এ লক্ষ্যে বিভাগীয় কমিশনার মো. আবদুল মান্নানকে চেয়ারম্যান এবং জেলা প্রশাসক মো. ইলিয়াস হোসেনকে সদস্য সচিব করে একটি কমিটি গঠন করেছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়।
শুক্রবার (৫ এপ্রিল) চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরের বিভিন্ন উন্নয়ন কাজের অগ্রগতি বিষয়ক পর্যালোচনা সভায় এ কমিটির কথা জানান প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের মূখ্য সমন্বয়ক মো. আবুল কালাম আজাদ।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রামকে দেশের বাণিজ্যিক রাজধানী ঘোষণা দিয়েছেন। কিন্তু এর বাস্তবায়নটা হচ্ছে না।
কমিটির কর্মপরিধি নিয়ে তিনি জানান, কমিটির মূল কাজ হবে- চট্টগ্রামকে সত্যিকারের বাণিজ্যিক রাজধানী হিসেবে গড়ে তুলতে অতীতে কী কী কাজ হয়েছে এবং কী কী কাজ বাকি আছে সেগুলো খুঁজে বের করা। এ জন্য দিনব্যাপী একটি বৈঠকের আয়োজন করবে কমিটি। বৈঠকে বন্দর ও যোগাযোগ ব্যবস্থা নিয়ে একটি, ব্যাংকিং সেক্টর ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান নিয়ে একটি, সরকারি ও বেসরকারি বিনিয়োগ নিয়ে একটি এবং টানেল-রিং রোড়সহ অবকঠামোগত বিষয়গুলো নিয়ে একটিসহ মোট ৪টি সেশন থাকবে।
মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, কমিটি ১ মাস থেকে সর্বোচ্চ ২ মাসের মধ্যে এ বৈঠকের আয়োজন করবে। প্রতিটি সেশনে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী, সচিবসহ সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা অংশ নেবেন। আশা করি এর মাধ্যমে চট্টগ্রামকে সত্যিকারের ‘বাণিজ্যিক রাজধানী’ হিসেবে গড়ে তুলতে একটি কর্ম পরিকল্পনা ঠিক করা যাবে। কোন কাজ কীভাবে কত সময়ের মধ্যে হবে তার পরিকল্পনা করা সম্ভব হবে।
বেতনের জন্য নয়, অন্তর দিয়ে চাকরি করুন
সভায় মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, বঙ্গবন্ধু যদি বেঁচে থাকতেন আজকে আমরা সিঙ্গাপুর কিংবা মালয়েশিয়া হতাম। আনফরচুনেটলি সেটা হয়নি। কিন্তু এখন সেই সময়টা আবার এসেছে। আপনি চারদিকে তাকিয়ে দেখেন, সবখানে উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে।
তিনি বলেন, আমাদের জমি উর্বর। মানুষ ক্রিয়েটিভ। সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া হওয়া আমাদের পক্ষে খুবই সম্ভব। শুধু বেতনের জন্য চাকরি না করে অন্তর দিয়ে চাকরিটা করতে হবে। সবাই মিলে কাজ করতে হবে। কাজটাকে ধর্ম মনে করতে হবে। তবেই ২১০০ সালের ডেল্টা প্লান বাস্তবায়ন সম্ভব হবে। সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়াকে ছাড়িয়ে যেতে পারবো আমরা।
বঙ্গবন্ধু শিল্পনগরে গ্যাস-বিদ্যুৎ সংযোগ জুলাইয়ে
মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ফেনীর সোনাগাজী এবং চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড ও মিরসরাই ইকোনমিক জোন নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগর। এখানে দেশি-বিদেশি অনেক প্রতিষ্ঠান বিনিয়োগ করেছেন। তাই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরের বিভিন্ন উন্নয়ন কাজের পর্যালোচনা করতেই আমরা বসেছি।
তিনি বলেন, জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরে গ্যাস এবং বিদ্যুৎ সংযোগ নিশ্চিত করা হবে। যাতে বিনিয়োগকারীরা সহজেই গ্যাস-বিদ্যুৎ পান। এর বাইরে রাস্তার উন্নয়ন, পানি সরবরাহ, অবকাঠামোগত উন্নয়ন এসব তো আছেই। সব মিলিয়ে নির্দিষ্ট সময়ের আগেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগর পুরোপুরি চালু করতে চাই আমরা।
সভায় বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) শংকর রঞ্জন সাহা, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল জুলফিকার আজিজ, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম, জেলা প্রশাসক মো. ইলিয়াস হোসেনসহ বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ২১০৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৫, ২০১৯
এমআর/টিসি