ওয়াটারওয়েজ শিপিং লিমিটেড নামের একটি সিঅ্যান্ডএফ প্রতিষ্ঠান চালানগুলো খালাসের দায়িত্বে ছিল। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে চালানগুলো খালাস করা হলেও বিষয়টি কাস্টমস কর্মকর্তাদের নজরে আসে অন্তত ৫ মাস পর।
দেশের আমদানি-রফতানির সব তথ্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড সফটওয়্যারে সংরক্ষিত থাকলেও আলোচ্য ৯টি চালানের বিষয়ে তথ্য নেই বলে জানিয়েছে একটি সূত্র। ধারণা করা হচ্ছে-সংঘবদ্ধ চক্র এক্ষেত্রে শুধু সরকারের রাজস্বই ফাঁকি দেয়নি একই সঙ্গে কী পণ্য এসেছিল এসব চালানে সে ব্যাপারেও কাস্টমস কর্তৃপক্ষকে অন্ধকারে রাখা হয়েছে।
৯টি চালানের অভ্যন্তরীণ তদন্ত প্রতিবেদন গত ১২ মে জমা দিয়েছেন বিমানবন্দর কাস্টমসের ডেপুটি কমিশনার মো. নূর উদ্দিন মিলন। যাতে তিনি জালিয়াতির মাধ্যমে কার্গো হল থেকে পণ্য ছাড় করায় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি বলে মন্তব্য করেন।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মো. নূর উদ্দিন মিলন বাংলানিউজকে বলেন, প্রাথমিকভাবে ৯টি চালানের ব্যাপারে অভ্যন্তরীণ তদন্ত করেছি আমরা। এটিকে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত প্রতিবেদন বলা যাবে না। এক্ষেত্রে আমরা দেখেছি এসব চালানের অ্যাসেসমেন্ট বা শুল্কায়ন হয়নি। তাই সুস্পষ্ট যে ব্যাংকে রাজস্ব জমা পড়েনি। কিন্তু এটা সত্য যে এসব চালানের বিপরীতে পণ্য নেই, খালাস নিয়ে গেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন কাস্টমস কর্মকর্তা বাংলানিউজকে বলেন, বিমানবন্দরের মতো গুরুত্বপূর্ণ একটি জায়গায় সরকারের রাজস্ব ফাঁকি ও আইনকে বৃদ্ধাঙুলি দেখিয়ে পণ্য খালাসে কারা জড়িত তা চিহ্নিত করা জরুরি। হতে পারে সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট, কাস্টম হাউসের কর্মকর্তা-কর্মচারী, সিভিল এভিয়েশনসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর অসাধু সদস্যরা জড়িত। এর সঙ্গে শুধু রাজস্ব নয়, ভাবমূর্তি, জাতীয় নিরাপত্তাসহ অনেক বিষয় জড়িত।
যোগাযোগ করলে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কমিশনার মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, প্রথম কথা হচ্ছে আইন ও বিধি বহির্ভূত কোনো কাজের ব্যাপারে আমি জিরো টলারেন্স নীতি নিয়েছি। কঠোর ব্যবস্থা নেবো। বিষয়টি আমি যোগদানের পর রীতিমতো সভা করে কাস্টম হাউসের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের নেতাদের জানিয়ে দিয়েছি।
তিনি বলেন, লিগ্যাল ওয়েতে যদি কোনো পণ্য চালান খালাস না হয় তবে তার মধ্যে দেশের নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ ও বেআইনি পণ্য ছিল এমন ধারণা করাটা স্বাভাবিক। চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দর দিয়ে যে ৯টি চালান বেআইনিভাবে খালাস হয়েছে সে ব্যাপারে আগের কমিশনারের মৌখিক নির্দেশে কাস্টম হাউসের একজন রাজস্ব কর্মকর্তা ও ডেপুটি কমিশনার খতিয়ে দেখেছেন। সেই প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের নির্দেশনা অনুযায়ী অধিকতর তদন্তসহ এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২২১৫ ঘণ্টা, জুন ১০, ২০১৯
এআর/টিসি