ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

১০০ এসি বাস নামবে চট্টগ্রামে: মেয়র নাছির

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮১৯ ঘণ্টা, জুলাই ২৫, ২০১৯
১০০ এসি বাস নামবে চট্টগ্রামে: মেয়র নাছির বক্তব্য দেন মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন। ছবি: সোহেল সরওয়ার

চট্টগ্রাম: গণপরিবহনে শৃঙ্খলা ও নিরাপদ যাত্রীসেবার লক্ষ্যে ১০০ এসি বাস নামানোর জন্য একটি শিল্পপ্রতিষ্ঠানকে রাজি করিয়েছি। তারা এলসি খুলেছে। বিআরটিএ, সিএমপিকে অনুরোধ জানিয়েছি দ্রুত অনুমোদন দেওয়ার জন্য।

বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) দুুপুরে নগরের আসকার দীঘির পাড়ের রীমা কনভেনশন সেন্টারে 'জনতার মুখোমুখি মেয়র' শীর্ষক অনুষ্ঠানে মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন এসব কথা বলেন।

২১ নম্বর জামালখান ওয়ার্ডের উন্নয়ন ও পরিকল্পনা নিয়ে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

মেয়র বলেন, নিরাপদ, বাসযোগ্য, পরিষ্কার ও সবুজ নগরী ক্রমে হিসেবে চট্টগ্রামে দৃশ্যমান হচ্ছে। এ কাজে নগরবাসীকে আমাদের সঙ্গে পেতে চাই।

জোর করে চাপিয়ে দিলে টেকসই হয় না। তাই ধীরগতিতে এগোচ্ছি আমরা। আমার প্রত্যাশা উন্নত দেশের সমৃদ্ধ নগরের মতো চট্টগ্রামকে গড়ে তোলা। এটি বাস্তবায়ন সম্ভব।

তিনি বলেন, নালার পানি প্রবাহ স্বাভাবিক রাখতে ঢাকনা দিচ্ছি। যাতে পথচারীরা স্বাচ্ছন্দ্যে চলাচল করতে পারে, ময়লা ফেলে নালায় পানি চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি করতে না পারে।

উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভিত্তিহীন গুজবে বিভ্রান্ত না হয়ে আইন নিজের হাতে না নে নেওয়ার অাহ্বান জানান মেয়র।

ডেঙ্গু প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, চসিক নিয়মিত ওষুধ ছিটানো, ডোর টু ডোর ময়লা সংগ্রহ এবং রাতে ময়লা অপসারণ করায় অন্য যেকোনো শহরের চেয়ে মশা কম, ডেঙ্গুর প্রকোপও কম। ফগার ও হ্যান্ড স্প্রে মেশিনে ১৬১ জন ওষুধ ছিটাচ্ছেন। ডাক্তারদের সচেতন করেছি। নগরবাসীকে বিজ্ঞপ্তি, প্রচারপত্র দিয়ে সচেতন করছি। ডেঙ্গু আক্রান্ত কেউ যদি চিকিৎসা করাতে অপারগতা জানান তবে আমরা দায়িত্ব নেব।

মেয়র বলেন, আমি কোনো সম্মানী বা সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করিনি। ১ লাখ ৩৫ হাজার টাকা সম্মানীসহ সাড়ে ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা অনুদান দিয়ে আসছি। শিক্ষার্থী, সেবা সংস্থা, রোগীদের কল্যাণে এ টাকা খরচ হচ্ছে।

এক প্রশ্নের উত্তরে মেয়র বলেন, এ নগরে যে উন্নয়ন হয়েছে তা পরিকল্পিতভাবে হয়েছে এটা দাবি করতে পারি না। ড্রেনেজ ব্যবস্থা সুপরিকল্পিত নয়। দায়িত্বজ্ঞানহীন কিছু বাসিন্দা পানি আটকে দেন, বৃষ্টি-জোয়ারের পানি নিষ্কাশনে বাধা সৃষ্টি করে।

