ঢাকা, মঙ্গলবার, ৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৯ মার্চ ২০২৪, ০৮ রমজান ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

চট্টগ্রামে জন্মাষ্টমীর বর্ণাঢ্য মহাশোভাযাত্রা

নিউজরুম এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫৩ ঘণ্টা, আগস্ট ২৩, ২০১৯
চট্টগ্রামে জন্মাষ্টমীর বর্ণাঢ্য মহাশোভাযাত্রা মহাশোভাযাত্রায় বসুদেব সাজে এক ভক্ত। ছবি: সোহেল সরওয়ার

চট্টগ্রাম: বাংলাদেশে সর্বপ্রথম ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমী উৎসব সাড়ম্বরে উদযাপন শুরু হয়েছিল চট্টগ্রাম থেকেই, যার বয়স এখন ৩৭ বছর। বর্তমানে সারাদেশব্যাপী ছড়িয়েছে এর ব্যাপ্তি।

শুক্রবার (২৩ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১০টায় শ্রীশ্রী জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদ বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় কমিটির আয়োজনে ঐতিহাসিক মহাশোভাযাত্রা হাজারও ভক্তের অংশগ্রহণে রূপ নেয় মিলনমেলায়।

আন্দরকিল্লা মোড়ে মহাশোভাযাত্রা উদ্বোধন।                     <div class=

ছবি: সোহেল সরওয়ার " src="https://www.banglanews24.com/media/imgAll/2019May/bg/jbg420190823125514.jpg" style="margin:1px; width:100%" />নগরের আন্দরকিল্লা মোড়ে মহাশোভাযাত্রা উদ্বোধন করেন চট্টগ্রামস্থ সহকারী ভারতীয় হাই কমিশনার অনিন্দ্য ব্যানার্জী। প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন।
বিশেষ অতিথি ছিলেন সিএমপি কমিশনার মো. মাহাবুবর রহমান, ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, সিলেটের মহাপ্রভু শ্রীঅঙ্গনের অধ্যক্ষ শ্রীল রাধাবিনোদ মিশ্রজী মহারাজ।  

শোভাযাত্রার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পরিষদের সহ-সভাপতি ও মহাশোভাযাত্রা উপ-পরিষদের আহ্বায়ক অলক দাশ। বক্তব্য দেন জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদের সহ-সভাপতি বিমল কান্তি দে, সাবেক সভাপতি ও রাউজান পৌরসভার মেয়র দেবাশীষ পালিত, সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট চন্দন তালুকদার।

উপস্থিত ছিলেন চসিক প্যানেল মেয়র চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী, কাউন্সিলর শৈবাল দাশ সুমন, জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদের কার্যকরী সভাপতি ডা. মনোতোষ ধর, সহ-সভাপতি সাধন ধর, লায়ন দুলাল চন্দ্র দে, পরেশ চন্দ্র চৌধুরী, মহাশোভাযাত্রা উপ-পরিষদের সদস্য সচিব লায়ন আশীষ কুমার ভট্টাচার্য্য, কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক লায়ন তপন কান্তি দাশ, এস প্রকাশ পাল প্রমুখ।

মহাশোভাযাত্রার পথ পরিক্রমা।  ছবি: সোহেল সরওয়ার মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, এদেশের মানুষ অসাম্প্রদায়িক চেতনা নিয়ে আবহমানকাল থেকে বসবাস করে আসছে। এই ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে হবে। শ্রীকৃষ্ণ আজীবন মানবতার জয়গান গেয়েছেন। তাঁর আদর্শ ধারণ করতে পারলে সমাজে কোনও বৈষম্য থাকবে না।

সহকারী ভারতীয় হাই কমিশনার অনিন্দ্য ব্যানার্জী বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারতও আপনাদের পাশে ছিল। আমাদের দেশের অনেক নাগরিকও বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদ হয়েছিলেন, যা নিয়ে আমরা গর্ব করতে পারি। বন্ধুপ্রতীম দেশ হিসেবে অতীতের ন্যায় ভবিষ্যতেও ভারত সবসময় বাংলাদেশের পাশে থাকবে।  

বক্তারা বলেন, সনাতন ধর্মের প্রাণপুরুষ মহাবতার পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ নানান ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে মানবজাতির কাছে জীবন ধারণের অনন্য উদাহরণ রেখে গেছেন। শ্রীকৃষ্ণের বাণী সমগ্র বিশ্বকে আলোড়িত করছে হাজার বছর ধরে। শ্রীকৃষ্ণের শিক্ষা হলো- অন্যায়কে পরাভূত করে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা। এই পবিত্র দিনে সকল অকল্যাণ ও অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে অন্তর আত্মাকে জাগ্রত করার শপথ নিতে হবে।

