ঢাকা, শুক্রবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

গরম মসলার বাজারে অস্থিরতা, খুচরায় নেই নজরদারি

আল রাহমান, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪০২ ঘণ্টা, জুলাই ৮, ২০১৯
গরম মসলার বাজারে অস্থিরতা, খুচরায় নেই নজরদারি ফাইল ফটো

চট্টগ্রাম: কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে সরগরম হয়ে উঠেছে খাতুনগঞ্জের পাইকারি গরম মসলার বাজার। কয়েক মাস ধরে ক্রমে বাড়ানো হয়েছে এলাচি, দারচিনি, চিকন জিরাসহ বেশ কিছু মসলার দাম। খুচরা বাজারে নেই নজরদারি।

আমদানিকারক ও পাইকারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বর্তমানে আমেরিকার এলাচি আকার, রং ও মানভেদে ১ হাজার ৮০০ থেকে ২ হাজার ৭০০ টাকা, চীন ও ভিয়েতনামের দারচিনি কেজি ৩২৫-৩৫০ টাকা, ভারতের চিকন জিরা ২৯৮ টাকা, তুর্কি চিকন জিরা ৩৬৫ টাকা, মিষ্টি জিরা ১০৫ টাকা, ইন্দোনেশিয়া ও শ্রীলংকার লবঙ্গ ৭৬০-৮০০ টাকা, কালো গোলমরিচ ৩৬৫ টাকা, সাদা গোলমরিচ ৫০০ টাকা, জায়ফল ৩৭০ টাকা, জত্রিক ২ হাজার ৪০০ টাকা, টক আলুবোখরা ২৬০ টাকা, চীনাবাদাম ৯৫ টাকা, কাঠবাদাম ৭৫০ টাকা, কাজুবাদাম ৮০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

ইলিয়াস মার্কেটের পালিত অ্যান্ড ব্রাদার্সের উত্তম পাল বাংলানিউজকে জানান, একসময় এলাচি ভারত থেকেও বাংলাদেশে আসতো।

এখন ভারতে বাংলাদেশের চেয়ে দাম বেশি। আমরা সবচেয়ে ভালোমানের যে বড় এলাচি বিক্রি করছি কেজি ২ হাজার ৭০০ টাকা, সেটি ভারতে বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার ১০০ রুপি।
এটাই হচ্ছে বাস্তবতা।

তিনি জানান, চীনা দারচিনির প্রতি কার্টনে থাকে ২৫ কেজি। ভিয়েতনামের দারচিনির কার্টনে থাকে ১০ কেজি।

ফাইল ফটো। একই মার্কেটের জেএইচ ট্রেডার্সের একজন ব্যবসায়ী জানান, গরম মসলা লাক্সারি আইটেম। কোরবানিতে চাহিদা বাড়লেও মেজবান, বিয়ে, হোটেল-রেস্টুরেন্টসহ সারা বছরই ঘরে ঘরে চাহিদা থাকে। আগস্টের দ্বিতীয় সপ্তাহে কোরবান হলে জুলাই মাসজুড়ে গরম মসলার পাইকারি বাজার সরগরম থাকবে।

মেসার্স খান অ্যান্ড ব্রাদার্সের আড়তে দেশি গোটা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ১১৫-১৪৫ টাকা, ভারত থেকে আমদানি করা এলসি মরিচ ১৫৫-১৮০ টাকা, দেশি গোটা ধনিয়া ৭২-৮০ টাকা, দেশি হলুদ ৮২-৯৫ টাকা, আমদানি করা এলসি হলুদ ৯৭-৯৮ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

মেসার্স নূর ট্রেডার্সের আড়তে এলসি মরিচ ১৫২-১৫৫ টাকা, বগুড়ার মরিচ ১১২-১১৪ টাকা, এলসি হলুদ ৯৮-১০০ টাকা, পার্বত্য চট্টগ্রামের হলুদ ৮৮-৯০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে, কোরবানির অত্যাবশ্যকীয় উপকরণ পেঁয়াজ, রসুন ও আদার বাজারে ঊর্ধ্বগতি দেখা গেছে। বাদশা মার্কেটের মেসার্স পটিয়া স্টোরের ম্যানেজার জানান, গত সপ্তাহের চেয়ে ৫-৭ টাকা বেড়ে ভারতের প্রতিকেজি নাসিক পেঁয়াজ সাড়ে ৩১ থেকে ৩২ টাকা, ছোট আকারের কানপুর বা ইন্দুরি পেঁয়াজ ২২ টাকা বিক্রি হচ্ছে।

ফাইল ফটো। তিনি জানান, ভারতের রফতানি নীতি, উৎপাদন ও সরবরাহের ওপর দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম ওঠানামা করে। পচনশীল পণ্য হওয়ায় পেঁয়াজ মজুদের সুযোগ নেই। গত রমজানের ঈদের সময় পাইকারিতে ২৮ টাকা পর্যন্ত উঠেছিল পেঁয়াজ। এক সপ্তাহেই তা কমে দাঁড়িয়েছিল ২০ টাকায়।

চীন থেকে আমদানি করা আদা বিক্রি হচ্ছে কেজি ১০৫ টাকা, রসুন ১২১ টাকা। হাটহাজারীর মরিচ, দেশি পেঁয়াজ, রসুন ও আদা পাইকারি বাজারে নেই বললেই চলে।

কোরবানির আগেই খুচরা মসলার বাজারে নজরদারির দাবি জানিয়েছেন কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি এসএম নাজের হোসাইন।

তিনি বাংলানিউজকে বলেন, গরম মসলায় খুচরা ক্রেতারা প্রতিনিয়ত ঠকছেন। এলাচিসহ দামি মসলাগুলো অনেক সময় দ্বিগুণ দামে বিক্রি করেন খুচরা বিক্রেতারা। তাই নজরদারি বাড়াতে হবে প্রশাসনের।

বাংলাদেশ সময়: ১০০০ ঘণ্টা, জুলাই ০৮, ২০১৯
এআর/এসি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।