ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

কাজ শুরুর আগেই ব্যয় বাড়ছে ৩’শ কোটি টাকা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২১৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৩, ২০১৯
কাজ শুরুর আগেই ব্যয় বাড়ছে ৩’শ কোটি টাকা ফাইল ফটো

চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম ওয়াসার ভাণ্ডালজুড়ি পানি সরবরাহ প্রকল্পের কাজ শুরুর আগেই ব্যয় বাড়ছে তিনশ কোটি টাকা। ইতোমধ্যে ব্যয় বাড়ানো ও ঠিকাদার নিয়োগের অনুমোদন সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) বোর্ড সভায় প্রস্তাব দুটি অনুমোদন দেওয়া হবে বলে জানা গেছে।  পরবর্তীতে মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের পর মূল কাজ শুরু হবে।

এর আগে ২০১১ সালে প্রস্তাবিত উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনায় (ডিপিপি) প্রকল্প ব্যয় ধরা হয় এক হাজার ৩৬ কোটি ৩০ লাখ টাকা। নতুনভাবে ব্যয় বাড়িয়ে এক হাজার ৩’শ ৭৩ কোটি ৮০ লাখ করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

জানা গেছে, প্রকল্প কাজের ঠিকাদার নিয়োগের কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। তাইইয়ং ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড নামে দক্ষিণ কোরিয়ার একটি প্রতিষ্ঠানকে সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে কাজ দিতে দাতা সংস্থাসহ প্রকল্পের দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি (টিইসি) অনুমোদন দিয়েছে।

ওয়াসা সূত্র জানায়, ২০১৬ সালের ৫ জানুয়ারি একনেকে অনুমোদন পায় প্রকল্পটি। মেয়াদ ধরা হয় ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। তবে শুরু থেকে ভূমি জটিলতায় প্রকল্পের কাজ আটকে যায়। অনুমোদন পাওয়ার তিন বছর পরেও কাজ শুরু করা যায়নি।

আগের ডিপিপি অনুযায়ী প্রকল্প ব্যয়ের এক হাজার ৩৬ কোটি ৩০ লাখ টাকার মধ্যে কোরিয়ান সরকারের ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট অব কো-অপারেশন ফান্ডের (কেইডিসিএফ) পক্ষে কোরিয়ান এক্সিম ব্যাংক ৭৫৪ কোটি ৬৬ লাখ টাকা ও সরকার ২৬১ কোটি ৬৪ লাখ এবং চট্টগ্রাম ওয়াসা ২০ কোটি টাকা অর্থায়ন করা কথা ছিল।

মূলত, দক্ষিণ চট্টগ্রামে পানি সরবরাহের জন্য ভাণ্ডালজুড়ি পানি সরবরাহ প্রকল্পটি হাতে নেয় ওয়াসা। পাশাপাশি কর্ণফুলী নদীর তীরে গড়ে ওঠা শিল্প-কারখানাগুলোতে এখান থেকে পানি সরবরাহ করা হবে।

ওয়াসার তথ্যমতে, প্রকল্পের আওতায় দৈনিক ৬০ মিলিয়ন লিটার ক্ষমতাসম্পন্ন পানি শোধনাগার, কনভয়েন্স, ট্রান্সমিশন ও ডিস্ট্রিবিউশন পাইপলাইন এবং দুটি রিজার্ভার নির্মাণ করা হবে। এজন্য প্রায় ৫০ একর ভূমি অধিগ্রহণ করা হবে। এর মধ্যে শোধনাগার নির্মাণের জন্য লাগবে প্রায় ৪১ একর জায়গা। পাশাপাশি বাকি জায়গা রিজার্ভার ও পাইপলাইন বসাতে ব্যবহার করা হবে।

ইতোমধ্যে ভূমি অধিগ্রহণের কাজও শেষ পর্যায়ে রয়েছে বলে জানা গেছে। প্রায় পাঁচ একর জায়গা অধিগ্রহণ হয়েছে। মূল শোধনাগার নির্মাণের জন্য ৪১ একর জায়গা অধিগ্রহণের প্রক্রিয়া প্রায় শেষ পর্যায়ে। জায়গার মূল্যও জেলা প্রশাসনকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। মালিকরা টাকা বুঝে নিলে ওই জায়গা অধিগ্রহণ করবে ওয়াসা।

ওয়াসার নির্বাহী প্রকৌশলী ও প্রকল্প পরিচালক মুহাম্মদ মাহবুব আলম বাংলানিউজকে বলেন, প্রকল্পের নির্মাণ কাজের জন্য ছয়টি প্রতিষ্ঠান দরপত্র ক্রয় করে। ২০১৮ সালের ১০ ডিসেম্বর দরপত্র জমাদানের শেষদিন দুটি প্রতিষ্ঠান আবেদন জমা দেয়।

‘এর মধ্যে কোলন হ্যানসল জয়েন্ট ভেনচার নামে প্রতিষ্ঠানটির গ্রহণযোগ্য হয়নি। অবশিষ্ট তাইইয়ং ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড আবেদন গ্রহণ করে সেটি অনুমোদন দেওয়া হয়। ’

প্রকল্প পরিচালক মুহাম্মদ মাহবুব আলম বলেন, বিভিন্ন জটিলতায় প্রকল্পটির কাজ আটকে যায়।

‘প্রকল্প গ্রহণের সময় জায়গার দাম যে দরে নির্ধারণ করে হয়েছে সেটি এখন কয়েকগুন বেড়েছে। ফলে প্রকল্প ব্যয় বাড়াতে হয়েছে। ইতোমধ্যে ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতা নিরসন হয়েছে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নিয়োগের পর দ্রুত প্রকল্পের মূল কাজ শুরু হবে। ’

মুহাম্মদ মাহবুব আলম বলেন, ‘তিন ধাপে এ প্রকল্পের কাজ শেষ হবে। প্রথম ধাপে ভাণ্ডালজুড়িতে শোধনাগার নির্মাণ, দ্বিতীয় ধাপে কনভয়েন্স, ট্রান্সমিশন ও ডিস্ট্রিবিউশন পাইপলাইন নির্মাণ হবে। শেষ ধাপে পটিয়া ও কেইপিজেডে রিজার্ভার নির্মাণ করা হবে। ’

ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী একেএম ফজলুল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, ২০১১ সালের ডিপিপি অনুযায়ী জায়গার দাম ধরা হয়েছে। বর্তমানে প্রকল্প এলাকায় জায়গার দাম কয়েকগুন বেড়েছে। এ ছাড়া ডিপিপির পরিবর্তন করে প্রকল্পের পরিধিও বেড়েছে। ফলে ব্যয় বাড়াতে হচ্ছে। ’

‘এটি অগ্রাধিকার প্রকল্প। তাই দ্রুত কাজ শুরুর চেষ্টা চলছে। শুধু এ প্রকল্পের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নিয়োগের জন্য জরুরি বোর্ড সভা আহ্বান করা হয়েছে। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৮১০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৩, ২০১৯
এসইউ/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।