ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

নতুন প্রজন্মের দিকে তাকিয়ে আছে দেশ: ভূমিমন্ত্রী

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮১৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০১৯
নতুন প্রজন্মের দিকে তাকিয়ে আছে দেশ: ভূমিমন্ত্রী মানবিক মেলা উদ্বোধন করেন ভূমিমন্ত্রী সহ অতিথিরা। ছবি: সোহেল সরওয়ার

চট্টগ্রাম: ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ বলেছেন, নতুন প্রজন্মের চিন্তা-চেতনা যদি আধুনিক না হয়, তাদের ভেতরে যদি মানবিকতা না থাকে, তাহলে দেশ এগিয়ে যাবে না। সুতরাং দেশকে এগিয়ে নিতে নতুন প্রজন্মকে এসব গুণ অর্জন করতে হবে।

শুক্রবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) দৈনিক পূর্বকোণ আয়োজিত ‘মানবিক মেলা’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

নগরের নাসিরাবাদ সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এ মেলা আয়োজন করা হয়েছে।

এতে ৫০টি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা অংশ নিয়েছে।

করপোরেট সোশ্যাল রেসপন্সিবিলিটি (সিএসআর)’র আওতায় সামাজিক দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করতে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে করমুক্ত সুবিধা দেয়া হচ্ছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, সিএসআরের মাধ্যমে সরকার চেষ্টা করছে সামাজিক দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করতে।

যারা এ তহবিলে সহায়তা করছে, সরকার তাদেরকে করমুক্ত সুবিধা দিচ্ছে।

পূর্বকোণ সবসময় ব্যতিক্রমী কাজ করতে চায় জানিয়ে সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ বলেন, ‘যারা এ প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে জড়িত, তাদের ভেতরে সৃজনশীলতা রয়েছে। সবসময় ভিন্নভাবে চিন্তা ভাবনা করতে চায় তারা। ’

মানবিক মেলায় বক্তব্য দেন ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী।  ছবি: সোহেল সরওয়ারভূমিমন্ত্রী বলেন, প্রতিটি প্রজন্মকে এগিয়ে আসতে হবে সমাজকে বিনির্মাণের জন্য। তবেই এ সমাজ সভ্যদের বসবাস উপযোগী হবে।

বছরখানেক ধরে পূর্বকোণ পত্রিকায় ‘পরিবর্তনের কারিগর’ শিরোনামে ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশ হচ্ছে। যারা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা হিসেবে কাজ করছে, মূলত তাদেরকে নিয়ে এ আয়োজন।

মন্ত্রী বলেন, ‘এ পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত ইউসুফ চৌধুরী একজন সম্মানিত ব্যক্তি। চট্টগ্রামের জন্য তার যে অবদান, এ জনপদের মানুষ সেটি আজীবন স্মরণ করবে। তারই ছেলে স্থপতি তসলিম উদ্দিন চৌধুরী সবসময় ভালো কাজের অনুপ্রেরণা দিতেন। ’

‘মানবিক মেলা সম্পূর্ণ একটি নতুন ফরমেট। চট্টগ্রামে অনেক সংগঠন স্ব স্ব অবস্থান থেকে সমাজের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। কিন্তু তাদের কাজগুলো জনসম্মুখে আনার সুযোগ হয়নি। পূর্বকোণ কর্তৃপক্ষ সেটি করে দিয়েছে। একই ছাদের নিচে ৫০টি সংগঠনকে একত্রে এনেছে তারা। ’

শুভেচ্ছা বক্তব্যে পূর্বকোণ সম্পাদক ডা. রমিজ উদ্দিন চৌধুরী বলেন, দৈনিক পূর্বকোণ চট্টগ্রামের উন্নয়ন ও আলোকিত সমাজ গঠনে নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এরমধ্যে চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি কলেজ থেকে ভেটেরিনারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা, ডেইরি শিল্পের বিপ্লব, নগরের বিলবোর্ড উচ্ছেদ পূর্বকোণের প্রচেষ্ঠারই ফসল। তারই ধারাবাহিকতায় এই মানবিক মেলার আয়োজন।

