তিনি বলেছেন, ‘আমার দায়িত্ব পালনকালীন সময়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং কর্মকর্তা, কর্মচারীর বিরুদ্ধে কোনো ধরনের নিপীড়নমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে না।
শনিবার (২৭ জুলাই) অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্ষিক সিনেট অধিবেশনে লিখিত বক্তব্যে প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক এবং প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার ক্ষেত্রে সবক্ষেত্রে সততা, ন্যায়-নিষ্ঠা এবং ন্যায্যতাকে অগ্রাধিকার দেয়া হবে। চলমান উন্নয়ন কর্মকাণ্ড অব্যাহত রাখা হবে।
প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেখিয়েছেন কীভাবে স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে হয়। তার সাহসী নেতৃত্বে বাংলাদেশ উন্নয়নের শিখরে যাওয়ার অভিযানে সফলভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। ’
‘সামগ্রিক উন্নয়নে সরকারের গৃহীত কেন্দ্রীয় পলিসির সঙ্গে সমন্বয় রেখে চতুর্থ শিল্পবিপ্লব, জ্ঞানভিত্তিক সমাজ, দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স এবং টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রাকে সামনে রেখে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো। ’ যোগ করেন তিনি।
উপাচার্য বলেন, ‘শিক্ষাকে উৎপাদনমুখী করা সময়ের দাবি। তাই বিশ্ববিদ্যালয় ইন্ডাস্ট্রি কোলাবোরেশনের মাধ্যমে উৎপাদনমুখী শিক্ষাধারা প্রণয়ন এবং প্রদানের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করে চবি শিক্ষার্থীদের কার্যকর মানবসম্পদে পরিণত করা হবে। ’
তিনি বলেন, ‘চবিতে হাইটেক পার্ক নির্মাণ নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দেবে। কর্মস্থান ও তথ্য প্রযুক্তির বিকাশে অবারিত সুযোগ সৃষ্টি হবে। চট্টগ্রাম সমুদ্র বেষ্টিত হওয়ায় ব্লু ইকোনমির অফুরন্ত সম্ভাবনা রয়েছে। আমাদের শিক্ষক-শিক্ষার্থী যাতে এসব কাজে লাগিয়ে দেশের উন্নয়নের অংশীদার হতে পারে সে উদ্যোগ নেওয়া হবে। ’
প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার বলেন, ‘চবির অনেক শিক্ষক বিশ্বমানের গবেষণা করছেন। কিন্তু আমাদের তথ্য ভাণ্ডারে এসব গবেষণা সংযুক্ত না থাকায় র্যাংকিং এ প্রাপ্য অবস্থান চবি পাচ্ছে না। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য ভাণ্ডার এবং ওয়েবসাইট হালনাগাদ ও সমৃদ্ধ করার উদ্যোগ নেয়া হবে। ’
‘বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করে এমন একটি পরিবেশ নিশ্চিত করতে চাই- যাতে শিক্ষক শিক্ষার্থী স্বাধীনভাবে শিক্ষা গবেষণায় নিয়োজিত থাকতে পারেন। জ্ঞান-বিজ্ঞানের সকল শাখায় নিজেদের সৃষ্টিশীলতাকে সঠিকভাবে বিকশিত করতে পারেন। ’ বলেন তিনি।
সিনেট অধিবেশনে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা করেন রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) কেএম নুর আহমদ। এবার চবির ৩৩৯ কোটি ১৮ লাখ টাকা রাজস্ব বাজেটের মধ্যে ৩১৬ কোটি টাকা দেবে ইউজিসি। ১৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্ভাব্য নিজস্ব আয় হিসেবে ধরা হয়েছে। বাকি ৬ কোটি ৬৮ লাখ টাকা ঘাটতি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
অন্যদিকে ব্যয়ের খাতে বরাবরের মতোই সর্বোচ্চ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মকর্তাদের বেতন, বেতন বাবদ সহায়তা এবং ভাতাদি খাতে। মোট বাজেটের মধ্যে ২৬৯ কোটি ৪০ লাখ টাকা এসব খাতে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়াও পণ্য ও সেবা বাবদ সহায়তা হিসেবে ৫৬ কোটি ২৮ লাখ টাকা, বিশেষ মূলধন অনুদান হিসেবে ৫ কোটি টাকা, পেনশন ও অবসর সুবিধা বাবদ ৫৩ কোটি টাকা এবং অন্যান্য অনুদান হিসেবে ৮ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
উপাচার্যের ভাষণ ও বাজেটের ওপর আলোচনায় অংশ নেন সিনেট সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, সংসদ সদস্য ইউসুফ আবদুল্লাহ হারুন, ওয়াসিকা আয়েশা খান, নজরুল ইসলাম চৌধুরী, মাহফুজুর রহমান মিতা, চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার আবদুল মান্নান।
বক্তব্য দেন প্রফেসর ড. মুহাম্মদ শামসুদ্দিন, প্রফেসর ড. সুলতান আহমেদ, প্রফেসর ড. এম আবদুল গফুর, প্রফেসর মনসুর উদ্দিন আহমদ, ড. মো. মঞ্জুর-উল-আমিন চৌধুরী, প্রফেসর ড. মুস্তাফিজুর রহমান ছিদ্দিকী, প্রফেসর জমির উদ্দিন আহমদ, প্রফেসর বেনু কুমার দে, প্রফেসর ড. ফরিদ উদ্দিন আহামেদ, অ্যাডভোকেট মো. নুরুল আমিন, আমির হুমায়ুন মাহমুদ চৌধুরী, প্রফেসর ড. মো. মাহবুবুর রহমান, প্রফেসর ড. কাজী এস এম খসরুল আলম কুদ্দুসী।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩০ ঘণ্টা, জুলাই ২৭, ২০১৯
এমআর/এসি/টিসি