শুক্রবার (১২ এপ্রিল) বিকেলে আগ্রাবাদের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে চট্টগ্রাম চেম্বারের ২৭তম আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, দেশের প্রাচীনতম ব্যবসায়ী সংগঠন চট্টগ্রাম চেম্বার।
‘১৩ টন হলে সারা দেশের জন্য হওয়া উচিত। সব কিছু ঢাকা কেন্দ্রিক করা উচিত নয়। ঢাকা, চট্টগ্রাম ও খুলনা থেকে কৃষিপণ্যের ইমপোর্ট পারমিট ইস্যুর উদ্যোগ নেওয়া হবে। ’
তিনি বলেন, একসময় কলকাতা ছিল পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর। এরপর ছিল চট্টগ্রাম। ১৯৩০ সালের আগেও লালদীঘির পাড়ে গাড়ি ভাড়া পাওয়া যেত। পঞ্চাশের দশক পর্যন্ত চট্টগ্রাম থেকে জাহাজে মানুষ বিদেশ যেত। রবীন্দ্রনাথের অনেক বিদেশযাত্রা জাহাজে হয়েছিল। ষাটের দশকের পর থেকে চট্টগ্রাম পিছিয়ে যেতে থাকে।
তিনি বলেন, ভারত পাকিস্তানে নদীর তলদেশে টানেল নেই। উপমহাদেশের প্রথম কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণ করছে সরকার। চট্টগ্রাম শহরের লোকসংখ্যা ৭০ লাখ।
মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ এখন বদলে গেছে। এ বছর ৩ লাখ টন আলু উদ্বৃত্ত। আমরা চাল রফতানি করেছি। নেপালের ভূমিকম্পের সময় ৩০ হাজার টন চাল দিয়েছে। বাংলাদেশ এখন সাহায্য নেয় না, সাহায্য দেয়।
তিনি বলেন, দেশে ১০০টি ইকোনমিক জোন হচ্ছে। মিরসরাই, সীতাকুণ্ড ও ফেনী নিয়ে বঙ্গবন্ধু শিল্পনগর হচ্ছে। ৫ বছর পর ২-৩ লাখ বিদেশি চট্টগ্রামে থাকবে। চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে দেশের ১৭ শতাংশ যাত্রী ওঠানামা করে। তাই এ বিমানবন্দরের উন্নয়নের পাশে হাটহাজারীতে বিমানবন্দর করতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ভারতের সহকারী হাইকমিশনার অনিন্দ্য ব্যানার্জি বলেন, চট্টগ্রামের বাণিজ্যমেলায় আমাদের স্টলে অনেক সাড়া পেয়েছি। ছুটির দিন ১ লাখ লোকের সমাগম হয়েছে মেলায়। ভারত ও বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ১৯৭১ সাল থেকে। এ সম্পর্কের বন্ধন আরও সুদৃঢ় হবে এ আশা রাখি।
সিএমপির কমিশনার মো. মাহাবুবর রহমান বলেন, অর্থনৈতিক উন্নয়নে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীরা চাঁদাবাজমুক্ত পরিবেশে ব্যবসা করছেন। কিছু সমস্যা থাকলে যৌথ সভা করে সমাধান করি। উন্নয়ন মুখ থুবড়ে পড়তো যদি হলি আর্টিজানের মতো আরেকটি ঘটনা ঘটতো। ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ বজায় রাখতে সচেষ্ট থাকবে পুলিশ।
চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, এবার আমরা ৫ লাখ শিক্ষার্থীর জন্য বিনামূল্যে টিকিট দিয়েছি। ৪ লাখ বর্গফুটজুড়ে মেলা করছি। ৪০ লাখ টাকা বছরে রেলওয়েকে দিতে হয়। স্থায়ী ভেন্যু পেলে এ টাকা সাশ্রয় হতো। এ মেলার জন্য চট্টগ্রামের মানুষ, শিল্পোদ্যোক্তারা অপেক্ষা করেন।
‘চট্টগ্রাম বাণিজ্যের রাজধানী। এ ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের ভূমিকা অত্যন্ত গুররুত্বপূর্ণ। বে টার্মিনাল, টানেল, মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর, বঙ্গবন্ধু শিল্পনগর, এলএনজি টার্মিনাল ইত্যাদি হলে ইকোনমিক হাব হবে চট্টগ্রামে। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি রয়েছে। ’
তিনি বলেন, শাহ আমানত বিমানবন্দরের কানেকটিভিটি বাড়াতে হবে। চট্টগ্রাম থেকে সিঙ্গাপুর ব্যাংকক রুটে বিমানের ফ্লাইট চালু করলে বিনিয়োগ বাড়বে। বিকশিত হবে পর্যটন শিল্প।
চেম্বার সভাপতি বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ১৩ টনের ওজন স্কেলের কারণে চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীদের কস্ট অব ডুয়িং বেড়ে গেছে। ভোক্তার ওপর প্রভাব পড়ছে। এ বাধা দূর করতে হবে। এতে এ জনপদের ব্যবসায়ীরা অসম প্রতিযোগিতায় টিকতে পারছে না।
অনুষ্ঠানে মেলায় অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে পার্টনার কান্ট্রি থাই প্যাভিলিয়ন, বিদেশি প্রতিষ্ঠান হিসেবে ভারতীয় সহকারী হাইকমিশন, এসএইচ কারুকর্ম, পিএনএল হোল্ডিংস লিমিটেড, রাজ টেক্সটাইল, স্টেপ ফুটওয়্যার, হাতিল কমপ্লেক্স লিমিটেড, আবুল খায়ের মিল্ক প্রোডাক্টস লিমিটেড এবং এসআলম রিফাইন্ড সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডকে অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়। সোমবার (১৫ এপ্রিল) রাত ১০টা পর্যন্ত মেলা চলবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮১০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১২, ২০১৯
এআর/টিসি