ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

বন্দরে জমলো ৪৪ হাজারের বেশি কনটেইনার

আল রাহমান, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৫২ ঘণ্টা, জুলাই ১১, ২০১৯
বন্দরে জমলো ৪৪ হাজারের বেশি কনটেইনার বন্দরে জমলো ৪৪ হাজারের বেশি কনটেইনার

চট্টগ্রাম: দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দরে আমদানি, রফতানি, নিলামযোগ্য পণ্যভর্তি ও খালি কনটেইনারের জটের শঙ্কা বাড়ছে। ২০ ফুট দীর্ঘ হিসেবে (টিইইউ’স) ৪৯ হাজার ১৮টি কনটেইনারের ধারণক্ষমতার বিপরীতে বুধবার (১০ জুলাই) সকাল আটটায় বন্দরে কনটেইনার ছিল ৪৪ হাজার ২৬১টি।

বাজেটোত্তর শুল্কহার বৃদ্ধির কারণে আমদানিকারকদের কিছু পণ্য খালাসে ধীরগতি, নগরে সপ্তাহজুড়ে টানা বৃষ্টি, ভয়াবহ জলাবদ্ধতা, তীব্র যানজট, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড সফটওয়্যারের আপগ্রেডেশন, হ্যান্ডলিং ইক্যুইপমেন্ট নষ্ট থাকার কারণে কনটেইনার ডেলিভারি কমে গেছে। ফুল কনটেইনার লোড (এফসিএল) কনটেইনার সরাসরি বিভিন্ন ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপো (আইসিডি) বা কারখানায় ডেলিভারি নিলেও বন্দরের বিভিন্ন শেড বা ইয়ার্ডে কনটেইনার খুলে ট্রাকে ডেলিভারি নেওয়া প্রায় বন্ধ ছিল বৃষ্টির সময়।

বন্দরের ৪ নম্বর গেট, ডেপুটি ট্রাফিক ম্যানেজারের (অপারেশন)কার্যালয়ের সড়কসহ নিচু জেটি ও ইয়ার্ড এলাকায় এবার হাঁটুপানি জমে যায়।  

বৈরী আবহাওয়াতে বন্দরের বহির্নোঙরে (বঙ্গোপসাগরে) বড় জাহাজের পাশে বেঁধে ছোট জাহাজে খোলা পণ্য খালাস (লাইটারিং) বন্ধ থাকলেও জেটি বা বার্থে কনটেইনার হ্যান্ডলিং স্বাভাবিক ছিল।

বন্দরের পরিবহন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বুধবার সকাল আটটা পর্যন্ত আগে ২৪ ঘণ্টায় বন্দরে হ্যান্ডলিং হয়েছে ৭ হাজার ৩৯ কনটেইনার। এর মধ্যে আমদানি পণ্যবাহী কনটেইনার জাহাজ থেকে নামানো হয়েছে ৪ হাজার ৩৮২টি। বাতি ২ হাজার ৬৫৭টি কনটেইনার জাহাজে তোলা হয়েছে। এ সময় ডেলিভারি হয়েছে ৪ হাজার ১১৯টি। আগের দিন মঙ্গলবার (৯ জুলাই) ডেলিভারি হয় ৩ হাজার ৭৩৪টি। বর্তমানে জেটিতে ১০টি কনটেইনার জাহাজে হ্যান্ডলিং কাজ চলছে। বহির্নোঙরে অপেক্ষমাণ রয়েছে ১২টি কনটেইনার জাহাজ।

বাংলাদেশ ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপো অ্যাসোসিয়েশনের (বিকডা) মহাসচিব রুহুল আমিন সিকদার বাংলানিউজকে বলেন, বুধবার বন্দর সূত্রে জানতে পেরেছি অফডকমুখী সাড়ে ৪ হাজার টিইইউ’স কনটেইনার বন্দরে জমে আছে। বন্দরের ২৫ কিলোমিটারের মধ্যে ১৯টি অফডকে ৩৭ আইটেমের আমদানি পণ্যভর্তি কনটেইনারগুলো নিয়ে যেতে হবে। পাশাপাশি তৈরি পোশাকসহ রফতানি পণ্যভর্তি কনটেইনার বন্দরে শিপমেন্টের জন্য পৌঁছাতে হবে। কিন্তু জলাবদ্ধতা, তীব্র যানজট আর অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড আপগ্রেডেশনের কারণে কিছুটা হিমশিম খেতে হচ্ছে।

তিনি বলেন, পোর্ট কানেকটিং রোডে একপাশে যান চলাচল বন্ধ রাখায় যেমন সমস্যা হচ্ছে তেমনি ফৌজদারহাট থেকে বন্দর পর্যন্ত টোল রোড দুই লেনের হওয়াতে সমস্যা হচ্ছে।

একজন বন্দর ব্যবহারকারী বাংলানিউজকে বলেন, প্রকৃতি প্রদত্ত কর্ণফুলী চ্যানেলের ওপর চট্টগ্রাম বন্দর গড়ে উঠেছে। বন্দরের সক্ষমতা বাড়াতে সরকার, বন্দর কর্তৃপক্ষ, কাস্টম হাউস কর্তৃপক্ষ, বন্দর ব্যবহারকারী, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট থেকে শুরু করে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে আন্তরিকভাবে কাজ করতে হবে।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল জুলফিকার আজিজ বাংলানিউজকে বলেন, বন্দরে কনটেইনার জট হওয়ার শঙ্কা নেই। নতুন ইয়ার্ড সম্প্রসারণ করায় প্রকৃতপক্ষে আমাদের কনটেইনার ধারণক্ষমতা ৫৫ হাজার টিইইউসের বেশি। নতুন চারটি কিগ্যান্ট্রি ক্রেন চীন থেকে শিপমেন্ট হয়ে গেছে। আশাকরি চলতি মাসে বন্দরে পৌঁছাবে। বৈরী আবহাওয়া ও বৃষ্টির কারণে এলসিএল কনটেইনার ইয়ার্ডে খুলে ট্রাকে ডেলিভারিতে কিছুটা সমস্যা ছিল। নিলামযোগ্য কনটেইনার দ্রুত খালি করার জন্য তাগাদা দিয়েছি।  আমাদের পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল (পিসিটি) অপারেশনে গেলে, নতুন গ্যান্ট্রি ক্রেন চারটি যুক্ত হলে বন্দরের প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে সক্ষম হবো।      

বাংলাদেশ সময়: ২০৪৫ ঘণ্টা, জুলাই ১০, ২০১৯
এআর/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।