ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

উদ্বোধনের আগেই চট্টগ্রাম শহর রক্ষা বাঁধে ধস

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২১৬ ঘণ্টা, জুলাই ১৩, ২০১৯
উদ্বোধনের আগেই চট্টগ্রাম শহর রক্ষা বাঁধে ধস পতেঙ্গা উপকূলীয় বাঁধ কাম আউটার রিং রোডের ওয়াকওয়ে ধসে পড়েছে।

চট্টগ্রাম: শহর রক্ষায় নির্মিতব্য ‘উপকূলীয় বাঁধ কাম আউটার রিং রোড’র পতেঙ্গা চরপাড়ায় সাগরের পাশ ঘেঁষা হাঁটার রাস্তার (ওয়াকওয়ে) কয়েকটি অংশ ধসে পড়েছে। শনিবার (১৩ জুলাই) এ ঘটনা ঘটে।

প্রকল্প পরিচালক ও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস বাংলানিউজকে বলেন, সাগরে পানি বেড়ে যাওয়ায় ঢেউয়ের কারণে ব্লক সরে বিশাল অংশ দেবে গেছে।

দেখা যায়, বাঁধের ব্লক সরে মাটি তলিয়ে যাওয়া সিসি ঢালাইয়ে তৈরি ওয়াকওয়েটি ধসে পড়েছে

এ অবস্থায় ওই অংশ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। হঠাৎ ওয়াকওয়েটির বিশাল অংশ ধসে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ওয়াকওয়ে তৈরির জন্য সাগরের বালি দিয়ে জায়গাটি ভরাট করা হয়।

স্থানীয় বাসিন্দা আশরাফুল ইসলাম বলেন, এখনো ওয়াকওয়ে তৈরির কাজ শেষ হয়নি। এরমধ্যে সেটি ধেবে পড়েছে।

‘চাপ বেশি পড়ে বলে এটি রড দিয়ে কংক্রিট (আরসিসি) ঢালাই করার দরকার ছিল। কিন্তু ওয়াকয়েটি সিসি ঢালাই দিয়ে করা হয়েছে। ’

উদ্বোধনের আগেই চট্টগ্রাম শহর রক্ষা বাঁধে ধস

নগর পরিকল্পনাবিদ প্রকৌশলী দেলোয়ার হোসেন মজুমদার বাংলানিউজকে বলেন, সাগরের পাশে কাজ করার সময় বিবেচনায় রাখতে হয় মাটি সরে যাবে। সেটি বিবেচনায় না রেখে এ ধরনের কাজ করা মানে অর্থ অপচয়।

‘সাধারণত এ ধরনের কাজগুলো পাইলিংয়ের ওপর হয়। এ ছাড়া অতিরিক্ত ভরবহন করার প্রয়োজন হলে সেখানে প্রি-কাস্ট কংক্রিট পাইল ব্যবহার করা হয়। ’

তিনি আরও বলেন, রিটেইনিং ওয়াল দিয়ে মাটি না সরার জন্য আলাদা কাস্টিং করতে হয়। ধসে পড়া ওয়াকওয়েটিতে হয়তো এ ধরনের কাজ করা হয়নি।

প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস বাংলানিউজকে বলেন, ওয়াকওয়ের পাশে রিটেইনিং ওয়াল ছিল। সবকিছু বিবেচনা রেখে কাজ হয়েছে।

‘কাজটা সম্পূর্ণ না হওয়াতে অনেক জায়গায় ব্লক বসানো হয়নি। ফলে সেটি ধসে পড়েছে। যেসব অংশে কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে, সেখানে ধসে পড়ার আশঙ্কা নেই।  

 তিনি আরও বলেন, ঢেউয়ের কারণে মাটি সরে যাওয়ায় ওয়াকওয়ে ধসে পড়েছে। সেগুলো সরানো হচ্ছে। পাশাপাশি ধসে পড়া স্থানগুলো পুন:নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। এ ছাড়া ধসের কারণ জানতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। ’ 

উল্লেখ্য, জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা) ২০০৫ সাল থেকে পতেঙ্গা হতে ফৌজদারহাট পর্যন্ত বেড়িবাঁধ কাম আউটার রিং রোড নির্মাণের জন্য সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ শুরু হয়। যাচাই শেষে ২০০৭ সালে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে চুক্তি করে জাইকা।

২০১৬ সালের জুলাইয়ে চার লেনের এ সড়কটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। আড়াই হাজার কোটি টাকার এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)।

উপকূলীয় বাঁধ কাম আউটার রিং রোড নির্মাণ নামে এ প্রকল্পের আওতায় ১৭ দশমিক ৩৫ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ হবে। এর মধ্যে ১৫ দশমিক ২০ কিলোমিটার মূল ও ২ দশমিক ১৫ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক। এ ছাড়া প্রায় সাড়ে ৫ কিলোমিটার ওয়াকওয়ে তৈরি করা হবে।

শুরুতে এ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় ৮৬৫ কোটি ২৮ লাখ ৬০ হাজার টাকা। দুই বার সংশোধনের পর বর্তমানে ব্যয় ধরা হয়েছে ২ হাজার ৪২৬ কোটি ১৪ লাখ ৯৫ হাজার টাকা। এর মধ্যে বাংলাদেশ সরকার ১ হাজার ৭২০ কোটি ১১ লাখ ৮০ হাজার ও জাইকার সহায়তা ৭০৬ কোটি টাকা।

ইতোমধ্যে প্রকল্পের বেশিরভাগ কাজ শেষ হয়েছে। ২০১৯ সালে এ প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা।

বাংলাদেশ সময়: ১৮১০ ঘণ্টা, জুলাই ১৩, ২০১৯
এসইউ/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।