ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

শেখ হাসিনার মতো প্রজ্ঞাবান রাজনীতিবিদ নেই: নওফেল

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০১৭ ঘণ্টা, মার্চ ১, ২০১৯
শেখ হাসিনার মতো প্রজ্ঞাবান রাজনীতিবিদ নেই: নওফেল বক্তব্য দেন শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল

চট্টগ্রাম: শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেছেন, শত ব্যস্ততার মধ্যেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর ওপরে দালিলিক প্রমাণসহকারে পুস্তকগুলো নিজে রেডি করে প্রকাশ করছেন।

এটা করার মাধ্যমে শেখ হাসিনা জ্ঞানের দিক থেকে, প্রজ্ঞার দিক থেকে, জ্ঞানভিত্তিক অভিজ্ঞতার দিক থেকে এমন একটা পর্যায়ে পৌঁছে গেছেন এখন আমার মনে হয়, শঙ্কা হয় তিনি যদি তার পর্যায়ে না থাকেন, তার নেতৃত্বে না থাকেন আমাদের কিন্তু আশপাশে তার ৫০ ভাগের আশপাশে কোনো প্রজ্ঞাবান রাজনীতিবিদ নেই। এটি হচ্ছে বাস্তবতা।

বঙ্গবন্ধু কন্যা এখন সেই পর্যায়ে পৌঁছে গেছেন।

বৃহস্পতিবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় এমএ আজিজ স্টেডিয়ামের জিমনেসিয়াম প্রাঙ্গণে অমর একুশে বইমেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে শিক্ষা উপমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) ও সৃজনশীল প্রকাশক পরিষদ ১৯ দিনব্যাপী এ বইমেলার আয়োজন করে।

শিক্ষা উপমন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনা ১৬ কোটি মানুষের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। অত্যন্ত সমস্যাসংকুল দেশকে একটি পর্যায়ে নিয়ে এসেছেন। আমরা দেখছি, প্রতিদিন কী পরিমাণ ফাইল তিনি পড়ছেন, বই পড়ছেন। তিনি আমাদের বারবার উৎসাহিত করেন যে তোমাদের পড়তে হবে এবং লিখতে হবে। রাজনীতিবিদরা একসময় লিখতেন কীভাবে আদর্শ বাস্তবায়ন করা যায়। এখন আমরা শুধু স্লোগান দিয়ে, আরেকটা প্রবণতা হয়েছে আমি অমুকজনের সঙ্গে রাজনীতি করি। এ ধরনের মনোবৃত্তি প্রকাশের মাধ্যমে রাজনীতিকে সীমিত করে ফেলছি। রাজনীতি হচ্ছে নীতিনির্ধারণী চিন্তাভাবনা। এর জন্য বই পড়ার প্রয়োজন আছে। বই পড়ার ও লেখার কোনো বিকল্প নেই।  

ব্যারিস্টার নওফেল বলেন, এ বইমেলা আয়োজন করার মাধ্যমে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এবং সম্পৃক্ত আয়োজকরা একটি বার্তা দিয়েছেন চট্টগ্রামবাসীর কাছে। সেটি হচ্ছে আগামীর জ্ঞাননির্ভর অর্থনীতিতে আমাদের মানসিক যে গুণগত পরিবর্তনের প্রয়োজন আছে সেই পরিবর্তনের সঙ্গে তারা সম্পৃক্ত আছেন, থাকবেন। সেই জন্য তাদের ধন্যবাদ জানাই।

বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা দায়িত্ব নেওয়ার পর চট্টগ্রাম, তৎসংলগ্ন অঞ্চলসহ সারা বাংলাদেশে অনেক অবকাঠামোগত উন্নয়ন হচ্ছে। কিন্তু সেই অবকাঠামোগত উন্নয়নের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে আমাদের মনোজগতের উন্নয়ন হচ্ছে কিনা সেই বিষয়টি এখন ভাবতে হবে।   

আমি আহ্বান জানাব, আগামীর জ্ঞাননির্ভর অর্থনীতি কিন্তু শুধু ভোগবাদী প্রযুক্তি (কনজিউমার টেকনোলজি) শুধু ভোগ করার জন্য। কিন্তু মনোজগতকে সমৃদ্ধ করার জন্য, জ্ঞান, প্রজ্ঞা, অভিজ্ঞতা ও শিক্ষা সমৃদ্ধ করতে এখন পর্যন্ত পশ্চিম থেকে পূর্বে বই ও লেখকের আইডিয়ার কোনো বিকল্প নেই। পাঠ্যবইয়ের পাশাপাশি চিন্তাশীল, আদর্শের, ইতিহাসের অনেক ধরনের বই আছে। বই পড়ার মাধ্যমে আমাদের যে প্রজ্ঞা-জ্ঞান বাড়ে সেটি কিন্তু ভোগবাদী প্রযুক্তি ব্যবহার করে হবে না।

