ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

১৮শ’ ভুয়া এনআইডি তৈরির কথা স্বীকার ইসি কর্মচারী জয়নালের

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২২, ২০১৯
১৮শ’ ভুয়া এনআইডি তৈরির কথা স্বীকার ইসি কর্মচারী জয়নালের নির্মাণাধীন পাঁচতলা ভবন। ইনসেটে জয়নাল আবেদীন।

চট্টগ্রাম: ২০১৪ সাল থেকে ৫০-৬০ হাজার টাকার বিনিময়ে রোহিঙ্গাদের জনপ্রতি বাংলাদেশি জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) দেওয়া শুরু হয়। নির্বাচন কমিশনের কতিপয় কর্মকর্তা-কর্মচারী এ কাজে জড়িত ছিলেন। এতে মধ্যস্ততা করতেন জয়নাল আবেদীন (৩৫)। তিনি ভুয়া এনআইডি তৈরির জন্য টাকার ভাগ পেতেন।

শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় মহানগর হাকিম আবু ছালেম মো. নোমানের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এই তথ্য দেন  জয়নাল।  

রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশি জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়ার ঘটনায় এর আগে গ্রেফতার হন নির্বাচন কমিশনের ৪ কর্মী।

এদের মধ্যে বাঁশখালীর জয়নাল আবেদীনের চাকরিই স্থায়ী। ২০০৪ সালে ডবলমুরিং নির্বাচন অফিসের অফিস সহায়ক পদে নিয়োগ পান জয়নাল।

এ পর্যন্ত ১৮০০ ভুয়া এনআইডি কার্ড তৈরির সঙ্গে জড়িত থাকার স্বীকার করে জয়নাল জবানবন্দিতে রোহিঙ্গা ভোটার বানানোর সঙ্গে ঢাকা-চট্টগ্রামসহ কয়েকটি জেলার নির্বাচন অফিসের বেশ কয়েকজন পদস্থ কর্মকর্তা-কর্মচারীর নামও প্রকাশ করেছেন।

তবে জয়নালের জবানবন্দি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দিতে রাজি হননি তদন্তকারী সংস্থা পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের কর্মকর্তারা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, রোহিঙ্গা ভোটারসহ সাধারণ মানুষের জাতীয় পরিচয়পত্রে (এনআইডি) ভুল সংশোধন এবং হারিয়ে যাওয়া পরিচয়পত্র পেতে নির্বাচন কমিশনের কয়েকজন কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীনকে সহযোগিতা করতেন।

এসব কর্মকর্তার অনেকে এখন চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় বদলি হয়ে গেছেন। এ কাজে জড়িত আছেন অফিস সহায়ক, ডাটা এন্ট্রি অপারেটর, সার্ভারে কর্মরত কর্মকর্তাসহ আউটসোর্সিংয়ের ভিত্তিতে নিয়োগ পাওয়া কতিপয় কর্মচারীও।

রিমান্ডে থাকা আরেক কর্মচারী মোস্তফা ফারুকের সঙ্গে মিলে জয়নাল প্রথম দিকে নির্বাচন কমিশনের সার্ভার থেকে এনআইডি প্রিন্ট নিতেন। এছাড়া যারা রোহিঙ্গা সরবরাহ করতেন এবং তাকে বাসায় কাজে সহযোগিতা করতেন তাদের নামও জবানবন্দিতে উল্লেখ করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

জয়নাল আবেদীন তার গ্রামের বাড়ি বাঁশখালী পৌর সদরের আশকরিয়া পাড়ায় কয়েক কোটি টাকা খরচ করে পাঁচতলা ভবন নির্মাণ করছেন। নির্বাচন কমিশনের ঢাকাসহ বিভিন্ন অফিসে তার অন্তত ১০ জন স্বজন কর্মরত আছেন।

সিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের উপ-কমিশনার মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ জানান, আদালতে জয়নাল স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে নিজের দোষ স্বীকারের পাশাপাশি তাকে যারা সহযোগিতা করতো, তাদের নামও প্রকাশ করেছে। তবে তদন্তের স্বার্থে আমরা কারও নাম প্রকাশ করছি না। যাদের নাম পাওয়া গেছে, তাদেরকেও আইনের আওতায় আনা হবে।

উল্লেখ্য, গত ১৬ সেপ্টেম্বর রাতে নির্বাচন কমিশন তাদের অফিস সহায়ক জয়নাল আবেদিন ও তার দুই সহযোগীকে আটক করে পুলিশে হস্তান্তর করে। ১৭ সেপ্টেম্বর এদের বিরুদ্ধে কোতোয়ালী থানায় মামলা দায়ের করা হয়। ওই মামলায় আদালতের আদেশে জয়নাল ৩ দিনের পুলিশি হেফাজতে থাকার পর শনিবার স্বীকারোক্তি দেন।  

বাংলাদেশ সময়: ১২৩০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২২, ২০১৯
এসি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।