বিদেশে দক্ষ শ্রমিক পাঠানোর লক্ষ্যে চসিক একটি কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তুলবেন বলে জানান মেয়র।

ছবি: সোহেল সরওয়ারমেয়র জানান, চসিকের নির্ধারিত দায়িত্ব আছে। গত অর্থবছরে ৫৯ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করেছি। যা চসিকের ইতিহাসে রেকর্ড। চসিকের ব্যয় ২৬০ কোটি টাকা। ৯ কোটি টাকার প্রশাসনিক ব্যয় এখন ২০ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে ভর্তুকি দিচ্ছে চসিক।

পাহাড়ি ঢলে জামালখান বাই লেনে বৃষ্টি হলেই হাঁটু পানি উঠে এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, ২০১৫ সালের ২৬ জুলাই চসিকের দায়িত্ব নিই। ওই দিন মুষলধারে বৃষ্টি হয়েছিল। তাই জলাবদ্ধতা নিরসনে চীনা প্রতিনিধি দলের সঙ্গে আলোচনা করি। ২০১৬ সালে ১১ মাস তারা ফিজিবিলিটি স্টাডি করেছিল বিশেষজ্ঞরা। তাদের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ডিপিপি মন্ত্রণালয়ে জমা দিই। তখন জানতে পারি সিডিএর মেগাপ্রকল্প একনেকে উঠছে। আমরা এর বিরোধিতা করেনি, শতভাগ সহযোগিতার সিদ্ধান্ত দিয়ে প্রতিনিধি পাঠিয়েছিলাম। সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে কাজ চলছে। ফিজিবিলিটি স্টাডি শেষে ১৩টি খালের ড্রয়িং ডিজাইন কয়েকদিন আগে হস্তান্তর করা হয়েছে।

চসিক একাধিকবার চিঠি দিয়ে সিডিএকে জানিয়েছে মেগাপ্রকল্পের আওতাধীন খালগুলোর ৩০২ কিলোমিটার তালিকা দেওযার জন্য। যাতে ওভারলেপিং না হয়। কিন্তু সিডিএর তৎকালীন চেয়ারম্যান দেননি। এখন নতুন চেয়ারম্যান জানিয়েছেন ৩৮৪ কিলোমিটার খাল সিডিএ করবে।

প্রতিবেশী যারা খাল, নালায় ময়লা ফেলে তাদের নিবৃত করার জন্য নগরবাসীকে অনুরোধ জানান।

বিএফইউজের যুগ্ম মহাসচিব মহসীন কাজী বলেন, জামালখানের দুঃখ আসকারদীঘি। মশার প্রজনন ক্ষেত্র এটি। এ দীঘি পরিষ্কার ও দৃষ্টিনন্দন করলে জামালখানের মানুষ উপকৃত হবে।

এর প্রেক্ষিতে মেয়র বলেন, আসকার দীঘি ব্যক্তি মালিকানাধীন। উনার সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হবে।

ওয়ার্ডের বাসিন্দারা বিমান অফিসের পেছনে নালায় টাইলসের ময়লা ফেলা, সিঁড়ির গোড়ায় অবৈধ বাজার বসিয়ে চাঁদাবাজি ও ওজনে কারচুপি, যানজট নিরসনে জামালখানের স্কুলগুলো আধঘণ্টা আগে পরে ছুটি দেওয়া, স্কুলবাস চালু করা, ফুটপাত ও সড়ক দখল করে হকার বসা ইত্যাদি বিষয়ে মেয়রের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

যানজট প্রসঙ্গে বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভবন অনুমোদন দেয় সিডিএ, পাঠের অনুমোদন দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

মেয়র তাৎক্ষণিক কিছু সমস্যার সমাধান ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তুলে ধরেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৪০৭ ঘণ্টা, জুলাই ২৫, ২০১৯

এআর/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।