তথ্য সংগ্রহ শেষে দুদক সহকারী পরিচালক রতন কুমার দাশ সাংবাদিকদের বলেন, প্রতিটি উপজেলায় ভোটার হওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কিছু নম্বর দেয়া থাকে, সেগুলো দিয়ে শুধু ওই উপজেলায় ভোটার হওয়া যায়।
‘তদন্তে দেখা গেছে, একটি উপজেলার নম্বর দিয়ে ছয়টি জেলার ১৪টি উপজেলায় ভোটার করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচন অফিসের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তাদের কিছু ল্যাপটপ হারিয়েছে। তবে এ ব্যাপারে তারা কোনো জিডি কিংবা মামলা করেনি।
রতন কুমার দাশ বলেন, রোহিঙ্গা ডাকাত নুরুর জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ২০১৬ সালে ইসির সার্ভারে যুক্ত হয়েছে, তার এনআইডির তথ্য আপলোড হয়েছে ২০১৫ সালে ইসির হারানো ল্যাপটপ থেকে।
‘ল্যাপটপ হারানোর পরেও সেগুলোর কার্যক্রম বন্ধ করা হয়নি। এমনকি কোনো জিডি কিংবা মামলার নথিও ইসির কর্মকর্তারা দিতে পারেনি। আমরা আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তাকে ল্যাপটপগুলোর কার্যক্রম দ্রুত বন্ধ করার জন্য সুপারিশ করেছি।
সহকারী পরিচালক রতন কুমার দাশ বলেছেন, প্রাথমিক তদন্তে রোহিঙ্গাদের নাগরিকদের এনআইডি পাওয়ার ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কর্মকর্তা ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। কারণ ইসির নির্ধারিত ল্যাপটপ ছাড়া অন্য কোথাও থেকে এনআইডির তথ্য আপলোড করা সম্ভব নয়।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. মুনীর হোসাইন খান বাংলানিউজকে বলেন, রোহিঙ্গারা কীভাবে ভোটার হচ্ছেন সেটি নিয়ে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুদক। কয়েকদিন আগে দুদকের একটি টিম এসেছিল, শনিবার আবারও এসেছে। আমরা তাদের তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করছি।
উল্লেখ্য, জালিয়াতির মাধ্যমে লাকী নাম দিয়ে রমজান বিবি নামে এক রোহিঙ্গা নারী হাটহাজারীর বাসিন্দা উল্লেখ করে এনআইডি করিয়ে নেয়। পরবর্তীতে স্মার্ট কার্ড উত্তোলনের জন্য ওই রোহিঙ্গা নারী ১৮ আগস্ট জেলা নির্বাচন অফিসে যান।
সন্দেহ হলে ইসির কর্মকর্তারা হাটহাজারী নির্বাচন কার্যালয় এ বিষয়ে খোঁজখবর নিলে জানা যায়, লাকী নামে কোনও ভোটারের নথি তাদের অফিসে নেই। তবে তার তথ্য সার্ভারে ছিলো। এরপর রমজান বিবিকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। হাটহাজারী থানা নির্বাচন কর্মকর্তা আরিফুল ইসলাম এ ঘটনায় নগরের কোতোয়ালী থানা মামলা দায়ের করেন। এরপর ইসিসহ সরকারি একাধিক সংস্থা রোহিঙ্গারা কীভাবে ভোটার হচ্ছেন সেটি অনুসন্ধানে মাঠে নামে।
বাংলাদেশ সময়: ২০০০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৫, ২০১৯
এসইউ/টিসি