আমরা ভোগবাদী প্রযুক্তির যে গ্যাড়াকলে পড়ছি তা থেকে উত্তরণ আমাদের পেতেই হবে যদি জ্ঞাননির্ভর অর্থনীতিতে অবদান রাখতে হয়। নয়তো আমরা জ্ঞানের পঙ্গুত্বে আমরা পড়ে যাব। ডিজেবল নলেজ সৃষ্টি হবে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করছি ঠিক কিন্তু বাস্তবে মানুষের সঙ্গে যোগাযোগের যে দক্ষতা, গুণ তা হারিয়ে ফেলছি। ভার্চুয়াল রিয়েলিটির জ্ঞান দিয়ে আমি কিন্তু বাস্তব জীবনের সমস্যা সমাধান করতে পারবো না। সেটিই হচ্ছে বাস্তবতা।

বইমেলায় সঠিকভাবে ব্যবহার করতে হেবে। বইমেলায় এসে বুক ওয়ার্মিং করতে হবে। বই কিনে সাজিয়ে রাখলে হবে না। বই পড়তে হবে।  

তিনি বলেন, চট্টগ্রামের মানুষ একসময় ভাবতাম শুধু ব্যবসা-বাণিজ্য করে এগোবো। ভবিষ্যতের ব্যবসা-বাণিজ্য যে জ্ঞাননির্ভর ব্যবসা হবে সেটি আজ উপলব্ধি করতে পারছি। সেই ভবিষ্যৎ চট্টগ্রামে অবদান রাখতে বইমেলার মতো সৃষ্টিশীল জ্ঞাননির্ভর আয়োজন। এর আগে এত জনসমাগম হয়নি চট্টগ্রামের বইমেলায়। এ ধরনের বইমেলারও আয়োজন হয়নি। এর জন্য ধন্যবাদ জানাই আয়োজকদের।  

বক্তব্য দেন মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন।  সভাপতির বক্তব্যে চসিক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, আমাদের প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে। আশাতীত সাড়া পেয়েছি। প্রকাশকদের আক্ষেপ, পাঠকের খরা দূর হয়েছে। এ বইমেলার পরিসর, কলবর বাড়াতে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আগামীতে এ মাঠের পাশের সড়কের দু'পাশেও বইয়ের স্টল করা হবে।

তিনি বলেন, এবারের মেলায় যাদের সম্পৃক্ত করতে পারিনি তাদের আগামীতে করব। আশা করবো আগামী বছর আরও মানসম্পন্ন বই লেখা ও প্রকাশ করা হবে। এবার ঢাকার ৬০ জন প্রকাশক এসেছেন। সবাই সন্তুষ্ট।

বই সত্যিকারের মানুষ হতে সাহায্য করে। দেশ বিনির্মাণে সহায়তা করে। বই পড়ে কূপমণ্ডূকতা, পশ্চাৎপদতামুক্ত হওয়া যায়। তরুণ প্রজন্ম জীবনকে অর্থবহ করতে, শাণিত করতে বই পড়তে হবে।

স্বাগত বক্তব্যে চসিকের প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা সুমন বড়ুয়া বলেন, এ বইমেলার প্রাপ্তি প্রত্যাশাকে ছাড়িয়ে গেছে। মিডিয়া এ মেলা নিয়ে সংবাদ-প্রতিবেদন প্রকাশ ও প্রচার করায় পাঠকসমাগম বেড়েছে। ছুটির দিনগুলোতে উপচে পড়া ভিড় ছিল। প্রচুর বই বিক্রি হয়েছে।

প্রফেসর হাসিনা জাকারিয়া বেলা বলেন, একেকটি বই ঝরনাধারার মতো। বই না পড়লে স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধের কথা কীভাবে জানব? তাই পাড়ায় পাড়ায় পাঠাগার গড়ে তুলতে হবে। দেশকে এগিয়ে নিতে হলে বই পড়ার বিকল্প নেই।

সৃজনশীল প্রকাশক পরিষদের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা শাহ আলম নিপু বলেন, দীর্ঘদিন দাবি জানিয়েছি চট্টগ্রামে সম্মিলিত বইমেলা হোক। এতদিন একই মাসে কয়েকটি বইমেলা করে নিজেদের, পাঠকদের ঠকিয়েছি। এবার বইমেলা পরিণত হয়েছিল প্রাণের মেলায়।

বইমেলার আহ্বায়ক নাজমুল হক ডিউক বলেন, এ বইমেলা সফল করতে সচেষ্ট ছিলেন মেয়র। এ বইমেলাকে প্রেরণার উৎস হিসেবে দেখতে চাই। বইমেলা পথ দেখাবে।

>> ‘ছোট মন আর বড় জাতি একসঙ্গে হয় না’

বাংলাদেশ সময়: ১৯০৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০১৯
এআর/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad
welcome-ad