মানবিক মেলায় জাতীয় পতাকা নিয়ে সমবেত শিক্ষার্থীরা।  ছবি: সোহেল সরওয়ারতিনি বলেন, পূর্বকোণ বছরব্যাপী ‘পরিবর্তনের কারিগর’ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পরিবর্তনের কারিগরদের সার্বিক কর্মকাণ্ড তুলে ধরা, তাদেরকে এক মঞ্চে সমবেত করা এবং সমাজ উন্নয়নে অন্যদের আগ্রহী করে তুলেছে।

বিত্তবানদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এই মেলায় এসে আপনারা দেখুন, সমাজের বিভিন্ন স্তরে অসংখ্য সামাজিক সংগঠন সমাজের জন্য কাজ করছে। আপনারা তাদের পাশে দাঁড়ান। সহযোগিতা করে সমাজ পরিবর্তন এবং সমাজের কল্যাণে অংশীদার হওয়ার সুযোগ নিন।

কর আপিল ট্রাইব্যুনালের কমিশনার বাদল সৈয়দ বলেন, চট্টগ্রামে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা মানবিক কাজ করে এমন সব সংগঠনকে একটি নির্দিষ্ট দিনে, নির্দিষ্ট ছাদের নিচে এক করে পূর্বকোণ তাদের একে অপরের সঙ্গে যোগসূত্রের সৃষ্টি করেছে। সেজন্য আমরা কৃতজ্ঞ।

তিনি বলেন, পরম করুণাময় ইচ্ছে করলে আমাদের কুকুর, বিড়াল করে পৃথিবীতে পাঠাতে পারতেন। কিন্তু তিনি তা না করে আমাদের সৃষ্টির সেরা জীব করে পাঠিয়েছেন। শুধুমাত্র মানুষ হিসেবে জন্মানোর ঋণ শোধ করতে আমাদের এক জীবন কেটে যাওয়ার কথা। এই ঋণ যদি শোধ করা না যায়, এই জীবন বৃথা।

বিকেলে প্রেরণাদায়ক বক্তব্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, চট্টগ্রামের সাহসী পুরুষ মরহুম মোহাম্মদ ইউসুফ চৌধুরী। যাকে আমরা চাচা বলে ডাকতাম। চট্টগ্রামকে নান্দনিক ও বাণিজ্যিক রাজধানী করার জন্য তিনি সাহসী পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। বৃহত্তর চট্টগ্রাম উন্নয়ন সংগ্রাম কমিটির মাধ্যমে আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন।

তরুণদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ইন্টারনেটের সঠিক ব্যবহার করলে আমরা অনেক কিছু পেতে পারি। আবার অপব্যবহার করলে ধ্বংস অনিবার্য। প্রতিদিন ঘুমাতে যাওয়ার আগে অন্তত পাঁচ মিনিট চোখ বন্ধ করে নিজের দুর্বলতা, সম্ভাবনা, ভবিষ্যত নিয়ে ভাবো। শর্ট অ্যানালাইসিস করো। জীবন বদলে যাবে।

বিজিসি ট্রাস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. সরোজ কান্তি সিংহ হাজারী বলেন, তোমাদের মধ্যে অপার সম্ভাবনা আছে। তবে বড় হয়ে কে কী হবে সেটা কেউ বলতে পারো না। সেটা ভালোও হতে পারে, আবার খারাপও হতে পারে। এটা নির্ভর করবে তোমাদের উপর। এ জন্য লক্ষ্য ঠিক করে, নিজেকে উন্নত করার চেষ্টা থাকতে হবে। কোনো জায়গায় থেমে থাকা যাবে না। হতাশ হওয়া যাবে না।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পূর্বকোণ লিমিটেডের চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন চৌধুরী, শুলকবহর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. মোরশেদ আলম, দৈনিক পূর্বকোণ এর চীফ রিপোর্টার নওশের আলী খান, সিনিয়র সাব এডিটর মোরশেদ আলম প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন জেবুন নাহার শারমিন ও মাসুম বিল্লাহ আরিফ।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৩০ ঘণ্টা, আপডেট: ১৮০০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০১৯
এসইউ/এমআর/এসি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad