ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

চমেকে শান্তনু বিশ্বাসের দেহদান

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৪৯ ঘণ্টা, জুলাই ১৪, ২০১৯
চমেকে শান্তনু বিশ্বাসের দেহদান নাট্যকার, সংগীত শিল্পী, গীতিকার, নাট্য অভিনেতা শান্তনু বিশ্বাস

চট্টগ্রাম: দেহদান করে মানব সেবায় নিজেকে আত্মনিয়োগ করে গেলেন নাট্যকার, সংগীত শিল্পী, গীতিকার, নাট্য অভিনেতা শান্তনু বিশ্বাস।

রোববার (১৪ জুলাই) দুপুরে পরিবারের পক্ষ থেকে তার মরদেহ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

প্রয়াত শান্তনু বিশ্বাসের স্ত্রী শুভ্রা বিশ্বাস বাংলানিউজকে বলেন, মৃত্যুর আগে আমার স্বামী চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীদের জন্য দেহদানের সিদ্ধান্ত নেন।

একটি চুক্তি হয়েছিল। সে অনুযায়ী রোববার দুপুরে তার দেহ কলেজ কর্তৃপক্ষকে হস্তান্তর করা হয়েছে।

চমেক অধ্যক্ষ ডা. সেলিম মো. জাহাঙ্গীর বাংলানিউজকে বলেন, শান্তনু বিশ্বাসের মরদেহ রোববার দুপুরে তার পরিবার আমাদের কাছে হস্তান্তর করেন।

তিনি আরও বলেন, মর্গের শিক্ষার্থীদের এনাটমি ফিজিওলজি ইত্যাদি শেখার কাজে মরদেহ ব্যবহার হয়। এ ছাড়া শিক্ষা উপকরণ হিসেবে মানবদেহের ব্যবহার করেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।

‘শান্তনু বিশ্বাসের দানকৃত দেহটির কল্যাণে ভালো চিকিৎসক তৈরি হবে। এসব চিকিৎকের কাছ থেকে ভালো চিকিৎসা পাবেন রোগীরা। চিকিৎসকদের অবদানের অংশে দেহদানকারী শান্তনু বিশ্বাসের নামও থাকবে আজীবন। ’

রিবারের পক্ষ থেকে তার মরদেহ চমেক কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়। শান্তনু বিশ্বাস শুক্রবার (১২ জুলাই) বিকাল ৪টার দিকে ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ ‌করেন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, দুই কন্যাসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

এর আগে মঙ্গলবার (৯ জুলাই) অসুস্থ হওয়ার পর তাকে নগরের একটি ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) বিকাল ৫টায় ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে তিনি মারা যান।

শান্তনু বিশ্বাস মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তীকালে থিয়েটারের সঙ্গে যুক্ত হয়ে নাটক লেখা, অভিনয় ও নির্দেশনা শুরু করেন। ১৯৭৬ সালের দিকে কয়েকজন নাট্যকর্মী সহ অঙ্গন থিয়েটার গড়ে তোলেন। ‘কালো গোলাপের দেশ’ তাঁর লেখা প্রথম নাটক।

এর আগে তিনি ‘অঙ্গন’ এবং ‘গণায়ন’-এ অভিনয় করে সারাদেশে একজন শক্তিমান অভিনেতা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন। তিনি নাটকের নির্দেশনা আবহও তৈরি করেন তৃতীয় নাটক ‘নবজন্ম’-তে। মুক্তিযুদ্ধের ওপর ভিন্ন আঙ্গিকে লেখা তার নাটক ‘ইনফরমার’ ব্যাপক দর্শকপ্রিয়তা পায়।

শান্তনু বিশ্বাস বিশ্ব নাট্যের অনেক নাটক অনুবাদ করেছেন, রূপান্তরও করেছেন, কিশোর নাট্য রচনা করেছেন। কবি মনিরুল মনিরের খড়িমাটি থেকে ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত হয় শান্তনু বিশ্বাসের গানের বই ‘গানের কবিতা- খোলাপিঠ।

শান্তনু বিশ্বাস সঙ্গীতের সংগঠকও। এ বিষয়ে তিনি গবেষণা করেছেন, প্রবন্ধও লিখেছেন। বহুরৈখিক আড়ালচারী শিল্পী কালপুরুষ নাট্য সম্প্রদায়ের উপদেষ্টা শান্তনু বিশ্বাস নিজের রচনা, নির্দেশনা ও অভিনয় নিয়ে সবশেষ মঞ্চে ওঠেন ২৮ জুন, ‘নির্ভার’ নাটক মঞ্চায়নকালে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫০ ঘণ্টা, জুলাই ১৪, ২০১৯
এসইউ/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।