ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

‘জঙ্গি সদস্য’ স্বপ্নার ২ দিনের রিমান্ড

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২৫০ ঘণ্টা, জুলাই ১৫, ২০১৯
‘জঙ্গি সদস্য’ স্বপ্নার ২ দিনের রিমান্ড জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের আটক সদস্যরা। ফাইল ছবি।

চট্টগ্রাম: প্রেমের ফাঁদে ফেলে চট্টগ্রাম থেকে বরিশালে নিয়ে জঙ্গি বানানোর চেষ্টার ঘটনায় র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) সদস্যদের হাতে আটক হওয়া নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন ‘আনসার আল ইসলাম সদস্য’ স্বপ্নার (৩০) দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

রোববার (১৪ জুলাই) মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. খাইরুল আমীনের আদালত রিমান্ড মঞ্জুর করেন বলে বাংলানিউজকে জানান চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের সিনিয়র সহকারী কমিশনার (প্রসিকিউশন) কাজী শাহাবুদ্দীন আহমেদ।

কাজী শাহাবুদ্দীন আহমেদ বলেন, ‘আদালতে হাজির করে আসামি স্বপ্নার পাঁচদিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের উপ-পরিদর্শক (এসআই) শিবেন বিশ্বাস।

আদালত শুনানি শেষে দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। ’

এর আগে গত ৮ জুলাই ও ৯ জুলাই বরিশাল ও ঢাকায় অভিযান চালিয়ে আনসার আল ইসলামের সদস্য জান্নাতুল নাঈমা (২২), আফজাল হোসেন (২৩) ও তাদের ফাঁদে পড়া সাফিয়া আক্তার তানজীকে (২১) আটক করে র‌্যাব-২ এর সদস্যরা।

পরে তাদেরকে সিএমপির বন্দর থানায় হস্তান্তর করে র‌্যাব।

আরও খবর>>
ফেসবুকে পরিচয়, পরে প্রেমের ফাঁদ জঙ্গিদের

এ ঘটনায় শনিবার (১৩ জুলাই) স্বপ্না নামের আরও একজনকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে র‌্যাব-২। পেশায় গৃহিণী স্বপ্না আনসার আল ইসলামের সক্রিয় সদস্য বলে জানিয়েছে র‌্যাব। তাকে লক্ষ্মীপুর থেকে আটক করা হয়।

মামলাটি তদন্ত করছে সিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই শিবেন বিশ্বাস বাংলানিউজকে বলেন, ‘শনিবার স্বপ্না নামের একজনকে আমাদের কাছে হস্তান্তর করেছে র‌্যাব। আদালত তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দিয়েছেন। ’

সিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের উপ-কমিশনার মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, ‘জান্নাতুল নাঈমা, আফজাল হোসেন ও সাফিয়া আক্তার তানজীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তারা সাফিয়া আক্তার তানজীকে কৌশলে চট্টগ্রাম থেকে বরিশালে নিয়ে আনসার আল ইসলামের সদস্য হিসেবে তৈরি করছিল বলে তথ্য দিয়েছে র‌্যাব। তাদের দেওয়া তথ্যগুলো যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। ’

গত ৯ জুলাই ঢাকায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব জানায়, গত ২৬ জুন চট্টগ্রাম থেকে নিখোঁজ হন সাফিয়া আক্তার তানজী। এ ঘটনার ছায়াতদন্তের ভিত্তিতে ৮ জুলাই দিনগত রাতে বরিশালের একটি মাদরাসা থেকে সাফিয়াকে উদ্ধার করা হয়। এসময় আটক করা হয় আনসার আল ইসলামের নারী সদস্য নাঈমাকে।

র‌্যাব জানায়, সাফিয়ার সঙ্গে ফেসবুকে নাঈমাসহ বেশ কয়েকজন মেয়ের সঙ্গে পরিচয় হয়। সেখানে একটি গ্রুপে নাঈমার ফেসবুক বন্ধু বরিশালের সাইফের সঙ্গে পরিচয় হয় তার। নাঈমা ও অন্যান্য কয়েকজনের প্ররোচণায় সাইফের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক হয়। সাইফকে বিয়ে করার জন্য গত ২৬ জুন নাঈমার সঙ্গে বরিশালের উদ্দেশ্যে ঘর ছাড়েন সাফিয়া। বরিশালে পৌঁছানোর পর প্রেমিক সাইফ তাকে একটি মাদরাসায় ভর্তি করিয়ে দিয়ে সময়ক্ষেপণ করতে থাকে। মাদরাসায় অবস্থানকালীন বিয়ের প্ররোচণায় তাকে জঙ্গিবাদে প্রলুব্ধ করা হয়।

র‌্যাব জানায়,  নাঈমা চট্টগ্রামের একটি মাদরাসার শিক্ষার্থী। ফেসবুকের একটি গ্রুপে বিভিন্ন নারী সদস্যদের মাধ্যমে প্ররোচিত হয়ে আনসার আল ইসলামে যোগ দেন। জঙ্গি সংগঠনটির নারী সদস্য বাড়াতে দাওয়াতি কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিলেন। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজন নারীকে সংগঠনে অর্ন্তভুক্ত করেছেন। সাইফকে বিয়ে করার জন্য কুরআন হিফজ করার শর্ত সাফিয়ার উপর জুড়ে দেন তিনি। এরপর পূর্বপরিকল্পনা ও সংগঠনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সাফিয়াকে বরিশালে নিয়ে যান। নিজের বোন পরিচয় দিয়ে একটি মাদরাসায় সাফিয়াকে ভর্তিও করিয়ে দেন নাঈমা।

বাংলাদেশ সময়: ২২৩৭ ঘণ্টা, জুলাই ১৪, ২০১৯
এসকে/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।