ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

হাত বাড়ালেই মেঘ!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২১১ ঘণ্টা, আগস্ট ১৫, ২০১৯
হাত বাড়ালেই মেঘ! পাহাড়ের ভাঁজে ভাঁজে জমে আছে মেঘ। ছবি: বাংলানিউজ

বান্দরবান থেকে ফিরে: পাহাড়ের ভাঁজে ভাঁজে জমে আছে মেঘ। মাঝেমধ্যে কালচে মেঘের চাদর ঢেকে দিচ্ছে সবুজ। যত উঠছি ওপরে, নিচের শহর তত ছোট হয়ে যাচ্ছে। এরমধ্যে এক দল মেঘ এসে লাগল গাড়িতে। তুলো ছেঁড়া মেঘ যেন ধরা দিচ্ছে হাত বাড়ালেই। ততক্ষণে গ্লাসে জমে গেলো জলকণা। অনুভব হলো হিমেল পরশ। এভাবেই মেঘের খেলা ও পরশ গায়ে মেখে আমাদের গাড়িটি গিয়ে থামল নীলগিরিতে।

তখন ঘড়িতে দুপুর আড়াইটা। নীলগিরি রিসোর্টে ঢুকার আগে পাশের রেস্টুরেন্ট থেকে খেয়ে নিলাম দুপুরের খাবার।

সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ২ হাজার ২০০ ফুট ওপরে ১২০ টাকায় গরম গরম বিরিয়ানি পেয়ে খুশির অন্ত নেই সবার। খাওয়া সেরে দ্রুত ঢুকলাম রিসোর্টে।
সেখানে কিছুক্ষণ চলল ছবি তোলার ধুম।

পাহাড়ের ভাঁজে ভাঁজে জমে আছে মেঘ।  ছবি: বাংলানিউজনীলগিরির চূড়ায় উঠে দু’চোখ যেদিকে গেছে, সেদিকেই সবুজ আর সবুজ। নীলগিরি যেন প্রকৃতির এক অনন্য উপহার। বর্ষা মৌসুমে নীলগিরি সাজে অপরূপ সৌন্দর্যে। তারই স্বাক্ষী হলাম আমরা। পেলাম দূর্লভ মেঘের ছোঁয়া।

এর আগে নীলগিরি যেতে যেতে চোখ জুড়িয়েছে পাহাড়ের বুক ছিড়ে বয়ে চলা সর্পিল সাঙ্গু নদী। সৌন্দর্যময় শৈলপ্রপাতও মন জুড়াবে। ঝর্ণার সর্বদা বহমান পানির দৃশ্য স্মৃতিতে ধরে রাখার মতো। চিম্বুক পাহাড় রয়েছে এরপরেই। এতো গেলো নীলগিরি যাওয়া-আসার কথা।

নীলাচলে পর্যটকদের ভিড়।  ছবি: বাংলানিউজআগের দিন সকালে বান্দরবান পৌঁছে হোটেলে চেক ইন করে ব্যাগ রেখে ফ্রেশ হয়ে নাশতা সেরে বেরিয়ে পড়ি আমরা। প্রথমে গেলাম রামজাদী ও স্বর্ণ মন্দিরে। পাহাড়ের চূড়ায় স্থাপত্যের অপূর্ব নিদর্শন মন্দির দুটি সহজেই পর্যটকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম। যত কাছে যায় তত প্রাণ জুড়িয়ে যায়। দূর থেকে দেখলেই মনে হয় যেন হাতছানি দিয়ে ডাকছে। এরপর একটু রেস্ট নিয়ে চলে যায় মেঘলা পর্যটন কেন্দ্রে। তারপরে সুর্যাস্ত দেখে বিকেলটা কাটাতে রওনা হই নীলাচলে।

হাত বাড়ালেই ছোঁয়া যায় মেঘ।  ছবি: বাংলানিউজনীলাচল যাবার পথ আকা-বাঁকা। সাপের মতো পেঁছানো পথে গাড়ি ছুটল নীলাচলের দিকে। গাড়ি রাস্তায় রেখে আমরা উঠে পড়ি পাহাড়ের চূড়ায়। প্রকৃতির অপরূপ লাবন্য ও মায়াবী আলোয় সূর্য ডোবা দেখে শেষ হয় বিকেলটি।

বান্দরবান যাবেন যেভাবে

ঢাকা থেকে সরাসরি বাসে যেতে পারবেন বান্দরবান। ট্রেনে গেলে চট্টগ্রাম রেল স্টেশন নেমে বহদ্দারহাট বাস টার্মিনালে যেতে হবে। সেখান থেকে পূরবী-পূর্বাণী নামে দুটি বাস সার্ভিস রয়েছে। বাসের ভাড়া ১০০ থেকে ১২০ টাকা। সময় লাগে আড়াই থেকে তিন ঘণ্টা। আর নিজস্ব ও ভাড়ায় চালিত রিজার্ভ গাড়ি নিয়েও বান্দরবান যেতে পারবেন।

যেখানে থাকবেন

বান্দরবানে পর্যটকদের থাকার জন্য হোটেল, মোটেল, রিসোর্ট এবং গেস্টহাউজ আছে। সেখানে থাকতে প্রতিদিন মানভেদে রুম প্রতি গুনতে হবে দেড় থেকে পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত।

ঘুরবেন যেভাবে

বান্দরবানের বিভিন্ন পর্যটন স্থান ঘুরে বেড়াতে ভাড়ায় চালিত গাড়ি পাওয়া যায়। সিএনজি অটোরিকশা ও মহেন্দ্র গাড়িতে করেও পর্যটন স্পটগুলো সহজে ঘুরে বেড়ানো সম্ভব। তবে ভাড়াটা বেশি হওয়ায় দরদাম করতে ভুলবেন না।

বাংলাদেশ সময়: ১৮১০ ঘণ্টা, আগস্ট ১৫, ২০১৯
এসইউ/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।