সোমবার (৪ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টায় শুরু হওয়া এ অভিযান চলে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। এতে নেতৃত্ব দেন পতেঙ্গা সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) তাহমিলুর রহমান।
আরও খবর>>
** কর্ণফুলী পাড়ের স্থাপনা গুঁড়িয়ে দিচ্ছে প্রশাসন
ম্যাজিস্ট্রেট মো. তৌহিদুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, সকাল ১০টায় কর্ণফুলীর সদরঘাটের লাইটার জেটি এলাকা থেকে উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়।
তিনি জানান, প্রথম দিনের অভিযানে ৫০টি অবৈধ স্থাপনা গুঁড়িয়ে দিয়েছে প্রশাসন। এ ছাড়াও ৩০টি অবৈধ স্থাপনা দখলদাররা নিজ থেকেই সরিয়ে নিয়েছেন।
ম্যাজিস্ট্রেট মো. তৌহিদুল ইসলাম বলেন, হাই কোর্টের রায় অনুযায়ী অভিযান চালানো হচ্ছে। যত দিন সব স্থাপনা উচ্ছেদ না হবে ততদিন অভিযান চলবে। সদরঘাট থেকে বারিক বিল্ডিং পর্যন্ত ২০০ অবৈধ স্থাপনা আছে। এসব স্থাপনা উচ্ছেদ করে ১০ একর জমি উদ্ধার হবে। কে বড়, কে ছোট-সেটি বিবেচ্য নয়। সব অবৈধ স্থাপনেই উচ্ছেদ করা হবে।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) তাহমিলুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, কর্ণফুলীর অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ দীর্ঘদিনের চ্যালেঞ্জ ছিলো। শেষ পর্যন্ত আমরা সফল হয়েছি। উচ্ছেদ অভিযান শুরু করতে পেরেছি। প্রতিটি অবৈধ স্থাপনা হাই কোর্টের আদেশে ‘নির্দয়ভাবে’ গুঁড়িয়ে দেওয়া হবে।
এর আগে সকাল ১০টায় উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়। এতে র্যাব, পুলিশ, ফায়ার সার্ভিসসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্য অংশ নেন। ১০০ শ্রমিক উচ্ছেদ অভিযানে অবৈধ স্থাপনা ভাঙার কাজ করেন।
২০১০ সালের ১৮ জুলাই পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস পিস ফর বাংলাদেশ এর পক্ষে জনস্বার্থে করা এক রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে হাই কোর্টের একটি বেঞ্চ কর্ণফুলী নদী দখল, মাটি ভরাট ও নদীতে সব ধরনের স্থাপনা নির্মাণ বন্ধের নির্দেশ দেন। একইসঙ্গে স্থানীয় প্রশাসনকে পরবর্তী ছয় মাসের মধ্যে নদীর প্রকৃত সীমানা নির্ধারণ করে প্রতিবেদন দিতে বলেন।
আদালতের নির্দেশের পর চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন ২০১৪ সালের ৯ নভেম্বর কর্ণফুলীর দুই তীরে সীমানা নির্ধারণের কাজ শুরু করে। নগরের নেভাল অ্যাকাডেমি সংলগ্ন নদীর মোহনা থেকে মোহরা এলাকা পর্যন্ত অংশে ২০১৫ সালে জরিপের কাজ শেষ করা হয়।
জরিপে নদীর দুই তীরে প্রায় আড়াই হাজার অবৈধ স্থাপনা চিহ্নিত করে জেলা প্রশাসন। প্রতিবেদনটি ২০১৫ সালের ৯ নভেম্বর উচ্চ আদালতে দাখিল করা হয়।
এরপর ২০১৬ সালের ১৬ আগস্ট হাই কোর্টের একটি বেঞ্চ কর্ণফুলীর দুই তীরে গড়ে ওঠা স্থাপনা সরাতে ৯০ দিনের সময় বেঁধে দেন। ২০১৭ সালের ২৫ নভেম্বর উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য এক কোটি ২০ লাখ টাকা অর্থ বরাদ্দ চেয়ে ভূমি মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন।
এরপর আরও কয়েকবার অর্থ বরাদ্দ চেয়ে ভূমি মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিলেও সাড়া মেলেনি। ফলে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযানও শুরু করতে পারেনি জেলা প্রশাসন।
সর্বশেষ অর্থ বরাদ্দের বিষয়ে ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের আশ্বাসে সোমবার (৪ ফেব্রুয়ারি) উচ্ছেদ অভিযান শুরু করে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন।
বাংলাদেশ সময়: ২১৫০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৪, ২০১৯
এমআর/টিসি