ঢাকা, শুক্রবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনার ডেলিভারি ক্রমে বাড়ছে

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১২২ ঘণ্টা, জুন ৯, ২০১৯
 চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনার ডেলিভারি ক্রমে বাড়ছে চট্টগ্রাম বন্দরের কনটেইনার টার্মিনাল

চট্টগ্রাম: ঈদের পর দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দরে ক্রমে বাড়ছে আমদানি পণ্যভর্তি কনটেইনার ডেলিভারির সংখ্যা। বৃহস্পতিবার (৬ জুন) ২৪ ঘণ্টায় ২০ ফুট দীর্ঘ হিসেবে (টিইইউ’স) কনটেইনার ডেলিভারি হয়েছিল মাত্র ৩৪৪টি। পরদিন শুক্রবার তা বেড়ে দাঁড়ায় ৭৯১টি। শনিবার (৮ জুন) ছিল ৯৯১টি।

তবে স্বাভাবিক সময়ে প্রতিদিন ৩ থেকে সাড়ে ৪ হাজার কনটেইনার ডেলিভারি হয় চট্টগ্রাম বন্দর থেকে। ঈদের ছুটিতে আমদানিকারকদের কনটেইনার সরবরাহ নিতে অনাগ্রহ, মহাসড়কে পণ্যবাহী গাড়ি চলাচলে নিষেধাজ্ঞা, কারখানার শ্রমিকদের লম্বা ছুটি, ট্রাক-কাভার্ডভ্যানচালকদের গ্রামের বাড়িতে ঈদ উদযাপনসহ নানা কারণে কনটেইনার ডেলিভারিতে ধস নামে।

সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাজী মাহমুদ ইমাম বিলু বাংলানিউজকে বলেন, সরকারি ছুটি শেষে পুরোদমে ব্যবসা-বাণিজ্য-উৎপাদন শুরু হবে রোববার (৯ জুন)। এটা ঠিক বন্দরে জাহাজ থেকে পণ্য লোড-আনলোড স্বাভাবিক ছিল।

কিন্তু আমদানিকারকেরা পণ্য ডেলিভারি নেননি কিংবা নিতে পারেননি। মহাসড়কে পণ্যবাহী গাড়ি চলাচলে নিষেধাজ্ঞা, কারখানার শ্রমিকদের টানা ছুটি, কাস্টম হাউসে রাজস্ব জমা দিয়ে ছাড়পত্র না নেওয়া ইত্যাদি অনেক কারণ রয়েছে। আশাকরি, দুই-তিন দিন লেগে যাবে বন্দরের ডেলিভারি স্বাভাবিক হতে।

এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, রোববার (৯ জুন) আমি কর্ণফুলী ইপিজেডের পার্টির জন্য ১৮ কনটেইনার ডেলিভারি নেওয়ার জন্য রাজস্ব জমাসহ আনুষঙ্গিক প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি ঈদের আগেই। কিন্তু এখন পণ্যবাহী গাড়িচালকের সংকট দেখা দিয়েছে। তারা ঈদ করতে গ্রামের বাড়ি গেছেন, এখনো ফেরেননি।

বাংলাদেশ ফ্রেইট ফরওয়ার্ডার্স অ্যাসোসিয়েশেনের পরিচালক খায়রুল আলম সুজন বাংলানিউজকে বলেন, প্রতিদিন যেখানে ৩ হাজারের বেশি কনটেইনার ডেলিভারি হতো সেখানে ঈদের ছুটিতে তা ব্যাহত হয়েছে। কারণ ডেলিভারি চাহিদা কমেছিল নানা কারণে। স্বাভাবিকভাবে জাহাজ থেকে যেসব কনটেইনার নেমেছে সেগুলো এবং আগে থাকা কনটেইনার মিলে ছোটখাটো জটের সৃষ্টি হতে পারে। ছিল ঘূর্ণিঝড় ফণীর কারণে বন্দরে অপারেশন বন্ধের রেশও। এখনো বহির্নোঙরে অপেক্ষমাণ আছে এক ডজনের বেশি কনটেইনারবাহী জাহাজ। আশাকরি, বন্দর কর্তৃপক্ষের সুব্যবস্থাপনায় বিষয়টি সামাল দেওয়া যাবে।   

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক বাংলানিউজকে বলেন, ঈদের ছুটিতে বন্দর থেকে আমদানি পণ্যভর্তি কনটেইনার ডেলিভারি নেওয়ার চাহিদা কমলেও জাহাজ থেকে কনটেইনার লোড-আনলোড পুরোদমে চলেছে। অতীতের অভিজ্ঞতার আলোকে বন্দরের ইয়ার্ড সম্প্রসারণ করে কনটেইনার ধারণক্ষমতা বাড়ানোর কারণে জটের সৃষ্টি হয়নি। বেসরকারি ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপোগুলোর (আইসিডি) কনটেইনার নিয়ে গেলে বন্দরের পরিচালন ক্ষমতা আরও বেড়ে যাবে।

তিনি জানান, আগামী ২-৩ দিনের মধ্যে বন্দরে কনটেইনার ডেলিভারি স্বাভাবিক হয়ে যাবে।

বন্দরের পরিবহন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, শনিবার (৮ জুন) সকাল আটটা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় কনটেইনার হ্যান্ডলিং হয়েছে ৭ হাজার ৭৭৩টি। এর মধ্যে আমদানি পণ্যভর্তি কনটেইনার রিসিভ করা হয়েছে ২ হাজার ৫৮৫টি, জাহাজে তোলা হয়েছে ৫ হাজার ১৮৮টি। এ সময় বহির্নোঙরে অপেক্ষমাণ ছিল ১৭টি কনটেইনারবাহী জাহাজ।  

বন্দরে ৪৯ হাজার ১৮ টিইইউ’স কনটেইনার ধারণক্ষমতার বিপরীতে কনটেইনার ছিল ৪০ হাজার ৭৭ টিইইউ’স। এর মধ্যে ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত ছিল আইসিডি (লোড) খাতে ৯৮৭টি। এফসিএল (অফডক) খাতে কনটেইনার রাখার জায়গা নির্দিষ্ট না থাকলেও জমেছিল ৩ হাজার ১৮৭টি।

অন্যদিকে এফসিএল (ড্রাই) খাতে ৩৩ হাজার ২৪৮টি ধারণক্ষমতার বিপরীতে ছিল ৩২ হাজার ২৭৩টি। অন্যদিকে রফতানি পণ্যভর্তি কনটেইনার ছিল মাত্র ১৪৯টি।

রাত পৌনে ৯টায় বন্দরের জিসিবি, জিএসআই, সিসিটি, এনসিটি বার্থে কনটেইনারবাহী ১৩টি জাহাজে লোড-আনলোডের কাজ চলে।    

>>ঘূর্ণিঝড় ফণী: জাহাজশূন্য করা হলো চট্টগ্রাম বন্দর জেটি

বাংলাদেশ সময়: ২১১৬ ঘণ্টা, জুন ০৮, ২০১৯
এআর/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।