ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

কৃষক থেকে ধান ক্রয়ের উৎসব

নিউজরুম এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫৩ ঘণ্টা, মে ২৭, ২০১৯
কৃষক থেকে ধান ক্রয়ের উৎসব

চট্টগ্রাম: চলতি মৌসুমে চট্টগ্রাম কৃষি অঞ্চলে আমন ও বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ধানের মূল্য নিশ্চিত করতে সরকার কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি ২৬ টাকা কেজি দরে ধান ক্রয় কার্যক্রম শুরু করেছে। মে থেকে আগষ্ট মাস পর্যন্ত উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে চলবে এ কর্মসূচি।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, চট্টগ্রাম অঞ্চলের পাঁচ জেলায় এ মৌসুমে ৫ লাখ ৫৪ হাজার ৮১ হেক্টর জমিতে আমন আবাদ হয়। ফলন হয়েছে প্রায় সাড়ে ১৫ লাখ টন।

চট্টগ্রাম জেলায় মোট ১ লাখ ৭৮ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে উৎপাদন হয়েছে ৫ লাখ ৫২২ টন ধান। এছাড়া চট্টগ্রামের ১৫ উপজেলায় ৬০ হাজার ৮৮৪ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের (হাইব্রিড ও উফশী)  চাষাবাদ হয়েছে।
উৎপাদন হয়েছে প্রায় ৩ লাখ মেট্রিক টন ধান।

কিন্তু উৎপাদন খরচ থেকে উৎপাদিত ফসলের বিক্রয় মূল্য কম হওয়ায় কৃষকরা হতাশ ছিলেন। তাদের কাছ থেকে সরাসরি ধান কেনা এবং ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতে সারাদেশের ন্যায় চট্টগ্রামেও মানববন্ধন-বিক্ষোভ করেন কৃষকরা। এজন্য সরকার কৃষকদের কাছ থেকে ধান ক্রয়ের উদ্যোগ নেয়।

মঙ্গলবার (২১ মে) মিরসরাইয়ে সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ধান সংগ্রহ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রুহুল আমিন। তিনি জানান, ৩১ আগস্ট পর্যন্ত পরিচয়পত্রধারী কৃষক ও চালকল থেকে ধান-চাল সংগ্রহ করা হবে। প্রতি কেজি ধান ২৬ টাকা, আতপ চাল ৩৫ টাকা এবং সেদ্ধ চাল কেনা হচ্ছে ৩৬ টাকায়।

হাটহাজারীতে  শুক্রবার (২৪ মে) ধান সংগ্রহ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রুহুল আমিন। এ উপজেলার কৃষকদের কাছ থেকে ১০৭ টন ধান ক্রয় করা হবে বলে জানান তিনি।

রাউজানে শনিবার (২৫ মে) ধান সংগ্রহ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জোনায়েদ কবির সোহাগ। কৃষকদের কাছ থেকে ৯৭ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহ করা হবে বলে তিনি জানান।

মঙ্গলবার (২১ মে) ফটিকছড়িতে ধান ক্রয় কার্যক্রম উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সায়েদুল আরেফিন। উপজেলায় ২৩৩ মেট্রিক টন ধান ক্রয় করার কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে।

রাঙ্গুনিয়ায় বুধবার (২২ মে) সকালে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে কৃষকদের কাছ থেকে ধান কিনে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাসুদুর রহমান। উপজেলায় ৩ হাজার ১৮৫ মেট্রিক টন চাল ও ২২০ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ জোবায়ের আহমেদ মঙ্গলবার (২১ মে) কর্মসূচির প্রথম দিনে উপজেলার হাইলধর ও শোলকাটা এলাকার ৬ কৃষকের বাড়ি গিয়ে কেজি প্রতি ২৬ টাকায় ১০ হাজার কেজি ধান কিনেন। তিনি বাংলানিউজকে জানান, কৃষক যাতে ধানের ন্যায্য দাম পায়- সেটি নিশ্চিত করতে সরাসরি ধান সংগ্রহ করার কর্মসূচি হাতে নিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। উপজেলায় ১৮৫ মেট্রিক টন ধান এবং ৯২৬ মেট্রিক টন চাল কৃষকের কাছ থেকে কেনা হবে।

এদিকে বস্তা সংকটের কারণে বোয়ালখালীতে ধান সংগ্রহ কার্যক্রম শুরু হয় দেরিতে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একরামুল ছিদ্দিক বাংলানিউজকে জানান, সংগ্রহ করা ধান গুদামজাত করার জন্য বস্তা আসার পর সোমবার (২৭ মে) ধান সংগ্রহ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। উপজেলার ২৫০ জন কৃষকের তালিকা পাওয়া গেছে। ৫৬ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

প্রশাসনের কর্মকর্তারা বলছেন, খাদ্য কর্মকর্তা, কৃষি কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টরা প্রয়োজনে কৃষকদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ধান কিনবেন। যাদের কাছ থেকে ধান কেনা হবে তাদেরকে প্রকৃত কৃষক হতে হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১২৫০ ঘণ্টা, মে ২৭, ২০১৯
এসি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।