ঢাকা, মঙ্গলবার, ৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৯ মার্চ ২০২৪, ০৮ রমজান ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

চট্টগ্রামে হচ্ছে ১০০ শয্যার ক্যান্সার চিকিৎসাকেন্দ্র

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১১৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৮, ২০১৯
চট্টগ্রামে হচ্ছে ১০০ শয্যার ক্যান্সার চিকিৎসাকেন্দ্র চমেক হাসপাতাল ভবন। ফাইল ছবি

চট্টগ্রাম: চট্টগ্রামসহ দেশের ৮টি বিভাগীয় মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে একটি করে ১০০ শয্যার পূর্ণাঙ্গ ক্যান্সার চিকিৎসাকেন্দ্র স্থাপন করা হবে।

মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) এ সংক্রান্ত ২ হাজার ৩৮৮ কোটি টাকার একটি প্রকল্প জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদন হয়েছে।

‘বিভাগীয় শহরে সরকারি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ১০০ শয্যাবিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ ক্যান্সার চিকিৎসাকেন্দ্র স্থাপন’ শীর্ষক প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে স্বাস্থ্য অধিদফতর।

গত বছর পূর্ণাঙ্গ ক্যান্সার চিকিৎসাকেন্দ্র নির্মাণে চাহিদাপত্র চেয়ে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেয় স্বাস্থ্য অধিদফতর। সে সময় একটি প্রস্তাবনাও পাঠানো হয়।

প্রস্তাবনায় নতুন এই চিকিৎসাকেন্দ্র নির্মাণের জন্য জায়গা, অবকাঠামো, যন্ত্রপাতি ও জনবল নিয়োগের পাশাপাশি ক্যান্সার চিকিৎসার জন্য বর্তমানে হাসপাতালে থাকা একটি রেডিওথেরাপি মেশিন ছাড়াও আরো চারটি মেশিন ক্রয়ের প্রস্তাব করা হয়। ক্রয়ে আনুমানিক খরচ ধরা হয় ৪৭ কোটি টাকা ও যন্ত্রপাতির জন্য অবকাঠামোর নির্মাণে ১০ কোটি ব্যয় হবে। নতুন এ চিকিৎসাকেন্দ্রের জন্য জনবল নিয়োগের বিষয়েও প্রস্তাবনায় আনা হয়েছে। এতে ১৪টি পদের বিপরীতে ৫৩ জনকে নিয়োগে দেওয়া হবে।

প্রস্তাবনায় উল্লেখ করা হয়, সম্প্রতি প্রকাশিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে, বাংলাদেশে প্রতি বছর আড়াই লাখ জনগোষ্ঠী মরণব্যাধি ক্যান্সারে আক্রান্ত ও প্রতি বছর মারা যান দেড় লাখ মানুষ। বর্তমানে আক্রান্তের সংখ্যা ১৫ লাখ। দেশে ক্যান্সারজনিত মৃত্যু হার সাড়ে সাত শতাংশ। ২০৩০ সালে ১৩ শতাংশে পৌঁছাতে পারে।

দেশে ক্যান্সার চিকিৎসাকেন্দ্রে রয়েছে মাত্র ২৬টি। যেখানে চিকিৎসা নিতে পারবেন মাত্র ৫০ হাজার রোগী। এর মধ্যে আবার দশটি বেসরকারি। যেগুলোতে চিকিৎসার খরচ ব্যয়বহুল। এছাড়াও ক্যান্সার রোগের অন্যতম চিকিৎসা রেডিওথেরাপির জন্য সারাদেশে মেশিন রয়েছে মাত্র ১০টি। অন্যদিকে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে চিকিৎসক রয়েছে মাত্র ১৭০ জন। সরকারি হাসপাতালে ক্যান্সার চিকিৎসকদের ১০টি পদ সৃষ্টি করা হলেও সেটি এখনো কার্যকর হয়নি।

প্রস্তাবনায় বলা হয়, বাংলাদেশে ক্যান্সার চিকিৎসার সূচনা হয়েছে ৫০ বছর আগে। কিন্তু সরকারি পর্যায়ে ক্যান্সার রোগীদের জন্য শয্যা রয়েছে মাত্র ৫৬০টি। কিন্তু জনসংখ্যার অনুপাতে বাংলাদেশে প্রয়োজন ১৬০টি ক্যান্সার নিরাময় কেন্দ্র।

তাই ক্যান্সার রোগীদের চিকিৎসার আওতায় আনা, প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ নির্ণয়, সেবার মান আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া ও ক্যান্সার চিকিৎসায় বৈদেশিক নির্ভরতা কমিয়ে আনার বিশেষ উদ্যোগে নেয়া হয়েছে। যেখানে থাকবে পর্যাপ্ত চিকিৎসার সরঞ্জামাদি, জনবল। এছাড়াও সারা দেশে সরকারি পর্যায়ে ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালসহ আটটি প্রশাসনিক বিভাগীয় শহরে অবস্থিত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে একযোগে ১০০ শয্যার পূর্ণাঙ্গ ক্যান্সার চিকিৎসা কেন্দ্র স্থাপন করা ও বর্তমানে যে সকল ক্যান্সার চিকিৎসাকেন্দ্রে রেডিওথেরাপি মেশিন, বাংকার, লোকবল বিদ্যামান, সেগুলো আধুনিকায়ন এবং প্রয়োজনীয় সংখ্যক নতুন মেশিন সংযোজন ও মেয়াদ উত্তীর্ণ মেশিন পরিবর্তন পূর্বক ও আধুনিক মেশিন স্থাপনা করা হবে।

চমেক হাসপাতাল উপ-পরিচালক ডা. আখতারুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, দেশের আটটি বিভাগীয় শহরে পূর্ণাঙ্গ ক্যান্সার চিকিৎসাকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় চট্টগ্রামেও ১০০ শয্যাবিশিষ্ট একটি ক্যান্সার রোগ নিরাময় কেন্দ্র করা হবে।

‘গত বছর এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাবনা স্বাস্থ্য অধিদফতরে পাঠানো হয়েছে। তারা আমাদের কাছে চাহিদাপত্র চেয়েছি। সে অনুযায়ী চাহিদাপত্র প্রেরণ করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে হাসপাতাল ক্যান্সার বিভাগের পাশে অবকাঠামো নির্মাণে জায়গা নির্ধারণ করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ২১১৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০১৯
এসইউ/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।