ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

শেষ হলো চট্টগ্রামের প্রথম উন্মুক্ত বিতর্ক প্রতিযোগিতা

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৫১ ঘণ্টা, মে ২৬, ২০১৯
শেষ হলো চট্টগ্রামের প্রথম উন্মুক্ত বিতর্ক প্রতিযোগিতা ...

চট্টগ্রাম: বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের ছায়া অধিবেশনে প্রস্তাব উত্থাপিত হল, ‘বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য নবায়নযোগ্য জ্বালানির পরিবর্তে পারমাণবিক জ্বালানি ব্যবহার একটি ভুল সিদ্ধান্ত।’

প্রধানমন্ত্রী প্রস্তাবের পক্ষে নানাবিধ যুক্তি, প্রমাণ ও পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে দেখালেন বাংলাদেশের বিদ্যুতের চাহিদা মেটানোর জন্য বর্তমানে সরকার যা যা পদক্ষেপ নিয়েছে তা যথেষ্ট, নতুন করে পারমাণবিক শক্তির উপর নির্ভরশীল হওয়ার প্রয়োজন নেই।

অপরপক্ষে বিরোধীদল থেকে তীব্র বিরোধীতার ঝড় উঠে।

তদের ভাষ্য হল, বাংলাদেশের উন্নয়নের পথে যে গতি বজায় রেখেছে, সেটিকে আরও বেগবান ও শক্তিশালী করতে বিদ্যুতের কোন বিকল্প নেই। বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ রূপকল্প বাস্তবায়নের জন্য অন্যতম প্রধান হাতিয়ার হতে পারে পারমাণবিক বিদ্যুতের ব্যবহার।

চট্টগ্রামে প্রথম উন্মুক্ত বিতর্ক প্রতিযোগিতা ‘সেইলর দৃষ্টি চিটাগাং ওপেন’ এর ফাইনালে এভাবে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ একটি বিতর্ক উপভোগ করেন উপস্থিত দর্শকশ্রোতারা। এই বিতর্কে  মেহেদী, শান্ত ও সাঈদের সমন্বয়ে গঠিত সরকারী দলকে পরাজিত করে বিজয়ী হওয়ার গৌরব অর্জন করে নাসির, রাফিউল ও আইমানের সমন্বয়ে গঠিত বিরোধী দল।  

ফাইনাল বিতর্কে বিচারক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন বিতার্কিক সাইফুদ্দিন মুন্না, বিবি মরিয়ম মৌসুমি, কাজী আরফাত, জুনায়েদ মুফরাদ, নাজমুল হাসান জুন্নুন, আল মুকিতুল বারী, আশিক চৌধুরী ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও প্রাক্তন বিতার্কিক শামিমা আকতার জাহান পপি। বিতর্কের পুরো টুর্নামেন্ট জুড়ে অসাধারণ বিতর্ক উপহার দিয়ে টুর্নামেন্ট সেরা বিতার্কিক হন অর্জন ত্রিপুরা। ফাইনাল বিতর্কে শ্রেষ্ঠ বিতার্কিক হন বিরোধী দলনেতা আইমান ইসলাম সাইফার।

ফাইনাল প্রতিযোগিতা শেষে সমাপনি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন অর্থনীতিবিদ ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ। দৃষ্টি চট্টগ্রামের সভাপতি মাসুদ বকুলের সভাপতিত্বে এই অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষাবিদ ও সানশাইন  গ্রামার স্কুলের অধ্যক্ষ সাফিয়া গাজী রহমান, ব্যাংকার সাইফ চৌধুরী, সাংবাদিক নাসির উদ্দিন হায়দার ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. আদনান মান্নান।

অনুষ্ঠানের আরো বক্তব্য রাখেন দৃষ্টি চট্টগ্রামের সাবেক সভাপতি কশসাফুল হক শেহজাদ, সহ সভাপতি বনকুসুম বড়–য়া নুপুর, শহিদুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক সাবের শাহ, যুগ্ম সম্পাদক সাইফুদ্দিন মুন্না ও সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী আরফাত।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ তার বক্তব্যে যুক্তিনির্ভর বিতর্কের উপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, ‘জ্ঞাননির্ভর বিতর্ক পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর বিতর্ক।  আপনারা যারা বিতর্কের মত বাচিক শিল্পের সাথে জড়িত, তারা সবসময় চেষ্টা করবেন সৃজনশীলতা ও পরিশীলতা বজায় রেখে বিতর্ক করার।

