১৯৯৩ সালের ৮ অক্টোবর যাত্রা শুরু হওয়া দেশের প্রথম এ আবৃত্তি স্কুলের সদস্যরা মনে করছেন প্রোজ্জ্বল পঞ্চাশ আবর্তনের শিক্ষার্থীরা বোধন-ইতিহাসের এক দীপ্তময় সময়ের অংশীদার হয়ে থাকবে অনন্তকাল। আর তাই এ আবর্তনের শেষটা স্মরণীয়-বরণীয় করতে ছিল দীর্ঘদিনের পরিকল্পনা।
‘অন্তর মম বিকশিত করো অন্তরতর হে’-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতার বৃন্দ পরিবেশনা দিয়ে শুরু হয় আয়োজন।
বক্তারা বলেন, সংস্কৃতি সচেতন মানুষই পারে মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ গড়ার অন্যতম কারিগর হতে। আর সেই চেতনায় বোধন পথ চলছে অবিরত। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে লালন করে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বিনির্মাণের স্বপ্ন নিয়ে বোধন আবৃত্তি স্কুলের পথচলা অব্যাহত থাকবে।
একক পরিবেশনায় অংশ নেন মাসুম বিল্লাহ আরিফ (চবি আবৃত্তি মঞ্চ), মেজবাহ চৌধুরী (সন্দীপনা), সেলিম রেজা সাগর (কণ্ঠনীড়), বৃষ্টি পুরোহিত (শব্দনোঙর), সেলিম ভুঁইয়া (স্বদেশ), শুভাশীষ শুভ (অযান্ত্রিক), সাইদুল করিম সাজু (বর্ণ), রণধীর দে (একুশ),বোধনের আবৃত্তিশিল্পী পুনম দাশ, অনন্যা পাল, অর্পিতা দাশ।
উপস্থাপনায় ছিলেন গৌতম চৌধুরী, সকাল শুভ ও অজান্তা টুম্পা।
উৎসবের দ্বিতীয় দিন ছিল সমাবর্তন শোভাযা্ত্রা। টিআইসি থেকে রঙিন এ শোভাযাত্রা আঁধার ভেঙে আলোর বুননের দীপ্ত উচ্চারণ হিসেবেই প্রদক্ষিণ করে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক। ঢোলের তালে একদল স্বপ্নবান মানুষ এ জনপদে বাংলাভাষার সঠিক রূপটিকে এগিয়ে যাওয়ার এক অমোঘ সত্যকে ধারণ করে এগিয়েছে।
সন্ধ্যে সাড়ে ছয়টায় টিআইসি মিলনায়তনে শুরু হয় দ্বিতীয় দিনের আয়োজন। সমাবর্তন অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন বিশিষ্ট সাংবাদিক বিশ্বজিৎ চৌধুরী, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের শিক্ষা বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতি নাজমুল হক ডিউক, বোধন আবৃত্তি পরিষদের উপদেষ্টা দীপ্তি রক্ষিত, বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক রাশেদ হাসান, অনুষ্ঠান সম্পাদক মনির হোসেন, ঢাকা বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহসান উল্লাহ তমাল, চট্টগ্রাম সম্মিলিত আবৃত্তি জোটের সাধারণ সম্পাদক মসরুর হোসেন প্রমুখ। কথামালার এই আয়োজনে সভাপতিত্ব করেন বোধন আবৃত্তি পরিষদের সভাপতি সোহেল আনোয়ার।
অনুষ্ঠানে সদ্য আবর্তন শেষ করা শিক্ষার্থীদের হাতে অভিজ্ঞানপত্র তুলে দেওয়া হয়।
এরপর বোধন আবৃত্তি স্কুলের নবীন শিল্পীরা আবৃত্তি পরিবেশন করে। আবৃত্তি পরিবেশন করেন ঢাকা স্বরব্যঞ্জনের দীপক ঘোষ, ত্রিতরঙ্গের দেবাশীষ রুদ্র, স্বরনন্দনের সুমন বিশ্বাস, অঙ্গন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শারমিন মুসতারি, স্বপ্নযাত্রীর ইয়াসির সিলমী এবং বোধনের শান্তুনু মিত্র, মুক্তা বড়ুয়া ও অর্পিতা চৌধুরী। দ্বিতীয় দিনের অনুষ্ঠান উপস্থাপনায় ছিলেন মৃন্ময় বিশ্বাস, শিশির বড়ুয়া এবং ঊর্মি দেবী।
এবারের আয়োজন উৎসর্গ করা হয়েছে বোধনের প্রাণপুরুষ বরেণ্য আবৃত্তিশিল্পী রণজিৎ রক্ষিতকে।
বাংলাদেশ সময়: ২২০০ ঘণ্টা, জুন ১৪, ২০১৯
টিসি