বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) জাতীয় সংসদে বাজেট উত্থাপনের পর সিসিসিআই’র পরিচালকদের পক্ষে তিনি তাৎক্ষণিক বাজেট প্রতিক্রিয়া দেন।
তিনি বলেন, এসএমই খাতের উন্নয়ন, নারী উদ্যোক্তা সৃষ্টি, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ ও রাজস্ব আহরণের আওতা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখবে প্রস্তাবিত বাজেট।
ব্যক্তিগত করমুক্ত সীমা বাড়ানোর দাবি
চেম্বার সহ-সভাপতি বলেন, ব্যক্তিগত করমুক্ত সীমা গত ৪ বছর ধরে অপরিবর্তিত রয়েছে। আমরা এই সীমা বাড়ানোর দাবি জানাচ্ছি। ঠিকাদারি ও সরবরাহ বিলে উৎসে কর হ্রাস করা হয়েছে, অগ্রীম কর প্রদানের ক্ষেত্রে সীমা ৪ লাখ থেকে ৬ লাখ টাকা এবং এসএমই খাতে টার্নওভার ৩৬ লাখ থেকে ৫০ লাখে উন্নীত করা হয়েছে যা ইতিবাচক। হস্তশিল্প রফতানিকে করমুক্ত রাখার সময়সীমা ৫ বছর বাড়ানো হয়েছে। তৈরিপোশাক শিল্পে কমানো করহার সুবিধা অব্যাহত রাখা দেশের প্রধান রফতানি খাতকে উৎসাহিত করবে। এছাড়া সারচার্জের ক্ষেত্রে ২ কোটি ২৫ লাখ টাকার সীমা ৩ কোটি টাকা পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। দেশীয় কৃষি যন্ত্রপাতি, আসবাবপত্র, চামড়াজাত পণ্য, গৃহস্থালি পণ্য ইত্যাদি কর অবকাশ সুবিধা প্রদানের প্রস্তাব করা হয়েছে। পুঁজিবাজারে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের সুবিধার্থে ডিভিডেন্ড হতে আয়ের করমুক্ত সীমা ২৫ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধি করা, স্টক ডিভিডেন্ডের পরিবর্তে ক্যাশ ডিভিডেন্ডকে উৎসাহিত করার জন্য স্টক ডিভিডেন্ডের ওপর ১৫ শতাংশ কর প্রদান পুঁজি বাজার উন্নয়নে সহায়ক হবে।
নতুন ভ্যাট আইনে নিবন্ধন, তালিকাভুক্তি, রিটার্ন দাখিল, কর পরিশোধ ইত্যাদি অনলাইনে সম্পাদনের সুযোগ রাখা হয়েছে। তবে এক্ষেত্রে বিদ্যমান মূল্য ঘোষণা পদ্ধতির পরিবর্তে বিনিময় বা ন্যায্য বাজার মূল্যের ভিত্তিতে কর পরিশোধের যে ব্যবস্থা রাখা হয়েছে তার সুনির্দিষ্ট ব্যাখ্যা প্রয়োজন। এ আইনে ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত টার্নওভারে মূসক অব্যাহতি ও মূসক নিবন্ধন সীমা ৮০ লাখ টাকা থেকে ৩ কোটি টাকা করা এবং স্থানীয় ব্যবসায়ী পর্যায়ে ৫ শতাংশ মূসক হার ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক ব্যবসায়ীদের জন্য সহায়ক হবে। তবে ইলেকট্রনিক ফিসকেল ডিভাইস এবং সেলস ডাটা কন্ট্রোলার স্থাপন বাধ্যতামূলক করার বিষয় পুনর্বিবেচনা করা প্রয়োজন কারণ আমাদের দেশের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা এখনো ততটা প্রস্তুত নয়।
তিনি বলেন, নারী উদ্যোক্তা পরিচালিত শো রুমের ক্ষেত্রে মূসক অব্যাহতি অর্থনীতিতে তাদের সম্পৃক্ততা উৎসাহিত করবে। স্মার্ট ফোনের আমদানি শুল্ক বৃদ্ধি করা ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। ওষুধ শিল্পে ব্যবহৃত কাঁচামালের শুল্ক রেয়াত সুবিধা এবং মেডিকেল গ্যাস প্রস্তুতকারী কাঁচামালের ওপর ডিউটি হ্রাস করায় সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় কমবে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় বজ্রপাত প্রতিরক্ষাসামগ্রী আমদানি শুল্ক হ্রাস করা হয়েছে। শিল্প খাতে আমদানিকৃত নমুনা দ্রুত ছাড়করণের ক্ষেত্রে ডিমিনিমাস বিধিমালা সহায়ক হবে।
এছাড়া স্বর্ণ আমদানিতে শুল্ক হ্রাস করা কালোবাজারি রোধ এবং রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধি করবে। দেশীয় শিল্প রেফ্রিজারেটর, এয়ারকন্ডিশন ইত্যাদিতে মূসক অব্যাহতি বহাল রাখা এসব শিল্পের সম্প্রসারণে ভূমিকা রাখবে বলে আমরা মনে করি।
চেম্বার সহ-সভাপতি গণপরিবহন ছাড়া ব্যক্তি মালিকানাধীন গাড়ীর ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহারের আহ্বান জানান।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৫১ ঘণ্টা, জুন ১৩, ২০১৯
এআর/টিসি