ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

ফুটপাত-রাস্তায় জমজমাট ব্যবসা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৪২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২০, ২০১৯
ফুটপাত-রাস্তায় জমজমাট ব্যবসা ফুটপাত-রাস্তায় হকারদের ব্যবসা। ছবি: বাংলানিউজ

চট্টগ্রাম: নগরের ব্যস্ততম বাণিজ্যিক এলাকা আগ্রাবাদে ফুটপাতের অধিকাংশই হকারদের দখলে চলে গেছে। রীতিমতো ফুটপাতকেই মার্কেট বানিয়ে ফেলেছে তারা।

ভ্রাম্যমাণ দোকানগুলোতে পসরা সাজিয়ে বিক্রি হচ্ছে জুতা, কাপড়, ইলেকট্রনিক্স সামগ্রীসহ খাবারও। অনেক স্থানে ফুটপাত ছাড়িয়ে রাস্তার ওপরে চৌকি বসিয়ে চলছে ব্যবসা।

ফুটপাত-রাস্তায় হকারদের ব্যবসা।  ছবি: বাংলানিউজফলে একদিকে মানুষের চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে, অপরদিকে বাড়ছে যানজট।

পথচারীদের কেনাকাটার সুযোগে ছিনতাইয়ের ঘটনাও ঘটছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাঝেমধ্যে হকার উচ্ছেদ অভিযান চললেও দিন কয়েক পর তা আবারও আগের রূপে ফিরে আসে। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে নগরের ফুটপাত হকারমুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হলেও শৃঙ্খলায় ফিরতে আগ্রহ নেই হকারদের।

ফুটপাত-রাস্তায় হকারদের ব্যবসা।  ছবি: বাংলানিউজচসিক সূত্র জানায়, ফুটপাতে ব্যবসা করা ২০ হাজার হকারের জন্য নীতিমালা করা হয়েছে। তারা কে কোন এলাকায় ব্যবসা করবেন, কীভাবে ব্যবসা করবেন এবং কোন প্রক্রিয়া অনুসরণ করে এ ব্যবসা চলবে তা আছে নীতিমালায়। সড়ক ধরে শহরের সব ফুটপাতের তালিকাও করা হয়েছে। কিছু হকারকে প্রাথমিকভাবে দেওয়া হয়েছে পরিচয়পত্র। এক এলাকার হকার যাতে আরেক এলাকায় গিয়ে ব্যবসা করতে না পারে, সে জন্য পরিচয়পত্রে অনুমোদিত এলাকার নামও উল্লেখ করা হয়।

ফুটপাত-রাস্তায় হকারদের ব্যবসা।  ছবি: বাংলানিউজমূল রাস্তার ওপর কিংবা ফুটপাত দখল করে ব্যবসা বন্ধে তাদের সুনির্দিষ্ট জায়গায় ভ্রাম্যমাণ ভ্যানের মাধ্যমে সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত ব্যবসা করার অনুমতি দেওয়া হয়। শর্ত অনুযায়ী, কোনো এলাকায় তাদের স্থায়ী কোনো স্থাপনা থাকবে না। নির্ধারিত সময় শেষে ব্যবসার স্থাপনা নিজ দায়িত্বে সরিয়ে নেবেন হকাররাই। কাজের সুবিধার্থে যে ভ্যানে ব্যবসা করবেন, নাম্বারিং করা হবে সেই ভ্যানগাড়িরও।

ফুটপাত-রাস্তায় হকারদের ব্যবসা।  ছবি: বাংলানিউজএছাড়া সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন সম্প্রতি হোটেল মালিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় নগরের ফুটপাতে কোনো ধরনের খাবার বিক্রি করা যাবে না বলে ঘোষণা দেন।

চট্টগ্রাম সম্মিলিত হকার ফেডারেশনের তথ্য অনুযায়ী, নগরে হকার রয়েছে প্রায় ২০ হাজার। এ সংগঠনের নিয়ন্ত্রণে আছে ৩টি সংগঠন। এগুলো হলো- চট্টগ্রাম হকার্স লীগ, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন হকার সমিতি ও চট্টগ্রাম ফুটপাত হকার সমিতি। এর বাইরেও রয়েছে আরও ৫ হাজার ভাসমান হকার। তারা বিভিন্ন গাড়িতে করে এবং অস্থায়ী দোকান সাজিয়ে পণ্য বিক্রি করেন।

ফুটপাত-রাস্তায় হকারদের ব্যবসা।  ছবি: বাংলানিউজআগ্রাবাদ ঘুরে দেখা গেছে, সকাল ১১টার পর থেকেই হকাররা ফুটপাত ও রাস্তা দখল করে ব্যবসা করছে। এতে বাধ্য হয়ে পথচারীরা নামছেন রাস্তায়। নগরের নিউমার্কেট, আমতল, কদমতলী মোড়, আন্দরকিল্লা মোড়, বহদ্দারহাট, ষোলশহর দুই নম্বর গেট, মুরাদপুর, জিইসির মোড়, চকবাজার, কাজীর দেউড়ি, দেওয়ানহাট মোড়, পতেঙ্গা ইপিজেড এলাকা, অক্সিজেন মোড়সহ বেশিরভাগ গুরুত্বপূর্ণ এলাকার ফুটপাতও হকারদের দখলে। এভাবে ব্যবসা করায় বাড়ছে যানজট, বাড়ছে দুর্ঘটনা।

ফুটপাত-রাস্তায় হকারদের ব্যবসা।  ছবি: বাংলানিউজজানা গেছে, চট্টগ্রামে হকারদের পুনর্বাসনে ১৯৭৩ সালে প্রথম উদ্যোগ নেওয়া হয়। তৎকালীন মন্ত্রী জহুর আহমেদ চৌধুরী হকারদের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে জহুর হকার্স মার্কেট তৈরি করে দেন। শুরুতে এ মার্কেটে হকার থাকলেও একসময় এটি প্রভাবশালীদের দখলে চলে যায়।

ফুটপাত-রাস্তায় হকারদের ব্যবসা।  ছবি: বাংলানিউজরাজনৈতিকভাবে আশীর্বাদপুষ্টরাই এখন হকার মার্কেটে দোকানের মালিক। সমিতির নামে প্রতিদিন হকারদের কাছ থেকে নেওয়া হয় চাঁদা। অভিযোগ আছে, পুলিশ এবং স্থানীয় প্রভাবশালীদেরও চাঁদা দিয়ে ব্যবসা করতে হয় হকারদের।

ফুটপাত-রাস্তায় হকারদের ব্যবসা।  ছবি: বাংলানিউজসিটি মেয়রের সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে হকার সমিতির নেতারা সিটি করপোরেশনের অধীন বা সরকারি খাস জমি হকারদের জন্য বরাদ্দের দাবি জানান। হকার সমিতি বাজারমূল্যে ওই জমির মূল্য পরিশোধ করে সেখানে স্থায়ীভাবে হকারদের জন্য মার্কেট নির্মাণ করার প্রস্তাব দিয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৪০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২০, ২০১৯
এসএস/এসি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad