সর্বশেষ নেয়া প্রকল্পের কাজ ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখনো প্রকল্পের অগ্রগতি ৭৫ শতাংশ বলে জানা গেছে। তবুও প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, মেয়াদের মধ্যে শেষ হবে কাজ।
সরেজমিন দেখা যায়, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ফৌজদারহাট কালু শাহ মাজার গেট থেকে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনের (এইউডব্লিউ) ক্যাম্পাস পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার সড়কের কাজ শেষ হয়েছে। ওই অংশে কার্পেটিংয়ের পাশাপাশি দুইটি সেতুর ঢালাই কাজ এখনো বাকি।
অন্যদিকে বায়েজিদ বোস্তামী শেরশাহ মোড় থেকে এইউডব্লিউ ক্যাম্পাস পর্যন্ত সড়ক তৈরির কাজ শেষ হয়েছে। সেদিকে নিয়মিত গাড়ি চলাচল করছে।
তবে এইউডব্লিউ ক্যাম্পাসের অংশে এখনো দুটি কালভার্ট তৈরির কাজ বাকি। সড়কের এই অংশে পেভমেন্ট কাজও শেষ হয়নি। অংশটির জন্য প্রকল্পের কাজ নির্ধারিত সময়ে শেষ হওয়া নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।
মূলত এইউডব্লিউ কর্তৃপক্ষ সড়কটির এক কিলোমিটার অংশজুড়ে নিজেদের ক্যাম্পাস তৈরি করায় জটিলতা সৃষ্টি হয়। কর্তৃপক্ষ ক্যাম্পাসের ভেতর দিয়ে গাড়ি চলাচলে অনুমতি না দেয়ায় নতুনভাবে লুপ তৈরির প্রকল্প নেওয়া হয়। এটির মাধ্যমে এইউডব্লিউ ক্যাম্পাসের আগে লুপ তৈরির মাধ্যমে আরেফিন নগরে সড়কের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে সড়কটি।
যানজট কমানো ও সড়ক সম্প্রসারণের লক্ষে সিডিএর ১৯৯৫ সালের মাস্টারপ্ল্যানে বায়েজিদ বোস্তামী থেকে ফৌজদারহাট পর্যন্ত বাইপাস সড়কটি যুক্ত করা হয়।
সে অনুযায়ী ১৯৯৭ সালে দুই লেনের একটি সড়ক তৈরির প্রকল্প নেয়া হয়। প্রায় ৪০ কোটি টাকার প্রকল্পটির কাজ ১৯৯৯ সালে শেষ হওয়ার কথা ছিল। এজন্য পাহাড় কেটে রাস্তা তৈরির কাজও শুরু হয়। কিন্তু নানা জটিলতায় প্রকল্পটি ভেস্তে যায়।
পরবর্তীতে ‘কনস্ট্রাকশন অব লিংক রোড ফর্ম ঢাকা ট্রাংক রোড টু বায়েজিদ বোস্তামী রোড ইনক্লুডিং লুপ রোড অ্যাট দ্যা আউটার পেরিফেরি অব এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব উইম্যান’ শীর্ষক প্রকল্প নেওয়া হয়। ৩২০ কোটি টাকার চার লেনের সড়কটির সংশোধিত প্রকল্প ২০১৬ সালে একনেকে অনুমোদন পায়।
এ প্রকল্পের অধীনে ৬ কিলোমিটার সড়ক, ৯১৯ দশমিক ৭৮ কাঠা জমি অধিগ্রহণ, ৬০ হাজার ৮১২ দশমিক বর্গমিটার ক্লিনিং, ২ লাখ ৩ হাজার ৮৫৬ দশমিক ৬৬ ঘনমিটার সড়ক খনন, ১ লাখ ৪৩২ দশমিক ৮০ ঘনমিটার বাঁধের মাটি ভরাট, ৪ হাজার ৫৫০ বর্গমিটার ওভার ব্রিজ, ৬৫ রানিং মিটার রিটেইনিং ওয়াল, ১২টি বক্স কালভার্ট নির্মাণ, ৬টি সেতু, ৭টি কালভার্ট সম্প্রসারণ, ৭ হাজার ৮৭২ রানিং মিটার ড্রেন নির্মাণ করা হবে।
প্রকল্প পরিচালক ও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী প্রকৌশলী রাজীব দাশ বাংলানিউজকে বলেন, প্রকল্প কাজের সার্বিক অগ্রগতি ৭৫ শতাংশ।
‘দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া ও পাহাড়ি মাটির ওপর সড়ক তৈরিসহ অন্যান্য কাজ করতে গিয়ে শ্রমিকদের বেগ পেতে হচ্ছে। ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রকল্পের মেয়াদ রয়েছে। আশা করছি, এ সময়ের মধ্যে কাজ শেষ হবে। ’
তিনি আরও বলেন, লক্ষ্য ছিল সময়ের আগে কাজ শেষ করার। কিন্তু এইউডব্লিউ কর্তৃপক্ষ অনুমতি না দেয়ায় সেটি হয়নি। ইতোমধ্যে কিছু জায়গা ব্যবহারে তারা অনুমতি দিয়েছে। এখন আর জটিলতা নেই। আবহাওয়া ভালো থাকলে দ্রুত কাজ এগিয়ে যাবে।
সিডিএ সূত্র জানায়, সড়কটি তৈরি হলে শাহ আমানত সেতু থেকে কালুরঘাট সড়ক, অক্সিজেন-কুয়াইশ সড়ক ও বায়েজিদ বোস্তামি থেকে ঢাকা ট্রাংক রোড পর্যন্ত সংযোগ সড়ক আউটার রিং রোডের অংশ হিসেবে কাজ করবে।
বাংলাদেশ সময়: ১০০০ ঘণ্টা, জুলাই ১৪, ২০১৯
এসইউ/এসি/টিসি