এই জায়গাটির নাম নগরের এক কিলোমিটার এলাকার নতুন চান্দঁগাও থানা। বার আউলিয়া ওয়ার্কশপ, শাহ আমানত ওয়ার্কশপসহ কয়েকটি গ্যারেজে গিয়ে দেখা যায় এ চিত্র।
মুখে মুখোশ, কোমড়ে গামছার গিট্টু।
শুধু চান্দগাঁও এলাকা নয়, নগরের একেখান মোড় এলাকার গ্যারেজগুলোতেও দেখা গেছে একই চিত্র। এমনই একটি গ্যারেজের সামনে রাখা ছিল ‘মা ট্রাভেলস’ নামে একটি বাস। বাসটির সামনে ও পাশের জানালার কোনো গ্লাস নেই। সামনের বাম্পারের লাইট নেই।
বাসটিতে ঝালাইয়ের কাজ করছিলেন মো. সোহেল। কথা বলতে চাইলে তাড়া আছে বলেন তিনি। কিসের তাড়া, জানতে চাইলে তিনি বলেন, তিনটি বাস আমরা ৫ জনে কাজ করছি। মালিক তিনদিনের সময় দিয়েছেন। এরমধ্যে না হলে মালিক টাকা কেটে নিবে।
একই গ্যারেজে ‘আরিহা ট্রাভেলস’ নামে আরেকটি পুরাতন বাস মেরামত করছিলেন সাইদুল ইসলাম ও মো. নুরুননবী। তারা জানান বাসটি বি-বাড়িয়ার এলাকার এক মালিকের। কিছুদিন হলো বাসটিকে মেরামত করার জন্য নিয়ে আসা হয়। ঈদের আগে মেরামতের কাজ শেষ হলে যাত্রী বহন করবে বাসটি।
চট্টগ্রামের গ্যারেজগুলোতে এভাবে দুমড়ে-মুচড়ে যাওয়া বাসগুলো মেরামত করা হচ্ছে। ঈদে এসব বাসে করেই মহাসড়ক পাড়ি দিয়ে ঘরে যাবেন যাত্রীরা। ফিটনেসবিহীন বাস সম্পর্কে জানতে মালিকপক্ষের কাউকে পাওয়া যায়নি গ্যারেজে।
‘ফিটনেসবিহীন এসব বাস ঈদে যাত্রী পরিবহন করবে’-এমন অভিযোগ মানতে নারাজ চট্টগ্রাম জেলা সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের মহাসচিব মঞ্জুরুল আলম মঞ্জু ও পরিবহণ শ্রমিক নেতা মো. মুছা।
পরিবহন শ্রমিক নেতা মো. মুছা বাংলানিউজকে বলেন, মনে করেন একটি বাসের মেয়াদ ২০ বছর। ২০ বছর পর্যন্ত কোনো বাসের জানালা, বাম্পার বা রং ঠিক থাকে না। তাই ঈদে যাত্রী আকর্ষণে বাস মালিকরা রং লাগিয়ে নতুন করে। এখন যাত্রীরা খুব সচেতন, ফিটনেসবিহীন গাড়িতে তারা চড়বেনা।
একই কথা বলেন আন্তঃজেলা বাস মালিক সমিতির মহাসচিব প্রফেসর কফিল উদ্দিন আহমেদ। তবে ফিটনেসবিহীন কোনো গাড়ি নামলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান তারা।
ঈদ উপলক্ষে চলবে ৩ হাজার বাস
চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার রুটে এক হাজার ও চট্টগ্রাম থেকে বি-বাড়িয়া, কুমিল্লাসহ ১৫টি রুটে দুই হাজার গাড়ি চলবে বলে জানান পরিবহন শ্রমিক নেতা মো. মুছা ও আন্তঃজেলা বাস মালিক সমিতির মহাসচিব প্রফেসর কফিল উদ্দিন আহমেদ।
ইতোমধ্যে এ উপলক্ষে বাস মালিকরা প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও শুরু করেছেন। চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে যাওয়া বিভিন্ন আন্তঃজেলার বাসের ঈদের অগ্রিম টিকিট আগামী ১৭ মে থেকে বিতরণ করা হবে।
কফিল উদ্দিন আহমেদ জানান, ঈদের ৫ দিন আগে থেকে বিভিন্ন কোম্পানির বাস কমপক্ষে ৪০ হাজার করে যাত্রী পরিবহন করবে। যে গাড়িতে যতক্ষণ টিকিট থাকবে ততক্ষণ যাত্রীরা টিকিট পাবেন।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অতিরিক্ত ভাড়া নেয়ার ব্যাপারে কঠোর নির্দেশনা আছে। বাস মালিক ও চালকদের এ ব্যাপারে ব্রিফিং করা হয়েছে। তারা আমাদের জানিয়েছেন নির্ধারিত ভাড়া ছাড়া এক টাকাও বেশি নেবেন না।
বাংলাদেশ সময়:২১২৫ ঘণ্টা, মে ১৭, ২০১৯
জেইউ/টিসি