ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

মাদক মামলা নিয়ে ‘বিপাকে’ পুলিশ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৩৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০১৯
মাদক মামলা নিয়ে ‘বিপাকে’ পুলিশ পুলিশ-ম্যাজিস্ট্রেসি কনফারেন্সে বক্তব্য দেন চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কামরুন নাহার রুমী

চট্টগ্রাম: মাদক মামলা ও মামলার তদন্ত নিয়ে ‘বিপাকে’ রয়েছেন বলে জানিয়েছেন বিভিন্ন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা।

সোমবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে চট্টগ্রাম আদালতে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ভবনের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত পুলিশ-ম্যাজিস্ট্রেসি কনফারেন্সে এসব কথা জানান তারা।

চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কামরুন নাহার রুমীর সভাপতিত্বে সভায় বিচারাধীন মামলার বিভিন্ন ভুল–ত্রুটি, সমস্যা ও সমাধানের উপায় ও করণীয় নিয়ে আলোচনা হয়।

রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কেপায়েত উল্লাহ তার বক্তব্যে বলেন, ‘মাদক ধরলেও দোষ, না ধরলেও দোষ। না ধরলে বলে পুলিশ মাদক ব্যবসা করে।

ধরলে বলে পুলিশ ঢুকিয়ে দিয়েছে।

মো. কেপায়েত উল্লাহ বলেন, ‘গত কয়েকদিন আগে র‌্যাব আমাকে তিন ট্রাক মদ দিয়েছে। আমি অনেক চেষ্টা করেছি রাউজানে ধ্বংসের জন্য, পারিনি। সেখান থেকে চট্টগ্রামে আনার জন্য ট্রাক ভাড়া করেছি ৩ হাজার ৫০০ টাকা দিয়ে। সেখানে ৩০০ টাকা লেবার খরচ দিয়েছি, এখানে (আদালতে) দিয়েছি ৩০০ টাকা। একটা মামলা তদন্ত করার জন্য ২ হাজার টাকা পান তদন্ত কর্মকর্তা। এখন তিনি এত টাকা কোথায় পাবেন, স্যার? মাদকের গাড়ি ধরার পর আবার রেকার দিয়ে আনতে গেলে ৬ হাজার টাকা খরচ হয়ে যায়। এখন আমরা মাদক নিয়ে বিপাকে আছি, স্যার। ’

আদালতে উপস্থিত হয়ে মামলার সাক্ষীরা ঘটনা সম্পর্কে জানেন না এমন বক্তব্য উপস্থাপন করেন উল্লেখ করে এক বিচারকের দেওয়া বক্তব্যের প্রেক্ষিতে ওসি কেপায়েত উল্লাহ বলেন, ‘সাক্ষী বলেন ঘটনার সময় ছিলেন না, পুলিশ ধরে নিয়ে এসেছে। কয়জন সাক্ষী পুলিশ ধরে নিয়ে আসতে পারবে, এটাও তো দেখার বিষয়। সাক্ষী ঘটনার সময় না থাকলে তার নাম-ঠিকানা আমরা কিভাবে পেয়েছি? এমন আছে যে, বাড়ি অন্য জেলায়, রাস্তা-ঘাটে জব্দ তালিকা করার সময় ভুল নাম-ঠিকানা দিয়ে চলে গেছে। এটা ঠিক আছে। কিন্তু লোকাল সাক্ষীদের ঠিকানা তো ঠিক থাকে। তারপরও নানা কারণে এ জাতীয় সাক্ষীরা বৈরী হয়ে যাচ্ছে। ’

কনফারেন্সে উপস্থিত বিচারকদের কাছে বেশকিছু দাবি পেশ করেন মাঠ পর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তারা। টাকার অভাবে অনেক সাক্ষী মামলায় সাক্ষ্য দিতে আসেন না উল্লেখ করে মামলার সাক্ষীদের আদালতে আসা-যাওয়ার জন্য ভাতা প্রদানের দাবিও করেন পুলিশ কর্মকর্তারা।

উপস্থিত বিচারকরা মাদক মামলাসহ অন্যান্য মামলার তদন্ত দ্রুত সময়ের মধ্যে শেষ করতে পুলিশ সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানান।

সভায় অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. রবিউল আলমসহ অন্যান্য বিচারক, চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মাশহুদুল কবীর, জেলা সিভিল সার্জন ডা. আজিজুর রহমান সিদ্দিকী, চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (দক্ষিণ) আফরুজুল হক টুটুল, জেলার বিভিন্ন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই), র‌্যাব-৭, সিআইডি, রেলওয়ে পুলিশ, চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

বাংলাদেশ সময়: ২০১৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০১৯
এসকে/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।