলিয়াছ, এম ফিরোজ খান, মোহাম্মদ সরওয়ার আলমগীর, আবুল হাশেম, মোহাম্মদ শাহজাহান প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৫, ২০১৯
এআর/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।