ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

বর্ষায় ডুববে নাকি ভাসবে চট্টগ্রামবাসীর ভাবনা সেটি

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৫২ ঘণ্টা, মে ৯, ২০১৯
বর্ষায় ডুববে নাকি ভাসবে চট্টগ্রামবাসীর ভাবনা সেটি বক্তব্য দেন নগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন

চট্টগ্রাম: চট্টগ্রামের দুঃখ জলাবদ্ধতা নিরসনকে অগ্রাধিকার দিয়ে ৫৬১৬ কোটি টাকার মেগা প্রকল্প একনেকে পাস হলেও এ নগরের মানুষ চাতক পাখির মতো তাকিয়ে আছেন আসন্ন বর্ষায় জোয়ারে ডুববে না ভাসবে?

বৃহস্পতিবার (৯ মে) জনদুর্ভোগ লাঘবে জনতার ঐক্য চাই শীর্ষক নাগরিক উদ্যোগের প্রধান উপদেষ্টা ও নগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এ সংশয়ের কথা জানান।

সুজন বলেন, প্রধানমন্ত্রী প্রকৃত অর্থেই একজন রাজনৈতিক নেতাকে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব দিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী পরিকল্পনা অনুযায়ী আগামী ১০ বছরের মধ্যে চট্টগ্রাম শহর বিশ্বের অন্যতম ব্যস্ততম বাণিজ্যকেন্দ্রে রূপান্তরিত হবে।

তিনি বলেন, চট্টগ্রাম হচ্ছে বাণিজ্যিক রাজধানী কিন্তু এ শহরে একটি পরিকল্পিত ট্রাক টার্মিনাল নেই।

প্রতিদিন চট্টগ্রাম বন্দরকে কেন্দ্র করে হাজার হাজার ট্রাক নগরে প্রবেশ করে।

তাই একটি আধুনিক ট্রাক টার্মিনাল নির্মাণের উদ্যোগ নিতে চউক চেয়ারম্যানের প্রতি আহ্বান জানান।

তিনি অপরিকল্পিত ভাবে গড়ে ওঠা অফডক কনটেইনার ইয়ার্ডগুলোর যানজটের কারণে আর্ন্তজাতিক বিমানবন্দর ব্যবহার করতে পারছে না চট্টগ্রামের মানুষ। প্রতিদিনই বিমানবন্দরগামী যাত্রীদের নিদারুণ দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। প্রতিনিয়তই ফ্লাইট মিস হচ্ছে যাত্রী সাধারণের। তাই চউক কর্তৃপক্ষের এখনই সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত একটি শহরের জন্য বিমানবন্দর বেশি গুরুত্বপূর্ণ নাকি অফডক কনটেইনার ইয়ার্ডগুলো। সম্প্রতি লালদিয়ার চরে টার্মিনাল নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। এ টার্মিনাল নির্মাণ হলেও হুমকির মুখে পড়বে চট্টগ্রামের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরটি। তাই এ টার্মিনাল নির্মাণের আগে বিশিষ্ট ব্যক্তি এবং নগর পরিকল্পনাবিদদের মতামত নেওয়া জরুরি।

তিনি রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে ইউএসটিসি থেকে ভাটিয়ারি পর্যন্ত নয়নাভিরাম পর্যটন কেন্দ্র এবং বড়শি দিয়ে মাছ শিকারের উপযোগী করার পরিকল্পনা নেওয়ার জন্য চউক চেয়ারম্যানের প্রতি অনুরোধ জানান।

সাধারণ মানুষের জন্য নির্মিত রাস্তাসহ চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের কোনো স্থাপনা যাতে বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার না হয় সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখার আহ্বান জানান খোরশেদ আলম সুজন।

চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান বলেন, প্রধানমন্ত্রী যে আস্থা এবং বিশ্বাস নিয়ে আমাকে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব অর্পণ করেছেন আমি সে দায়িত্বের পরিপূর্ণ সদ্ব্যবহার করতে চাই। সব সেবা সংস্থার সমন্বয়ে আলাপ আলোচনা করে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে একটি জবাবদিহিমূলক প্রতিষ্ঠানে রূপান্তর করা হবে। ইতিমধ্যে জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পকে অগ্রাধিকার দিয়ে খালের মাটি উত্তোলনের কাজ চলছে। খালগুলোকে আরএস জরিপ মূলে অবৈধ দখলমুক্ত করে পুরাতন অবয়বে ফিরিয়ে নিয়ে আসা এবং খালের দুই পাড়ে গার্ডওয়াল নির্মাণ করা হবে। পরবর্তীতে স্লুইসগেট নির্মাণ, খালের দুই পাশে রাস্তা, ওয়াকওয়ে এবং আনুষঙ্গিক কাজ সম্পন্ন করা হবে।

চাক্তাই থেকে কালুরঘাট পর্যন্ত স্লুইসগেটসহ বাঁধ ও রাস্তা নির্মাণ, লালখান বাজার থেকে এয়ারপোর্ট পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে অবহিত করেন এবং নাগরিক উদ্যোগের নেতাদের চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চলমান প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে সহযোগিতা করার অনুরোধ জানান।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী প্রদত্ত উন্নয়ন প্রকল্পগুলো পুরোপুরি বাস্তবায়িত হলে চট্টগ্রাম পৃথিবীর একটি অন্যতম আকর্ষণীয় নগরে পরিণত হবে।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন রাজনীতিবিদ মো. ইলিয়াছ, সংগঠনের সদস্যসচিব হোসেন কোম্পানি, আব্দুর রহমান মিয়া, সাইদুর রহমান চৌধুরী, মো. সেলিম, এজাহারুল হক, মো. শাহজাহান, জাহেদ আহমদ চৌধুরী, সমীর মহাজন লিটন, জাহাঙ্গীর আলম, শিশির কান্তি বল, স্বরূপ দত্ত রাজু, ওয়াসিম উদ্দিন চৌধুরী, সরওয়ার্দী এলিন, নগর ছাত্রলীগ সভাপতি এম ইমরান আহমেদ ইমু, মনিরুল হক মুন্না, হাসান মুরাদ প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৫ ঘণ্টা, মে ০৯, ২০১৯
এআর/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।