ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

জনদুর্ভোগ নিরসনে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নিন: সুজন

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৩৮ ঘণ্টা, মে ১৩, ২০১৯
জনদুর্ভোগ নিরসনে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নিন: সুজন মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের সঙ্গে মতবিনিময় করেন খোরশেদ আলম সুজন

চট্টগ্রাম: নগরের জনদুর্ভোগের চিত্র তুলে ধরে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন জনদুর্ভোগ লাঘবে জনতার ঐক্য চাই শীর্ষক নাগরিক উদ্যোগের প্রধান উপদেষ্টা ও নগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন।

সোমবার (১৩ মে) চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ আহ্বান জানান।  

সুজন বলেন, আগ্রাবাদ এক্সেস সড়ক এবং পোর্ট কানেকটিং সড়ক দুইটি চট্টগ্রামের অতীব গুরুত্বপূর্ণ।

এ দুইটি সড়ক দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার যানবাহন চলাচল করে। ইপিজেড, বন্দর, কাস্টমস ছাড়াও বিভিন্ন সরকারি এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মজীবী নারী পুরুষকে প্রতিনিয়তই চলাচল করতে হয় এ দুইটি সড়ক দিয়ে।
বন্দর কেন্দ্রিক বিভিন্ন ট্রাক, ট্রেইলর, কাভার্ডভ্যানের চলাচলও এ সড়ক দুটিতে। কিন্তু সংস্কারের জন্য দীর্ঘ সময় ধরে এ সড়ক দুইটি চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। ফলে জনমনে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হচ্ছে। এ ছাড়া নগরের গুরুত্বপূর্ণ আরাকান সড়কের এক পাশও দীর্ঘ সময় ধরে যান বাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে।

তিনি অতিসত্ত্বর আগ্রাবাদ এক্সেস সড়ক এবং পোর্ট কানেকটিং সড়ক দুইটি ও আরাকান সড়কের এক পাশ জনগণ এবং যান চলাচলের উপযোগী করে গড়ে তোলার জন্য মেয়র মহোদয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

তিনি বলেন, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সঙ্গে ওয়াসার কোনো সমন্বয় নেই। ওয়াসা চট্টগ্রাম নগরীকে একটি কবরস্থানে পরিণত করেছে। দেখা যাচ্ছে যে, নতুন রাস্তা করে যাওয়ার পর আবার খুঁড়ে পুরো রাস্তাটি নষ্ট করে দেওয়া হয়। এক্ষেত্রে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সঙ্গে ওয়াসার সমন্বয় একান্ত জরুরি।

বিমানবন্দরের প্রবেশমুখগুলোতে অফডক কনেটইনার ইয়ার্ডগুলো বিমানবন্দরকে পুরো চট্টগ্রাম থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলেছে। অফডক কেন্দ্রিক যানজটের জন্য প্রতিদিনই ফ্লাইট মিস করছে যাত্রী সাধারণ। এমনকি অনেক বেসরকারি বিমান শাহ আমানত আর্ন্তজাতিক বিমানবন্দরে তাদের রুট বন্ধ করে দিয়েছে। এটি চট্টগ্রামের প্রতি গভীর ষড়যন্ত্র কিনা তা ভেবে দেখতে হবে।

নগরজুড়ে মশার প্রজনন বন্ধ এবং উৎপাত ঠেকাতে করপোরেশনের কার্যকর কোনো উদ্যোগ চোখে পড়ছে না বলে অভিযোগ করে সুজন বলেন, বিশেষ করে পবিত্র রমজান মাসে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের ইবাদতে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে মশা। মশার প্রজনন বন্ধ এবং উৎপাত ঠেকাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।

মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন নাগরিক দায়িত্ববোধ থেকে মতবিনিময় করতে আসার জন্য নাগরিক উদ্যোগের নেতাদের ধন্যবাদ জানান।