শিক্ষাবিদ সাফিয়া গাজী রহমান বলেন, ‘গ্রহণযোগ্যতা একজন মানুষের অন্যতম বড় অর্জন। মানুষ তখনই গ্রহণযোগ্যতা পায় যখন সে সত্যবাদিতা ও ন্যায়পরায়ণতাকে ধারণ করে। ভালো কাজ করলে সবাই তাকে পছন্দ করে। তোমরা চেষ্টা করবে ভালো মানুষ হওয়ার, ভালো কাজ করার। তাহলেই তোমরা দেশ ও সমাজের জন্য গ্রহণযোগ্য নাগরিকে পরিণত হতে পারবে। ’

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আদনান মান্নান তার বক্তব্যে আব্দুল্লাহ আবু সায়ীদ স্যার এর উক্তিতে বলেন, “শুধু দৌড়ালে হবে না, থামতে জানতে হবে। শিরোপাকেন্দ্রিক মানসিকতা থেকে বেরিয়ে এসে বিতর্কের মাহাত্ম্য অনুধাবন করতে হবে। ’

অনুষ্ঠানের সভাপতি মাসুদ বকুল বলেন, ‘দৃষ্টি সবসময় নব আঙ্গিকে কিছু করার চেষ্টা করে, যার নিদর্শন হলো আজকের এই উন্মুক্ত বিতর্ক আয়োজন। আমরা চেষ্টা করছি সমাজকে আলোকিত প্রজন্ম উপহার দেয়ার। ’

দৃষ্টি চট্টগ্রামের আয়োজনে ও ইপিলিয়ন গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান সেইলর এর পৃষ্ঠপোষকতায় ‘সেইলর দৃষ্টি চিটাগাং ওপেন’ এ জাতীয় পর্যায়ের প্রাক্তন ও বর্তমান বিতার্কিকদের অংশগ্রহণে এ ধরণের উন্মুক্ত বিতর্ক প্রতিযোগিতা এই প্রথমবারের মত চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বাংলানিউজটোয়িন্টফোর.কম ও এশিয়ান টিভির সহযোগিতায় ২৪ মে থেকে শুরু হওয়া এই বিতর্ক প্রতিযোগিতায় জাতীয় পর্যায়ের ১৬ জন প্রাক্তন বিতার্কিক ও বর্তমানের বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৬ জন বিতার্কিকদের সমন্বয়য়ে ২৪টি দল অংশগ্রহণ করে।

প্রতিযোগিতায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েট, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ, জাহাঙ্গীর”গর বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়, ইউএসটিসি, ইষ্ট ডেল্টা বিশ্ববিদ্যালয়, সার্দান বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, আইআইইউসি, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ, পোর্ট সিটি ইন্টারন্যাশনাল বিশ্ববিদ্যালয়, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়, স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব টেক্সটাইলস, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ইষ্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি, নটরডেম কলেজ, মাওলানা ভাষানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম কলেজ, হাজী মুহাম্মদ মহসীন কলেজ, সরকারী সিটি কলেজ, সরকারী কমার্স কলেজ,  বাংলাদেশ নৌবাহিনী কলেজ এর মত নামকরা প্রতিষ্ঠানের প্রাক্তন ও বর্তমান বিতার্কিকরা এই প্রতিযোগিতায় বিতর্কযুদ্ধে লিপ্ত হয়। এই প্রতিযোগিতার প্রধান আকর্ষণ হচ্ছে ভিন্ন ভিন্ন প্রতিষ্ঠানের যেকোন তিনজন বিতার্কিকের সমন্বয়ে বিতর্ক দল গঠনের সুযোগ।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫১ ঘণ্টা, মে ২৬, ২০১৯

টিসি 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad