ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

আদর্শ দিয়ে প্রতিক্রিয়াশীলদের পরাজিত করতে হবে: এ আরাফাত

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১১৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১, ২০১৯
আদর্শ দিয়ে প্রতিক্রিয়াশীলদের পরাজিত করতে হবে: এ আরাফাত অধ্যাপক মোহাম্মদ এ আরাফাত। ছবি: বাংলানিউজ

চট্টগ্রাম: প্রতিক্রিয়াশীলদের আদর্শ দিয়ে পরাজিত করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন সুচিন্তা বাংলাদেশ ও সুচিন্তা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোহাম্মদ এ আরাফাত।

শনিবার (৩১ আগস্ট) বিকেলে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে সুচিন্তা বাংলাদেশ চট্টগ্রাম বিভাগের আয়োজনে ১৫ আগস্ট উপলক্ষে ‘বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের পথে অদম্য শেখ হাসিনা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান আলোচকের বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

মোহাম্মদ এ আরাফাত বলেন, দেশের স্বাধীনতা বিরোধীরা ১৫ আগস্টে বঙ্গবন্ধুসহ তার পরিবারকে হত্যা করে থেমে যায়নি, তারা পরে জাতীয় চার নেতাকেও হত্যা করেছে।

এমনকি ৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে যারা নিহত হয়েছেন সেই সংখ্যাটিও তারা বদলে দিয়েছে। তারা এই বাংলাদেশের রাষ্ট্র ও রাজনীতির সংজ্ঞাও পাল্টে দিয়েছে।

স্বাধীনতার পর থেকে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে জিডিপি ৩ ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছতো দাবি করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের মোট বয়স ৪৮ বছর। প্রতিক্রিয়াশীলরা ওয়ান ইলেভেনসহ মোট ২৮ বছর ক্ষমতায় ছিলো। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ছিলো মাত্র সাড়ে ১৯ বছর। এই সময়ে পাকিস্তান থেকে আমরা জাতীয় আয়, মাথাপিছু আয়, জিডিপিসহ সবক্ষেত্রে ছাড়িয়ে গেছি। এটি বৈশ্বিকভাবে প্রতিষ্ঠিত সত্য।

‘আমরা যদি পুরো ৪৮ বছর ক্ষমতায় থাকতাম, তাহলে বর্তমানের জিডিপি ৩১৬ বিলিয়ন ডলারের পরিবর্তে ৩ ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছতাম। তখন আমাদের মাথাপিছুর আয় বর্তমান থেকে ১০ গুণ বেশি হতো’ বলেন এ আরাফাত।

এ আরাফাত বলেন, দেশের ভেতর থেকে রাজনীতি মাপা কঠিন। বাইরে দেখলে আমরা কিন্তু ঠিকই বুঝতে পারব। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রতিক্রিয়াশীল রাজনীতি করছেন। তিনি  ক্ষমতায়ও এসেছেন মৌলবাদকে ধারণ করে। এছাড়া ব্রিটেনের রাজনীতিও উগ্রবাদকে ধারণ করে প্রতিষ্ঠিত। আমাদের বন্ধু রাষ্ট্র ভারতের নরেন্দ্র মোদিও সেই মৌলবাদকে ধারণ করে ক্ষমতায় এসেছেন। ফলাফল কী হলো-যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন ও ভারতের অর্থনীতি নিচে নামতে শুরু করেছে।

‘আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোনো উগ্রবাদ বা মৌলবাদকে ধারণ করে ক্ষমতায় আসেননি। তিনি এসেছেন জনসমর্থন নিয়ে। সেই লক্ষে তিনি কাজ করছেন। তার প্রমাণ তিনি বিশ্বকে দেবেন এভাবে- ‘‘বাংলাদেশের জিডিপি দেখো, মাথাপিছু আয় দেখো, শিক্ষার হার দেখো। ’’ বলেন- এ আরাফাত।

ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।  ছবি: বাংলানিউজবঙ্গবন্ধুর কথা প্রচার করা ঈমানী দায়িত্ব : নওফেল

প্রগতির চিন্তা-ধারা কখনও ইসলামের বিরুদ্ধে নয় মন্তব্য করে শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেছেন, ইসলামের আবির্ভাব হয়েছে সমাজের কুসংস্কার ও অন্ধকার দূর করতে। আমরা কেন ধর্মকে নিয়ে রাজনীতি করব?

তিনি বলেন, যারা ইসলামে দ্বীনি শিক্ষায় শিক্ষিত হচ্ছেন তাদেরকে প্রগতির কথা, বঙ্গবন্ধুর কথা তুলে ধরাও ঈমানী দায়িত্ব। অন্তত আমি নিজে এমন মনে করি। তাই আমাদের দায়িত্ব হবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নগুলো মানুষের মাঝে পৌঁছিয়ে দেওয়া।

মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, আর্থ-সামাজিক থেকে শুরু করে সবক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উন্নয়ন করে যাচ্ছেন। একসময় রাজনীতি ছিলো এক পক্ষ ডান আরেক পক্ষ বাম কেন্দ্রিক। সবার একটাই চাওয়া ছিলো পকেট ভারি করা। এই থেকে বেরিয়ে এসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের মানুষের জন্য রাজনীতি করছেন।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার দেওয়া সব প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছেন। তিনি সেক্টর ভিত্তিক উন্নয়ন করে যাচ্ছেন। বাংলাদেশে ইশতিহার ভিত্তিক রাজনীতি প্রচলণ করেন একমাত্র শেখ হাসিনা।