জন্মাষ্টমীর মহাশোভাযাত্রা।  ছবি: সোহেল সরওয়ার শোভাযাত্রায় অংশ নিতে নগর ছাড়াও বিভিন্ন উপজেলা থেকে ট্রাক, মিনিট্রাক, পিকআপ, লরি নিয়ে ভক্তরা আন্দরকিল্লা, মোমিন রোডসহ আশপাশের এলাকায় জড়ো হন। শ্রীকৃষ্ণ ধ্বনিতে জনসমুদ্রে পরিণত হয় পুরো এলাকা।  

ভক্তরা কৃষ্ণের রথ, রাধা-কৃষ্ণের যুগল মূর্তি, কংসের কারাগারসহ শ্রীকৃষ্ণের জীবনের নানা অংশের আদলে সেজে শোভাযাত্রায় অংশ নেন। বিভিন্ন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, সামাজিক ও ধর্মীয় সংগঠনের পক্ষ থেকেও র‌্যালি যোগ দেয় শোভাযাত্রায়।

জন্মাষ্টমীর মহাশোভাযাত্রা।  ছবি: সোহেল সরওয়ার শোভাযাত্রা ঘিরে নগরের কয়েকটি সড়কের যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করে নগর পুলিশের ট্রাফিক উত্তর বিভাগ। গুডস হিল ক্রসিং, জামাল খান, এনায়েত বাজার, ফিশারি ঘাট, সিটি কলেজ মোড়, লাভ লেইন, আমতলা, তিনপুল সহ শোভাযাত্রার গমনপথের সব সড়কে যানবাহন চলাচল সকাল ৮টা থেকে দুপুর পর্যন্ত আংশিক বন্ধ রাখা হয়।

জন্মাষ্টমীর্ শোভাযাত্রা জেএমসেন হল থেকে শুরু হয়ে আন্দরকিল্লা মোড়, টেরীবাজার, লালদীঘির পূর্ব পাড়, সোনালী ব্যাংক মোড়, কোতোয়ালী থানার মোড়, নিউ মার্কেট, রাইফেল ক্লাব, তুলসীধাম, নন্দনকানন, মোমিন রোড ও চেরাগী পাহাড় ঘুরে ১২টার দিকে জেএমসেন হলের সামনে এসে শেষ হয়।

মহাশোভাযাত্রায় রাধা-কৃষ্ণ সাজ।  ছবি: সোহেল সরওয়ার এছাড়া জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ দেশের বিভিন্ন জেলায় আয়োজিত কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছেন। ভগবান শ্রীকৃষ্ণের আশীর্বাদ পেতে এদিন উপবাস রেখে পুজো-অর্চনা করছেন সনাতনীরা।

শুক্রবার (২৩ আগস্ট) দুপুর ১টায় জেএম সেন হলে উৎসব মঞ্চে পান্না পালের সভাপতিত্বে মাতৃসম্মেলন উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম রামকৃষ্ণ মিশনের অধ্যক্ষ শ্রীমৎ শক্তিনাথানন্দ মহারাজ। প্রধান অতিথি ছিলেন সমাজসেবা অধিদপ্তরের সাবেক অতিরিক্ত পরিচালক বন্দনা দাশ। আশীর্বাদক ছিলেন শ্রীমৎ স্বামী লক্ষ্মী নারায়ণ কৃপানন্দ পুরী। প্রধান বক্তা ছিলেন হুলাইন ছালেহ নুর ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ ছন্দা চক্রবর্তী। আলোচনায় অংশ নেন অধ্যাপক রূপন ধর, অধ্যাপিকা পপি সাহা।

শিপ্রা চৌধুরীর সঞ্চালনায় মাতৃ সম্মেলনে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন রূপালী সরকার। বক্তব্য দেন কবরী রক্ষিত, গীতা চক্রবর্ত্তী, রুমকি সেনগুপ্ত, ঊষা আচার্য্য, ঝর্ণা নন্দী, রিংকু ভট্টাচার্য্য, পম্পী দাশ, শিল্পী চৌধুরী, লক্ষ্মীকর চৌধুরী প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১২৪০ ঘণ্টা, আগস্ট ২৩, ২০১৯
এসি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।