ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

ট্রেনের টিকিটের জন্য রাত জাগছেন তারা

জমির উদ্দিন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫৪৮ ঘণ্টা, মে ২৩, ২০১৯
ট্রেনের টিকিটের জন্য রাত জাগছেন তারা টিকিটের জন্য রাত জাগছেন তারা। ছবি: বাংলানিউজ

চট্টগ্রাম: প্যাকেটে খাবার নিয়ে এসেছেন সেহেরি খাওয়ার জন্য। সঙ্গে নিয়েছেন শুষ্ক খাবার আর পানিও। তখন রাত ১১টা। পটিয়া থেকে আসা শিপিং ইঞ্জিনিয়ার ওয়ালীউল্লাহ বিস্কুট খাওয়ার পর পানিতে এক চুমুক দিলেন। উপরের দিকে তাকিয়ে তিনি তিনটি প্রশ্নবোধক বাক্য উচ্চারণ করলেন- ‘এ রাত কবে শেষ হবে? কবে সকাল হবে? কবে টিকিট নামক সোনার হরিণ পাবো?’

চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনে বৃহস্পতিবার (২৩ মে) সকাল ৯টায় ১ জুনের টিকিট দেওয়া হবে। সেই টিকিটের জন্য আগের দিন রাত ১১টা থেকে স্টেশনে বসে আছেন ওয়ালীউল্লাহ।

শুধু ওয়ালীউল্লাহ নয়, তিনটি গ্রুপ হয়ে ৩০ জনকে দেখা গেলো স্টেশনে বসে থাকতে।

তাদের কাউন্টারের সামনে বসতে দেয়নি।

রেলওয়ে থেকে নির্দেশনা আছে, টিকিটের জন্য রাতে অপেক্ষা করতে হবে কাউন্টারের বাইরে। অর্থাৎ স্টেশনের মুখে। ভোর থেকে তারা কাউন্টারে লাইনে দাঁড়াতে পারবে। তখন মানুষের ভিড় বাড়তে থাকবে। ওইসময় যে আগে লাইনে দাঁড়াবে সে আগে বলে বিবেচিত হবে।

তাই সবার আগে এসেও রাতে তাদের কণ্ঠে এলো টিকিট পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তার কথা। কারণ বৃহস্পতিবার টিকিটের জন্য ভিড়ও বেশি থাকবে।

শিপিং ইঞ্জিনিয়ার ওয়ালীউল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, কিশোরগঞ্জ যাবো। বিজয় এক্সপ্রেসের টিকিট নেবো। আজকে সকাল থেকে রেলসেবা নামের অ্যাপে অনেক চেষ্টার পরও টিকিট নিতে পারিনি। বারবার লোডিং দেখাচ্ছে। টিকিট-তো পেতেই হবে। তাই আগের রাত থেকে এখানে বসে আছি।

টিকিটের জন্য রাত জাগছেন তারা।  ছবি: বাংলানিউজআগ্রাবাদ নাজিরপুল থেকে এসেছেন মো. কামরুল ইসলাম খোকন। রাত সাড়ে ১১টায় রেলওয়ে স্টেশনে এসে উপস্থিত হন। তিনি প্যাকেটে করে সেহেরীর খাবারও নিয়ে এসেছেন। প্যাকেটটি ব্যাগে ঢুকিয়ে তিনি বলেন, এখানেই সেহেরী খাওয়া হবে। কারণ পরেরদিন সকাল ট্রেনের টিকিটের জন্য লাইনে দাঁড়াতে হবে। এতো কষ্টের পরও টিকিট নামক সোনার হরিণ পেলেই হলো। না হলে এই কষ্ট বৃথা যাবে।

এদিকে রেলস্টেশনে নিরাপত্তা জোরদারে পুলিশের পাশাপাশি র‌্যাবকে দেখা গেছে নিরাপত্তা দিতে। এছাড়া রয়েছে দুটি সহায়তা কেন্দ্রও। নিরাপত্তা জোরদারে নিয়োজিত একজন পুলিশ সদস্য বাংলানিউজকে বলেন, অনেকে রাত ১১টা থেকে পরের দিনের টিকিটের জন্য স্টেশনে চলে এসেছেন। তাদের মধ্যে সমন্বয় আছে। ভোরে যিনি আগে এসেছেন তাকে আগে লাইনে দাঁড়ানোর সুযোগ দেওয়া হবে।

কাল বৃহস্পতিবার (২৩ মে) দেওয়া হবে ১ জুনের টিকিট। ওইদিনও অ্যাপসেসহ ১২ হাজার টিকিট দেওয়া হবে। সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ময়মনসিংগামী বিজয় এক্সপ্রেসে, সুবর্ণ এক্সপ্রেস, মহানগর এক্সপ্রেস, গোধূলী, সোনার বাংলা, মেইল এক্সপ্রেস ও তূর্ণা এক্সপ্রেসের ট্রেনের টিকিট দেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ০১৩৯ ঘণ্টা, মে ২৩, ২০১৯

জেইউ/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।