আ জ ম নাছির উদ্দীন।  ছবি: বাংলানিউজ৩ কোটি ৭০ লাখ মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়েছে : মেয়র নাছির

প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার যোগ্য নেতৃত্বের কারণে সাড়ে ১০ বছরে ৩ কোটি ৭০ লাখ মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়েছে বলে দাবি করেছেন নগর সিটি করপোরেশন মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন।

তিনি বলেন, বয়স্ক ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, হিজড়া ভাতাসহ বিভিন্ন ভাতা দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরকম ভাতা দেওয়া হয় শুধু উন্নত দেশগুলোতে। এমনকি প্রত্যেক নাগরিককে সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার জন্য তিনি কাজ করে যাচ্ছেন।

তিনি বলেন, ১৫ আগস্টে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে স্বাধীনতা বিরোধীরা মনে করেছিল সব থেমে যাবে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বাস্তবায়নে কর্মযজ্ঞ চলছে। তবে স্বাধীনতা বিরোধীরা থেমে নেই। তারা সেই উন্নয়ন নস্যাৎ করতে গুজবকে প্রধান হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়ে নানা বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। এই বিভ্রান্তি থেকে দেশের মানুষকে সতর্ক থাকতে হবে।

ড. অনুপম সেন।  ছবি: বাংলানিউজবাংলাদেশের উন্নয়ন কেউ থামাতে পারবে না: অনুপম সেন

বিশিষ্ট সমাজবিজ্ঞানী ও প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের ‍উপাচার্য অধ্যাপক ড. অনুপম সেন বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীরা থেমে নেই। তারা নানাভাবে দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা চালাচ্ছে। কিন্তু তাদের সেই চেষ্টা বাংলাদেশের উন্নয়নকে থামাতে পারবে না। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা যেভাবে দেশকে এগিয়ে নিচ্ছেন, আগামী কয়েক বছরে এশিয়ার মধ্যে অন্যতম একটি উন্নত দেশে পরিণত হবে।

আশরাফুল আলম খোকনচট্টগ্রামের জন্য প্রধানমন্ত্রীর হাত খোলা : আশরাফুল আলম খোকন

চট্টগ্রাম বললেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অন্য চোখে দেখেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব আশরাফুল আলম খোকন বলেন, চট্টগ্রামের উন্নয়নের জন্য যখন যে-যেভাবে চেয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সঙ্গে সঙ্গে সহযোগিতা করেছেন। চট্টগ্রামের জন্য প্রধানমন্ত্রীর হাত খোলা।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কাজগুলো শেষ করে যাচ্ছেন। তিনি একটি অসম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। বিদেশিরা এখন আর তলাবিহীন ঝুড়ি বলেন না। তারা বাংলাদেশকে অন্য চোখে দেখেন। উন্নত দেশে পৌঁছার জন্য যে পাঁচটি দেশ এগিয়ে যাচ্ছে এরমধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। ভারত ও পাকিস্তানকে ইতিমধ্যে বাংলাদেশ পেছনে ফেলেছে।

...অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সুচিন্তা বাংলাদেশ চট্টগ্রাম বিভাগের সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট জিনাত সোহানা চৌধুরী। তিনি ‘বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের পথে অদম্য শেখ হাসিনা’ শীর্ষক একটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সুচিন্তা বাংলাদেশ চট্টগ্রাম বিভাগের যুগ্ম সমন্বয়ক ও দেশের শীর্ষস্থানীয় নিউজপোর্টাল বাংলানিউজের চট্টগ্রাম ব্যুরো এডিটর তপন চক্রবর্তী।

বক্তব্য দেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি ও সর্ব ইউরোপীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ড. বিদ্যুৎ বড়ুয়া, সুচিন্তার উপদেষ্টা স্থপতি আশিক ইমরান, বিশিষ্ট ব্যাংকার আশরাফ উদ্দিন চৌধুরী সিজার প্রমুখ।  

উপস্থিত ছিলেন সুচিন্তা ফাউন্ডেশন এর ট্রেজারার তারেক শমী, সারাবেলার সম্পাদক জব্বার হোসেন, ফ্লোরিডা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. ইমরান, সুচিন্তা বাংলাদেশ চট্টগ্রাম বিভাগের যুগ্ম সমন্বয়ক আবু হাসনাত চৌধুরী, ডা. হোসেন আহমদ, কার্যনির্বাহী সদস্য ও চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শুকলাল দাশ, কার্যকরী সদস্য দেবাশীষ পাল দেবু, প্রণব চৌধুরী, সরফরাজ নেওয়াজ রবিন, বোখারী আজম প্রমুখ।

অনুষ্ঠানের শুরু হয় জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে। পরে ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুসহ শহীদ পরিবারের সদস্যদের স্মরণ করে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ২০৫০ ঘণ্টা, আগস্ট ৩১, ২০১৯

জেইউ/টিসি  

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।