ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১, ০২ মে ২০২৪, ২২ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

চবি উপাচার্য ও ৮ শিক্ষকের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৫৪ ঘণ্টা, মার্চ ১১, ২০১৯
চবি উপাচার্য ও ৮ শিক্ষকের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ

চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) ‘বঙ্গবন্ধু চেয়ার’ পদে উপাচার্যের যোগদান নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা আট সিনেট সদস্যের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ এনেছেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী। এদিকে উপাচার্যের বিরুদ্ধেও অনিয়ম সংবাদ সম্মেলনে প্রকাশ করার হুমকি দিয়েছেন ওই আট সিনেট সদস্য।

রবিবার (১০ মার্চ) দুপুরে উপাচার্যের সম্মেলন কক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মরত সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভা করেন উপাচার্য ।

সেখানে আট সিনেট সদস্যের বিরুদ্ধে গবেষণায় জালিয়াতি, অনৈতিকভাবে শিক্ষক নিয়োগ, কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা  ও ছাত্রসংগঠনের মধ্যে গ্রুপিং সৃষ্টিসহ আরও নানা অভিযোগ তুলে ধরেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী।

উপাচার্য বলেন, গত ৭ মার্চ বেতন-ভাতা ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা না নেওয়ার শর্তে আমি এ পদে দায়িত্ব গ্রহণ করি। এ বিষয়ে গুটিকয়েক শিক্ষক বঙ্গবন্ধু চেয়ার পদে আমার যোগদানকে মেনে নিতে পারছেন না।

এ বিশ্ববিদ্যালয়ে অতীতে প্রচলিত সবধরণের অনৈতিক কর্মকাণ্ড, সুযোগ-সুবিধা প্রদান আমি বন্ধ করে দিয়েছি। এ কারণেই আমার বিরুদ্ধে কিছু শিক্ষকসহ কুচক্রিমহল সক্রিয় রয়েছে।

তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে আটজন শিক্ষক বিবৃতি দিয়েছেন তাদের অনেকেই গবেষণায় জালিয়াতির দায়ে অভিযুক্ত। কেউ শর্তসাপেক্ষে পদোন্নতি নিয়ে সে শর্ত পূরণ করেননি। একজন তার স্ত্রীকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিতে নানাভাবে অনৈতিক চাপ দিয়েছেন। অথচ শিক্ষক নিয়োগ বোর্ডে তার স্ত্রী নিজের যোগ্যতা দেখাতে পারেননি। তাই তিনি শিক্ষক হতে পারেননি।

‘অনেকের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ উঠায় তাদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতেও উদ্যোগ গ্রহণ করি। এছাড়াও জামায়াত-শিবিরের এজেন্ডা বাস্তবায়নকারী, সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া ব্যক্তিদের বিষয়ে তদন্ত করায় তারা বঙ্গবন্ধু চেয়ারের বিরোধিতা করে  আমার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন’ বলেন উপাচার্য।

ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, উপযুক্ত শর্ত সাপেক্ষে (বঙ্গবন্ধুর গৌরবময় জীবন, রাজনীতি, আদর্শ ও কীর্তি নিয়ে একাধারে গবেষণা/লিখালিখি) ‘বঙ্গবন্ধু চেয়ার’পদে প্রণয়ন কমিটি আমাকে মনোনীত করেছে। আমাকে মনোনয়ন দেয়ার সুপারিশটি সর্বসম্মতিক্রমে নির্বাহী কমিটি অনুমোদন করে। এ পদে যোগদান বিষয়টি পরবর্তী সিন্ডিকেট সভায় ১৯৭৩ এর অধ্যাদেশে উল্লিখিত বিধান অনুযায়ী রিপোর্ট করা হবে।

অভিযোগের ব্যাপারে কী বলছেন সেই ৮ সিনেট সদস্য

উপাচার্যের বঙ্গবন্ধু চেয়ারে বসা নিয়ে বিরোধীতা করা ৮ সিনেট সদস্যের মধ্যে একজন লোকপ্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক ড. কাজী এস এম খসরুল আলম কুদ্দুসী। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, বঙ্গবন্ধু চেয়ার পদে যোগদানের জন্য যেসব শর্ত প্রযোজ্য সেসব শর্ত উপাচার্য পূরণ করেননি। আমাদের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ দেখানো হচ্ছে তা মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। ‘বঙ্গবন্ধু চেয়ার’ সম্পর্কে আমাদের বিবৃতি উপাচার্য একটিও খন্ডন করতে পারেননি। ’

উপাচার্যের অনিয়মের চিত্র সংবাদ সম্মেলনে প্রকাশ করার হুমকি

উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী সংবাদ সম্মেলন করার পর রোববার (১০ মার্চ) বিকেলে সংবাদ মাধ্যমে আবারও বিবৃতি দেন বঙ্গবন্ধু চেয়ারে উপাচার্যের বসা নিয়ে বিরোধীতা করা সেই ৮ সিনেট সদস্য।

বিবৃতিতে তারা বলেন, উপাচার্য যেসব অভিযোগের কথা বলছেন সেসব অভিযোগ প্রগতিশীল শিক্ষকদের দমন করার অপচেষ্টা। শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করছেন উপাচার্য। ব্যক্তিগত আক্রমণ অব্যাহত রাখলে সংবাদ সম্মেলন করে উপাচার্যের সকল কু-কর্ম ও অনিয়ম তুলে ধরা হবে।

বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারী সিনেট সদস্যরা হলেন- প্রফেসর ড. রাহমান নাসির উদ্দিন, প্রফেসর ড. কাজী এস এম খসরুল আলম কুদ্দুসী, প্রফেসর ড. অলক পাল, প্রফেসর ড. আব্দুল্লাহ আল ফারুক, প্রফেসর এস এস মনিরুল হাসান, প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আবুল মনছুর, প্রফেসর সিরাজ উদ দৌল্লাহ ও মোহাম্মদ ওমর ফারুক রাসেল।

বাংলাদেশ সময়: ২১৪০ ঘণ্টা, মার্চ ১০,  ২০১৯

জেইউ/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।