তারা মনে করেন, এত দিন ঢেউটিন সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে ছিলো। দিন দিন চাহিদা বাড়ায় শতভাগ আমদানিনির্ভর কাঁচামাল দিয়েও শিল্পটি বিকাশ লাভ করে।
ঢেউটিন (সিআই শিট) উৎপাদন ও সরবরাহ পর্যায়ে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ট্যারিফ মূল্যের ওপর ১৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) প্রযোগ্য ছিলো। বর্তমান ঘোষিত (২০১৯-২০) বাজেটে এ ট্যারিফ মূল্য প্রত্যাহার করে সরবরাহ মূল্যের ওপর ৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করা হয়েছে।
আগামী ১ জুলাই থেকে নতুন ভ্যাট আইন ২০১২ কার্যকর হচ্ছে। তবে অর্থ আইন অনুযায়ী, ভ্যাট আইনে আমদানি পর্যায়ে কর আদায় কার্যকর হয় বাজেট ঘোষণার পর। গত ১৩ জুন বাজেট ঘোষণার পর আমদানি পর্যায়ে ৫ শতাংশ আগাম কর দিতে হচ্ছে। এতে স্থানীয় শিল্পের চলতি মূলধনে (ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল) নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। এর ফলে অনেক শিল্প কারখানা রুগণ হয়ে পড়বে।
উদ্যোক্তারা জানান, ঢেউটিন একসময় ছিল আমদানিনির্ভর পণ্য। তবে দেশি উদ্যোক্তারা কারখানা স্থাপন করে উৎপাদন শুরু করায় তা এখন দেশি পণ্য হিসেবে পরিচিতি পাচ্ছে। তবে দেশে উৎপাদন হলেও ঢেউটিন শিল্পের কাঁচামাল সম্পূর্ণ আমদানি নির্ভর। তাই আমদানি পর্যায়ে দেওয়া ৫ শতাংশ অগ্রীম আয়কর রেয়াত সুবিধা না থাকলে বিক্রয় ক্ষেত্রে করপূর্ব নিট মুনাফা প্রায় ১৫ শতাংশ থাকতে হবে।
এ খাতের উদ্যোক্তাদের আশঙ্কা, মূল্য নির্ধারণ বাজার সহায়ক না হলে উৎপাদন এবং বিক্রি কমে যাবে। এর ফলে শিল্পের স্থিতিশীলতা ও সক্ষমতা কমে যাবে। আবার ঢেউটিন ব্যবহার বেশি হয় গ্রামাঞ্চলে। গ্রামে নতুন ঘরবাড়ি তৈরিতে সাধারণ মানুষের ওপর চাপ পড়বে।
দেশের শীর্ষস্থানীয় ঢেউটিন (সিআই সিট) উৎপাদনকারী একাধিক শিল্পপ্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা বলেছেন, প্রস্তাবিত বাজেটে এ খাতে যে হারে ভ্যাট ও আয়কর আরোপ করা হয়েছে তাতে শিল্পের অস্তিত্ব হুমকিতে পড়বে। প্রতিটন ঢেউটিনের দাম বাড়বে প্রায় ৬ হাজার টাকার বেশি। করের কারণে বেশি মূল্যবৃদ্ধির ফলে ক্রেতারা ঢেউটিন কিনতে নিরুৎসাহিত হবেন।
বর্তমানে দেশে ৯টি শিল্পপ্রতিষ্ঠান ঢেউটিন উৎপাদন করে। এরমধ্যে সাধারণ ঢেউটিন থেকে শুরু করে রঙিন ঢেউটিনের কারখানাও রয়েছে। চাহিদা মিটিয়ে এসব প্রতিষ্ঠান বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ঢেউটিন রফতানিও করে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৪০ ঘণ্টা, জুন ২৬, ২০১৯
এআর/টিসি