ঢাকা, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

ভালো কাজের ‘প্রেরণা’ শিক্ষকদের

মিজানুর রহমান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২১১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৬, ২০১৯
ভালো কাজের ‘প্রেরণা’ শিক্ষকদের থ্যাংকিউ লেটার বা ধন্যবাদ জ্ঞাপন পত্র। ছবি: বাংলানিউজ

চট্টগ্রাম: সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের ভালো কাজে প্রেরণা দিতে ‘থ্যাংকিউ লেটার’ চালু করেছে লোহাগাড়া উপজেলা শিক্ষা অফিস। উপজেলা শিক্ষা অফিসার বা সহকারী শিক্ষা অফিসাররা বিভিন্ন বিদ্যালয়ে আকস্মিক পরিদর্শনে গিয়ে শিক্ষকের সন্তোষজনক কর্মদক্ষতা দেখলেই সংশ্লিষ্ট শিক্ষককে দিচ্ছেন এ ‘থ্যাংকিউ লেটার’।

শিক্ষা অফিসের কর্মকর্তরা জানান, থ্যাংকিউ লেটার বা ধন্যবাদ জ্ঞাপন পত্র দেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট শিক্ষকের কয়েকটি বিষয় দেখা হয়। এর মধ্যে যথাসময়ে বিদ্যালয়ে আসা, শিক্ষা পদ্ধতি ও শিক্ষা সহায়ক উপকরণ ব্যবহার করে প্রাণবন্ত শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালনা করা, পিছিয়ে পড়া ও বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিক্ষার্থীদের সহায়তা করা এবং বিদ্যালয়ে নিয়মিত উপস্থিত থাকার বিষয়গুলো অন্যতম।

আকস্মিক পরিদর্শনে গিয়ে এসব মানদণ্ড পূরণ করা শিক্ষক পেলেই তাকে থ্যাংকিউ লেটার বা ধন্যবাদ জ্ঞাপন পত্র দেওয়া হচ্ছে। বৃহস্পতিবার (৩১ জানুয়ারি) থেকে এ কার্যক্রম শুরু করে উপজেলা শিক্ষা অফিস।

জানা গেছে, লোহাগাড়া উপজেলায় প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে ১০৩টি। এর মধ্যে বড়হাতিয়া ইউনিয়নে ৯টি, আমিরাবাদ ইউনিয়নে ১৮টি, পদুয়া ইউনিয়নে ১৪টি, চরম্বা ইউনিয়নে ১২টি, কলাউজান ইউনিয়নে ৯টি, লোহাগাড়া সদরে ১১টি, পুঁটিবিলা ইউনিয়নে ৭টি, চুনতি ইউনিয়নে ১৩টি এবং আধুনগর ইউনিয়নে ১০টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে।

এসব প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪২ হাজার শিক্ষার্থীকে পড়ান ৭৫০ জন শিক্ষক। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার, শনিবার, রোববার, সোমবার এবং মঙ্গলবার (৫ ফেব্রুয়ারি) ৫ দিনে ১০ জন শিক্ষককে এ ধন্যবাদ পত্র দেওয়া হয়েছে।

সহকারী শিক্ষা অফিসার ওমর ফারুক বাংলানিউজকে জানান, আমরা যখন বিভিন্ন বিদ্যালয় পরিদর্শনে যাই, না চাইলেও বাস্তবতার নিরিখে শিক্ষকদের কঠিন কথা বলতে হয়। শিক্ষকরা যখন বিলম্বে বিদ্যালয়ে আসেন তখন হাজিরা খাতায় লেইট মার্ক দিতে হয়। বিদ্যালয় অপরিস্কার দেখলে মৃদু তিরস্কার করতে হয়। অনিয়ম গুরুতর দেখলে বাধ্য হয়ে শোকজ করতে হয়। এসব কারণে অনেক শিক্ষক কষ্ট পান।

তিনি বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা মানুষ গড়ার আসল কারিগর। তাই তাদেরকে শুধু খারাপ কাজের জন্য শাস্তি কিংবা তিরস্কার নয়, ভালো কাজের জন্য প্রেরণা ও পুরস্কারও দেওয়া উচিত। এ চিন্তা থেকেই ভালো কাজের জন্য থ্যাংকিউ লেটার বা ধন্যবাদ জ্ঞাপন পত্র দিয়ে উৎসাহিত করার চেষ্টা করছি। কারণ আমরা মনে করি ‘রিকগনিশন ইজ দ্যা গ্রেটেস্ট মোটিভেটর’।

‘শিক্ষকদের প্রেরণা দিতে এটি প্রাথমিক উদ্যোগ। পর্যায়ক্রমে লেটারের পরিবর্তে শিক্ষকদের সনদ ও অর্থ পুরস্কার দেবো আমরা। ’ যোগ করেন ওমর ফারুক।  

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার নাসরিন সুলতানা বাংলানিউজকে জানান, প্রথাগত পদ্ধতিতে শুধু শাস্তি দিয়ে প্রাথমিক শিক্ষায় শৃঙ্খলা আনা সম্ভব নয়। এর জন্য মোটিভেশনাল কার্যক্রমের মতো শিক্ষা বিজ্ঞানের ধারনাগুলো আমাদের প্রয়োগ করতে হবে। ঠিকভাবে দায়িত্ব পালনের জন্য থ্যাংকিউ লেটার বা ধন্যবাদ জ্ঞাপন পত্র দেওয়া এ ধরনেরই একটি ধারনা।

তিনি বলেন, শিক্ষকদের ভালো কাজের প্রেরণা দিতে লোহাগাড়া শিক্ষা অফিস প্রশংসনীয় উদ্যোগ নিয়েছে। এটি পুরো বাংলাদেশের প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য একটি মডেল। এর মাধ্যমে শিক্ষকরা যেমন অনুপ্রাণিত হবেন, তেমনি প্রাথমিক শিক্ষাও এগিয়ে যাবে।

বাংলাদেশ সময়: ২১১০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৫, ২০১৯
এমআর/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।