ইতোমধ্যে আয়ানকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এর আগে শনিবার (১১ মে) রাতে আয়ানকে চট্টগ্রাম মা ও শিশু জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
তবে আয়ানের বাবা হাসান তালুকদার সন্তানকে মারধরে বিষয়টি মিথ্যে বলে দাবি করেছেন। হাসানের দাবি, তার ছেলে চেয়ার থেকে পড়ে আহত হয়েছে।
নগরের পতেঙ্গা কাটগড় এলাকার বাসিন্দা হাসান তালুকদার পেশায় ফটোগ্রাফার বলে জানা গেছে। তার প্রথম স্ত্রী মারা যাওয়ার পর বছরখানেক আগে দ্বিতীয় বিয়ে করেন।
জানা যায়, শনিবার রাতে আয়ানকে আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর চিকিৎসকদের সঙ্গে তার সৎ মা শাপলা মনি ও বাবা হাসান রহস্যজনক আচরণ করে। তাদের আচরণ সন্দেহ হওয়ায় চিকিৎসকরা আয়ানকে নিজেদের জিম্মায় চিকিৎসা দেওয়া শুরু করেন।
শিশু হাসপাতালের ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটের (আইসিইউ) সহকারি রেজিস্ট্রার মিশু তালুকদার বাংলানিউজকে বলেন, ‘শিশুটির দুই হাত ভাঙা। হাত দুটি প্লাস্টার করা দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া বাম পা ভেঙে গেছে। সেটি এক্সটেনশন করে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি শরীরের একাধিক জায়গায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। আয়ানের রক্তের হিমোগ্লোবিন কম, এজন্য তাকে রক্ত দেওয়া হয়েছে।
শিশু বিভাগের চিকিৎসক ডা. আফরোজা বাংলানিউজকে বলেন, শনিবার রাতে আয়ানকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হিমোগ্লোবিন কমে যাওয়ায় রোববার (১২ মে) দুপুরে তার বাবাকে রক্তের ব্যবস্থা করতে বলা হয়। কিন্তু রাতে ১১টার পরেও তিনি রক্তের ব্যবস্থা করেননি। উল্টো পরেরদিন বিকেলে রক্ত যোগাড় করতে পারবেন না বলে জানান। পরে নিজেরা সংগ্রহ করে আয়ানকে রক্ত দিই।
এদিকে মা ও শিশু হাসপাতালের পরিচালক (প্রশাসন) ডা. নুরুল হক বাংলানিউজকে বলেন, আয়ানকে বিনামূল্যের চিকিৎসা দেয়ার কথা তার বাবাকে জানিয়েছি। তিনি এতেও রাজি না হয়ে ছেলেকে চমেক হাসপাতাল নিয়ে গেছেন।
‘চেয়ার থেকে পড়ে এভাবে আহত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। তবুও ছেলেটির উপযুক্ত চিকিৎসার জন্য আমাদের হাসপাতালের চিকিৎসকরা যথেষ্ট আন্তরিকতা দেখিয়েছি। যাতে ছেলেটি বেঁচে থাকে। পাশাপাশি পুলিশকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। ’
ডবলমুরিং থানার ওসি সদীপ কুমার দাশ বাংলানিউজকে বলেন, হাসপাতাল থেকে জানানো হলে পুলিশের একটি টিম পাঠানো হয়। পরে পুলিশ আয়ানকে তার বাবার জিম্মায় দেয়।
অভিযোগের ব্যাপারে আয়ানের বাবা হাসান তালুকদার বাংলানিউজকে বলেন, আমার ছেলের জন্মগত শারীরিক ত্রুটি রয়েছে। সে চেয়ার থেকে পড়ে আহত হয়েছে। কিন্তু শিশু হাসপাতালের চিকিৎসকরা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ তুলেছেন।
‘ওই হাসপাতালের চিকিৎসকরা আমার সন্তানকে ঠিকমতো চিকিৎসা দেয়নি। এজন্য আয়ানকে চমেক হাসপাতাল নিয়ে গেছি। ’
তিনি বলেন, প্রথম স্ত্রী মারা যাওয়ার পর প্রায় এক বছর আগে দ্বিতীয় বিয়ে করি। প্রথম সংসারে দুই সন্তান রয়েছে। তাদের সৎ মা ওই দুই সন্তানকে নিজের মতো করে লালন-পালন করে।
বাংলাদেশ সময়: ২১৩০ ঘণ্টা, মে ১৫, ২০১৮
এসইউ/টিসি