তবে পহেলা বৈশাখের দিন নতুন বছরকে স্বাগত জানিয়ে মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজন শুরু হয় ২০০৬ সাল (১৪১৩ সন) থেকে। উদ্যোক্তা ছিল চট্টগ্রাম চারুকলা কলেজের সাবেক শিক্ষার্থীদের সংগঠন ‘চট্টগ্রাম চারুশিল্পী সম্মিলন’।
মঙ্গল শোভাযাত্রার এবারের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে: ‘নন্দিত স্বদেশ নন্দিত বৈশাখ’। ২০১৬ সালের ৩০ নভেম্বর ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের স্বীকৃতি লাভ করে বাঙালির মঙ্গল শোভাযাত্রা।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় চারুকলা ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক প্রণব মিত্র চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, এবারের শোভাযাত্রায় তুলে ধরা হচ্ছে বিপন্ন কর্ণফুলীকে। প্রতীকী নারীর মুখাবয়বে এক কানে থাকবে দুল, অন্যটি খালি। এছাড়া বড় আকারের মাছ, নৌকা-সাম্পান, হরেক রঙের মুখোশ সহ নানান প্রতিকৃতি নিয়ে চারুকলার সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থী, শিক্ষকসহ সর্বস্তরের মানুষ মঙ্গল শোভাযাত্রায় অংশ নেবেন।
সম্মিলিত পহেলা বৈশাখ উদ্যাপন পরিষদের আহ্বায়ক আহমেদ ইকবাল হায়দার বাংলানিউজকে বলেন, পুরাতন বছরকে বিদায় ও নতুন বছরকে বরণ করে নিতে ১৯৮৪ সালে চৈত্র মাসের শেষ দিনে স্বৈরশাসনের প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে ডিসি হিলের সামনে জড়ো হয়েছিল মানুষ। ঢাক-ঢোল বাজিয়ে, ব্যানার নিয়ে আমরা শোভাযাত্রা করেছিলাম। শোভাযাত্রাটি শহীদ মিনার হয়ে কে সি দে রোড, লালদীঘির পাড়, আন্দরকিল্লা, মোমিন রোড ঘুরে ডিসি হিল এসে শেষ হয়। এরপর দীর্ঘসময় নানা কারণে আর মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজন করা যায়নি।
সময়ের পরিক্রমায় মঙ্গল শোভাযাত্রা বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ায় বর্ষবরণের আয়োজনে এ শোভাযাত্রা অনন্য মাত্রা পেয়েছে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় চারুকলা ইনস্টিটিউটের শোভাযাত্রা বর্তমানে এখানকার প্রধান মঙ্গল শোভাযাত্রা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এছাড়া বিভিন্ন স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে বের করা হয় শোভাযাত্রা।
স্বৈরশাসকের সাম্প্রদায়িক মনোভাবের বিরুদ্ধে সাংস্কৃতিক প্রতিবাদ হিসেবে সৃষ্ট বৈশাখী শোভাযাত্রা এখন বাঙালির ঐতিহ্য লালনের মাধ্যম। এর সঙ্গে যুক্ত হয় পুরাতন বছরের সব ব্যর্থতা ভুলে গিয়ে নতুন আশায় পথচলার প্রত্যয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৩০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১২, ২০১৯
এসি/টিসি