মেয়র বলেন, দুঃখজনক হলেও সত্যি যে, আমি মেয়রের দায়িত্ব নেওয়ার পর একযোগে নগরের সড়কগুলোতে ওয়াসা, সিডিএ, টিঅ্যান্ডটি, কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি খোঁড়াখুঁড়ি শুরু করে। স্বাভাবিক ভাবেই উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের জন্য সিটি করপোরেশনকে রাস্তা কাটার অনুমতি দিতে হয়। একই সঙ্গে নগরের মূল সড়কগুলো খোঁড়াখুঁড়ির কারণে নগরবাসী কিছুটা ভোগান্তিতে পড়েছে। তারপরও আমরা সীমিত সাধ্যের মধ্যে নগরবাসীর দুর্দশা লাঘবে প্রয়োজনীয় সংস্কার কর্মসূচি ধারাবাহিকভাবে চালিয়ে যাচ্ছে যা এখনো অব্যাহত আছে। নগরীর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আগ্রাবাদ এক্সেস সড়ক এবং পোর্ট কানেকটিং সড়ক দুইটি জাইকার অর্থায়নে চলমান রয়েছে। জানুয়ারি ২০১৮ সাল থেকে শুরু হয়ে মে ২০১৯ সাল পর্যন্ত এ দুইটি সড়কের মেয়াদকাল নির্ধারণ করা হয়েছে। জাইকার কাজের কিছুটা ধারাবাহিকতা রয়েছে। প্রকল্প শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সব কাজ সিটি করপোরেশনের পাশাপাশি জাইকার প্রতিনিধিদল তদারকি করে। জাইকার পদ্ধতি কিংবা প্রক্রিয়ার বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এ দুইটি সড়কের উন্নয়নকাজে যাতে সঠিক মান বজায় থাকে সেটা নিশ্চিত করার জন্যই জনগণের ভোগান্তি হচ্ছে।

তিনি এ সড়ক দুটির অধিকাংশ কাজ সম্পন্ন হওয়ার কথা জানান এবং এ মাসের মধ্যে একটি লেয়ারের ঢালাই হওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেন। পুরোপুরি সম্পন্ন হলে এ দুটি সড়ক দৃষ্টিনন্দন সড়কে পরিণত হবে বলে মত প্রকাশ করেন।

আরাকান সড়কটি কালুরঘাট পর্যন্ত ৭১ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হবে। ইতিমধ্যে যার দরপত্র সম্পন্ন হয়েছে। ওয়াকওয়ে এবং যাত্রীছাউনিসহ এ রাস্তাটি পুরোপুরি সম্পন্ন হলে একটি আকর্ষণীয় রাস্তায় পরিণত হবে বলে নাগরিক উদ্যোগের নেতাদের অবহিত করেন।

তিনি তরুণ সমাজকে মাদকের করাল গ্রাস থেকে মুক্ত করার জন্য প্রশাসন এবং নাগরিক উদ্যোগের নেতাদের সঙ্গে নিয়ে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।

মেয়র নগরবাসীর যেকোনো অভিযোগ সকাল ৯টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত ১৬১০৪ চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের এ হটলাইন নাম্বারে জানানোর অনুরোধ জানান।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন রাজনীতিবিদ মো. ইলিয়াছ, মো. কামাল মেম্বার, হোসেন কোম্পানি, হাবিবুর রহমান, নিজাম উদ্দিন, আব্দুল আজিম, এজাহারুল হক, মোসাদ্দেক হোসেন বাহাদুর, মো. শাহজাহান, পংকজ চৌধুরী কংকন, জাহেদ আহমদ চৌধুরী, সোলেমান সুমন, সমীর মহাজন লিটন, শেখ মামুনুর রশীদ, জাহাঙ্গীর আলম, সফি আলম বাদশা, স্বরূপ দত্ত রাজু, মো. ওয়াসিম, মাহফুজ চৌধুরী, শিশির কান্তি বল, শেখ সরওয়ার্দী এলিন, রকিবুল আলম সাজ্জী, রাজীব হাসান রাজন, এম ইমরান আহমেদ ইমু, দীপংকর সৌম শান্ত, মনিরুল হক মুন্না, হাসান মুরাদ প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৩ ঘণ্টা, মে ১৩, ২০১৮
এআর/টিসি

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।