ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

পাহাড় কেটে সমতল, জানা নেই কর্তৃপক্ষের!

সরওয়ার কামাল, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০৫ ঘণ্টা, মার্চ ১৭, ২০১৯
পাহাড় কেটে সমতল, জানা নেই কর্তৃপক্ষের! বায়েজিদের চন্দ্রনগর এলাকায় পাহাড় কেটে সমতল। ছবি: বাংলানিউজ

চট্টগ্রাম: নগরের বায়েজিদ বোস্তামি থানার চন্দ্রনগর এলাকায় পাহাড় কেটে সমতল ভূমি করছে প্রভাবশালী ভূমিদস্যুরা। অতীতে পাহাড় কেটে সমতল করে প্লট বানিয়ে বিক্রিও করা হয়েছে ওই এলাকায়। ওইসব ভূমিতে এখন টাঙানো হয়েছে সাইনবোর্ড।

শনিবার (১৬ মার্চ) দুপুরে সরজমিনে এমন চিত্র দেখা যায়।

চন্দ্রনগর বাজার থেকে প্রায় ২০০ মিটার উত্তর পাশে থাকা পাহাড় স্থানীয়দের কাছে ‘নাগ-নাগিনী পাহাড়’ নামে পরিচিত।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মধ্য রাতে স্কেভেটর দিয়ে কাটা হয় পাহাড়। মাসখানেক ধরে কাটা হচ্ছে।

পাহাড়ের দক্ষিণ ও পশ্চিম পাশের প্রায় অর্ধেক কেটে মাটি সরিয়ে ফেলেছে ভূমিদস্যুরা।

স্থানীয়রা প্রভাবশালীদের ভয়ে প্রকাশ্যে কেউ মুখ খুলছে না। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক দোকানদার বাংলানিউজকে বলেন, ‘কালা বাহার নামে এক প্রভাবশালী ব্যক্তি পাহাড়ের মাটি কাটছেন। রাতের বেলা স্কেভেটর দিয়ে মাটি কাটেন। প্রভাবশালী হওয়ায় কেউ তার বিরুদ্ধে কিছু বলেনা। ’

বায়েজিদের চন্দ্রনগর এলাকায় পাহাড় কেটে সমতল।  ছবি: বাংলানিউজ

মো. বাহার উদ্দিন প্রকাশ কালা বাহার পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সাবেক ছাত্রলীগ নেতা পরিচয় দেন বলে জানা গেছে। তিনি নগর আওয়ামী লীগের শীর্ষ এক নেতার নাম ভাঙিয়ে পাহাড় কাটছেন বলেও তথ্য দেন স্থানীয় কয়েকজন।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে বাহার উদ্দিনের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেন নি। ক্ষুদে বার্তা পাঠালেও তিনি কোনো উত্তর দেন নি।

পরিবেশ অধিদফতর চট্টগ্রাম মহানগরের পরিচালক আজাদুর রহমান মল্লিক বাংলানিউজকে বলেন, ‘চন্দ্রনগর এলাকায় পাহাড় কাটার বিষয়ে জানা নেই। দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ’

এদিকে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় পরিবেশ অধিদফতরের মহাপরিচালক বরাবর পাঠানো এক ইমেইলে চন্দ্রনগর এলাকায় পাহাড় কাটার বিষয়ে অভিযোগ করেন স্থানীয় বাসিন্দা শিহাব উদ্দিন। শিহাব উদ্দিন অভিযোগ করেন, রাতের বেলা পাহাড় কাটার বিষয়ে প্রশাসন জানলেও নিরব ভূমিকা পালন করছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শনের অনুরোধ জানান তিনি।

অভিযোগের প্রেক্ষিতে পরিবেশ অধিদফতরের মহাপরিচালক জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন। তবে এখনও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

শিহাব উদ্দিনের অভিযোগের বিষয়ে মহাপরিচালক দফতর থেকে কোনো নির্দেশনা পাননি বলে জানান চট্টগ্রাম মহানগরের পরিচালক আজাদুর রহমান মল্লিক।

পরিবেশ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, একই পাহাড়ের অংশ বিশেষ কাটার অপরাধে ২০১৮ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি মো. বাহার উদ্দিনসহ দুইজনের নামে বায়েজিদ বোস্তামি থানায় মামলা দায়ের হয়। ওই মামলায় তাদের দুইজনকে অভিযুক্ত করে ২০১৮ সালের ৮ এপ্রিল আদালতে অভিযোগপত্র দেন পরিবেশ অধিদফতরের পরিদর্শক নাজনীন সুলতানা নীপা।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৫ ঘণ্টা, মার্চ ১৭, ২০১৯
এসকে/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।