শিশু থেকে বৃদ্ধ সবাই এসেছিলেন স্মৃতির মিনারে ভাষা শহীদদের ফুলেল শ্রদ্ধা জানাতে। সবগুলো পথ এসে মিশে গেছে সেখানে।
প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তাদের শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে ভোরের আলো ছড়িয়ে পড়ার আগেই অমর একুশের স্লোগান আর গানে মুখরিত হয়ে ওঠে শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ। এরপর ফুলে ঢেকে যায় শহীদ বেদি।
১৯৫২ সালের এই দিনে ভাষার জন্য যারা প্রাণ দিয়েছেন, তাদের প্রতি ভালোবাসা জানাতে নামলো জনস্রোত।
দীর্ঘ লাইন পেরিয়ে শহীদ মিনারে আসা বিভিন্ন সংগঠনের এ জনস্রোত সামলাতে হিমশিম খেতে হয় কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যদের।
গর্ব আর শোকের এই দিনটিতে বাঙালি স্মরণ করেছে রফিক, জব্বার, সফিউর, বরকতদের। বুকে ছিল প্রত্যয় ‘একুশ মানে মাথা নত না করা’।
অমর একুশের সেই কালজয়ী গান ‘আমার ভায়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি..” যখন মাইকে বাজছিল, তা শুনে গাইছিলেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী। তারা বললেন, এ গান যে অন্তরে গেঁথে আছে।
শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে আবৃত্তিশিল্পী রবীন কর্মকার বললেন, পৃথিবীর বুকে ভাষার জন্য রক্ত দিয়ে, অকাতরে জীবন বিলিয়ে দেওয়ার ইতিহাস রয়েছে একমাত্র বাঙালি জাতির। একুশে ফেব্রুয়ারি তাই বাঙালির চেতনার প্রতীক।
‘একুশের শহীদদের স্থান বাঙালির হৃদয়ের মর্মমূলে। অমর একুশে তাই আত্মত্যাগের অহংকারে ভাস্বর একটি দিন; জেগে ওঠার প্রেরণা। দেশমাতৃকার প্রয়োজনে আত্মোৎসর্গ করার শপথ গ্রহণের দিন। ’
অমর একুশে আজ বাঙালির দিশা, হৃদয়াপ্লুত ঐশ্বর্য, প্রাণের স্পন্দন। শহীদদের শোণিতধারায় যে আলোকিত পথের উন্মোচন হয়েছিল, সেই পথ ধরে এসেছিল স্বাধীনতা। আজ আত্মমর্যাদায় সমুন্নত এক জাতি হিসেবে বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর অন্তহীন প্রেরণার নাম একুশে ফেব্রুয়ারি।
একুশ এখন আর কেবল বাঙালির নয়, নয় শুধু বাংলাদেশের-সীমান্ত ছাড়িয়ে দিবসটি হয়ে উঠেছে বিশ্বমানবের। জাতিসংঘের সব সদস্য দেশ এই দিনে নিজ নিজ মাতৃভাষার কথা স্মরণ করে, ভালোবাসা জানায় বাংলা ভাষার প্রতি।
বাংলাদেশ সময়: ১৪২৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০১৯
এসি/টিসি