ইতোমধ্যে প্রায় পাঁচ একর জায়গা অধিগ্রহণ হয়েছে। মূল শোধনাগার নির্মাণের জন্য ৪১ একর জায়গা অধিগ্রহণের প্রক্রিয়া প্রায় শেষ হয়েছে।
মূলত, দক্ষিণ চট্টগ্রামে পানি সরবরাহের জন্য চট্টগ্রাম ওয়াসা ভাণ্ডালজুড়ি পানি সরবরাহ প্রকল্পটি হাতে নেয়। পাশাপাশি কর্ণফুলী নদীর তীরে গড়ে ওঠা শিল্প-কারখানাগুলোতে এখান থেকে পানি সরবরাহ করা হবে।
প্রকল্পটি ২০১৬ সালের ৫ জানুয়ারি একনেকে অনুমোদন পায়। প্রকল্পের মেয়াদ ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। ব্যয় ধরা হয়েছে এক হাজার ৩৬ কোটি ৩০ লাখ টাকা। এর মধ্যে কোরিয়া ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট অব কো-অপারেশন ফান্ড (কেইডিসিএফ) এ প্রকল্পে ঋণ দিচ্ছে ৭৫৪ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। অবশিষ্ট টাকার মধ্যে সরকার ২৬১ কোটি ৬৪ লাখ এবং চট্টগ্রাম ওয়াসা ব্যয় করবে ২০ কোটি টাকা।
তবে শুরু থেকে ভূমি জটিলতায় প্রকল্পের কাজ আটকে যায়। ফলে অনুমোদন পাওয়ার আড়াই বছর পরেও কাজ শুরু করা যায়নি।
প্রকল্প বাস্তবায়নের মেয়াদের পাশাপাশি ব্যয়ও বাড়বে বলে বাংলানিউজকে জানিয়েছেন ওয়াসার নির্বাহী প্রকৌশলী ও প্রকল্প পরিচালক মুহাম্মদ মাহবুব আলম।
তিনি বলেন, প্রকল্পের কারিগরি ও আর্থিক প্রস্তাব তৈরি করা হয়েছে। প্রস্তাব দুটি দাতা সংস্থার অনুমোদনের অপেক্ষায়। এরপর মন্ত্রণালয় চূড়ান্ত অনুমোদন করবে।
মুহাম্মদ মাহবুব আলম বলেন, ‘প্রস্তাব দুটি মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন সাপেক্ষে ভাণ্ডালজুড়ি পানি সরবরাহ প্রকল্পের মূল কাজ শুরু হবে। এ কাজ শেষে হতে তিন-চার মাস লাগবে। সে অনুযায়ী জুনে কাজ শুরুর সম্ভাবনা বেশি। ’
ওয়াসার তথ্যমতে, প্রকল্পের আওতায় দৈনিক ৬০ মিলিয়ন লিটার ক্ষমতাসম্পন্ন পানি শোধনাগার, কনভয়েন্স, ট্রান্সমিশন ও ডিস্ট্রিবিউশন পাইপলাইন এবং দুটি রিজার্ভার নির্মাণ করা হবে।
এজন্য প্রায় ৫০ একর ভূমি অধিগ্রহণ করা হবে। এর মধ্যে শোধনাগার নির্মাণের জন্য লাগবে প্রায় ৪১ একর জায়গা। পাশাপাশি বাকি জায়গা রিজার্ভার ও পাইপলাইন বসাতে ব্যবহার করা হবে।
তবে শোধনাগার নির্মাণের জন্য ৪১ একর জায়গা হস্তগত না হওয়ায় মূল কাজ শুরুতে বিলম্ব হয়েছে বলে প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
প্রকল্প পরিচালক মুহাম্মদ মাহবুব আলম বলেন, শোধনাগার নির্মাণের জায়গার মূল্য জেলা প্রশাসনকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। মালিকরা টাকা নিলে জায়গা বুঝে পাব। এ ছাড়া প্রায় পাঁচ একর জায়গা হস্তগত হয়েছে।
‘তিন ধাপে এ প্রকল্পের কাজ শেষ হবে। প্রথম ধাপে ভাণ্ডালজুড়িতে শোধনাগার নির্মাণ, দ্বিতীয় ধাপে কনভয়েন্স, ট্রান্সমিশন ও ডিস্ট্রিবিউশন পাইপলাইন নির্মাণ হবে। শেষ ধাপে পটিয়া ও কেইপিজেডে রিজার্ভার নির্মাণ করা হবে’ বলেন প্রকল্প পরিচালক।
এদিকে ভূমি নিয়ে জটিলতা কেটে যাওয়া দ্রুত কাজ শুরু হবে জানিয়ে চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী একেএম ফজলুল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, কেইপিজেডের সঙ্গে ভূমি নিয়ে জটিলতা ছিল। শুরুতে ভূমি দিতে রাজি হলেও পরবর্তীতে প্রতিষ্ঠানটি সেটি দেয়নি। এজন্য বাহির থেকে জমি কেনা হচ্ছে।
‘এটি একটি অগ্রাধিকার ভিত্তিক প্রকল্প। তাই দ্রুত কাজ শুরুর চেষ্টা চলছে। এখনো যেসব প্রক্রিয়া বাকি রয়েছে, সেগুলো জটিলতা ছাড়া শেষ হলে বছরের মাঝামাঝি সময়ে মূল কাজ শুরু হবে। ’
বাংলাদেশ সময়: ১০০০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০১৯
এসইউ/এসি/টিসি