ট্রেনগুলো চালু হলে একদিকে কৃষকরা যেমন লাভবান হবেন, তেমনি ভোক্তারাও কম দামে পণ্য কিনতে পারবেন। কারণ অন্য জেলা থেকে ঢাকায় কৃষিপণ্য আনার ক্ষেত্রে যে পরিমাণ খরচ পড়তো ব্যবসায়ীদের, ট্রেনের ক্ষেত্রে খরচ তার অর্ধেকেরও কম পড়বে।
রেলওয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, ঢাকায় কৃষিজাত পণ্যের মধ্যে ৩৫ শতাংশের মতো আসে যশোর অঞ্চল থেকে।
এ জন্য ১২৫টি লাগেজ ভ্যান কেনা হচ্ছে, যেগুলো কয়েক মাসের মধ্যে দেশে আসতে শুরু করবে। লাগেজ ভ্যানগুলো কেনা হচ্ছে রেলওয়ের ‘রোলিং স্টক অপারেশনস ইমপ্রুভমেন্ট’ প্রকল্পের আওতায়। প্রকল্পে যৌথভাবে অর্থায়ন করছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ও বাংলাদেশ সরকার। ভ্যানগুলোর মধ্যে ৫০টি ব্রডগেজ ও ৭৫টি মিটার গেজ।
বিশেষ এসব ট্রেনে শাকসবজি পরিবহনের জন্য থাকবে সাধারণ ভ্যান। আর মাছ, মাংস, দুধসহ হিমায়িত খাদ্য পরিবহনের জন্য থাকবে রেফ্রিজারেটেড ভ্যান।
কৃষিখাতে হবে বৈপ্লবিক পরিবর্তন
কৃষিপণ্যবাহী এসব ট্রেন চালু হলে কৃষিখাতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন হবে বলে মনে করছেন চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ এর সাবেক পরিচালক মাহফুজুল হক শাহ।
তিনি বাংলানিউজকে বলেন, খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি ও বান্দরবান ছাড়াও চট্টগ্রামের বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রচুর পরিমাণে কৃষিপণ্য প্রতিদিন চট্টগ্রাম শহরে আসে। এখান থেকে ঢাকাসহ অন্যান্য জেলাতেও কৃষিপণ্য যায়। ঢাকায় পৌঁছাতে গিয়ে অনেক পণ্য পচে যায়। তাই কৃষিপণ্যবাহী ট্রেন চালু করা হলে কৃষিখাতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন হবে।
‘একদিকে যেমন কৃষকরা ন্যায্যমূল্য পাবেন, তেমনি ব্যবসায়ীদের পরিবহন খরচ কম হবে। ভোক্তারাও কম দামে পণ্য কিনতে পারবেন। অন্যদিকে এ খাত থেকে রেলওয়ে প্রচুর পরিমাণে রাজস্ব আয় করতে পারবে’ বলেন মাহফুজুল হক শাহ।
রেলসচিব মোফাজ্জল হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, ইতোমধ্যে লাগেজ ভ্যান কেনার জন্য সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। আশা করছি, ২০২০ সালের মার্চের মধ্যে কৃষিপণ্য পরিবহনে চারটি ট্রেন চালু করা যাবে। এছাড়া সারাদেশ থেকে কৃষিপণ্য পরিবহনের সুযোগ করে দিতেই প্রতিটি প্যাসেঞ্জার ট্রেনে অতিরিক্ত লাগেজ ভ্যান লাগানো হবে, যেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে কৃষিপণ্য ঢাকায় আসতে পারে। সারা দেশ থেকে আসা এসব কৃষিপণ্যের প্রধান গন্তব্য হবে তেজগাঁও রেলস্টেশন।
উল্লেখ্য, ১৯৭০ দশকে বাংলাদেশে কৃষিপণ্য পরিবহনে অন্যতম প্রধান বাহন ছিল রেলপথ। সে সময় কাঁচা পাট, তুলা, ডাল, মসলা, তেলবীজ, গম, অন্যান্য খাদ্যশস্য, লবণ, চিনি, আখ, চা, উদ্ভিজ্জ তেলসহ বিভিন্ন ধরনের কৃষিপণ্য পরিবহন করা হতো ট্রেনে। বর্তমানে ট্রেনে কৃষিপণ্য পরিবহন শূন্যের কোটায়।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৩০ ঘণ্টা, আগস্ট ২২, ২০১৯
জেইউ/এসি/টিসি