সরেজমিনে দেখা গেছে, সামান্য বৃষ্টিতে দুই নম্বর গেট হতে বায়েজিদ মুখী র্যাম্প ও লুপের উঠা-নামার স্থানে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। অন্যান্য অংশের মতো পাইপ থাকলেও সেখানে পানি জমে থাকছে দীর্ঘক্ষণ।
পানি জমে যাওয়ার স্থানগুলো ঘুরে দেখা যায়, নিষ্কাশনের জন্য লাগানো পাইপগুলো সরু হওয়ায় দ্রুত পানি সরছে না।
জানা গেছে, নিয়ম অনুযায়ী প্রকল্প বাস্তবায়ন শেষে ফ্লাইওভারটি সিটি করপোরেশনের কাছে হস্তান্তর করার কথা সিডিএ’র। কিন্তু এখনো সেটি করা হয়নি। অন্যদিকে সিডিএ জনবলের অভাবে ফ্লাইওভারটি ঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করতে পারছে না। ফলে নিয়মিত পরিষ্কার না হওয়ায় পাইপের মুখ ভরাট হয়ে যাচ্ছে। তাতেই সামান্য বৃষ্টিতে জমে যাচ্ছে পানি।
এদিকে শুরু থেকেই অভিযোগ ছিল, মুরাদপুর থেকে লালখানবাজার পর্যন্ত বিস্তৃত এ ফ্লাইওভার অপরিকল্পিভাবে গড়ে তোলা হচ্ছে। তবে ফ্লাইওভার চালুর পর মুরাদপুর, দুই নম্বর গেট, জিইসি, ওয়াসা, লালখানবাজার অংশে যানজট অনেকাংশে কমে যায়। যার সুফল ভোগ করছেন নগরবাসী।
নগর পরিকল্পনাবিদরা জানিয়েছেন, সরু পাইপের কারণে ফ্লাইওভারে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে।
স্থপতি আশিক ইমরান বাংলানিউজকে বলেন, পাইপলাইনের মুখ মাটি ও বালু দিয়ে ভরাট থাকে। এ ছাড়া পানি নামার পাইপগুলো সরু।
তিনি বলেন, ফ্লাইওভারের সরু পাইপ লাইনগুলো পরিবর্তন করে বড় পাইপ লাইন স্থাপন ও নিয়মিত পাইপের মুখ পরিষ্কার রাখলে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হবে না।
এদিকে ফ্লাইওভার নির্মাণকারী সংস্থা চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) বলছে, বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনে ফ্লাইওভারে ড্রেনেজ ব্যবস্থা থাকলেও বালু ও কাদামাটিতে পাইপের মুখ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এজন্য জলজট হচ্ছে।
সিডিএ’র নির্বাহী প্রকৌশলী ও প্রকল্প পরিচালক মাহফুজুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, র্যাম্প ও লুপের উঠা-নামার স্থানে জলাবদ্ধতা সমস্যা সমাধান করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ওই স্থান ছয় ইঞ্চির পরিবর্তে ১২ ইঞ্চি পাইপ বসানো হয়েছে। আশাকরি আর জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হবে না।
তিনি বলেন, ভারী বর্ষণের কারণে ফ্লাইওভারের অন্যান্য স্থানে জলজট সৃষ্টি হচ্ছে। তবুও প্রয়োজন হলে অন্যান্য পাইপগুলো পরিবর্তন করে বড় পাইপ বসানো হবে।
সিডিএ সূত্রে জানা গেছে, আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভার প্রকল্প ২০১৩ সালের ১ অক্টোবর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) অনুমোদন দেয়। প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয় ২০১৮ সালের জুন পর্যন্ত।
৫ দশমিক ২ কিলোমিটার দীর্ঘ ও ৫৪ ফুট প্রস্থের ফ্লাইওভারটি নির্মাণে ব্যয় ধরা হয় ৬৯৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে ফ্লাইওভারের মূল অবকাঠামো তৈরির ব্যয় ৪৫০ কোটি ও র্যাম্প-লুপ তৈরির ব্যয় ২৪৬ কোটি টাকা । ২০১৫ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি ফ্লাইওভারের নির্মাণকাজ শুরু হয়।
এ ফ্লাইওভার মুরাদপুর এন মোহাম্মদ কনভেনশন সেন্টারের সামনে থেকে জমিয়াতুল ফালাহ মসজিদের পশ্চিম গেটের সামনে গিয়ে শেষ হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৬, ২০১৯
এসইউ/টিসি