ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

তদন্ত কর্মকর্তার সঙ্গে আসামির সেলফি

সরওয়ার কামাল, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১১২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৫, ২০১৯
তদন্ত কর্মকর্তার সঙ্গে আসামির সেলফি এসআই তোফায়েল আহমদের সঙ্গে আসামি হাবিবুর রহমানের সেলফি। ছবিটি হাবিবের টাইমলাইন থেকে নেওয়া।

চট্টগ্রাম: মামলা তদন্ত করতে গিয়ে এক আসামির সঙ্গে সেলফি তুলেছেন তদন্ত কর্মকর্তা হাটহাজারী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. তোফায়েল আহমেদ। সেই সেলফি ফেসবুকে আপলোড দিয়েছেন মামলার ১ নম্বর আসামি মো. হাবিবুর রহমান।

রোববার (৩ ফেব্রুয়ারি) হাটহাজারী মনিয়া পুকুরপাড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

গত ২৮ ডিসেম্বর ২০১৮ হত্যার উদ্দেশ্যে মারধর করে জখম, চুরি ও ভয়ভীতির অভিযোগ এনে মো. হাবিবুর রহমানকে ১ নম্বর আসামি করে ছয়জনের বিরুদ্ধে হাটহাজারী থানায় মামলা দায়ের করেন তৌহিদুল আলম নামে এক ব্যক্তি।

ওই মামলা তদন্তের দায়িত্ব পান হাটহাজারী থানার এসআই মো. তোফায়েল আহমেদ। রোববার ঘটনাস্থল হাটহাজারী মনিয়া পুকুরপাড়ের এনায়েতপুর বাজার এলাকায় যান মামলা তদন্ত করতে।

আর মামলা তদন্তে গিয়ে তিনি আসামির সঙ্গে তুলেছেন সেলফি।

আসামির সঙ্গে সেলফি তোলা ও সেই ছবি ফেসবুকে দেওয়াকে দোষ মনে করেন না এসআই তোফায়েল আহমেদ। উল্টো আসামিদের পক্ষে সাফাই গাইলেন তিনি।

জানতে চাইলে আসামির সঙ্গে ছবি তোলার বিষয়টি স্বীকার করে এসআই তোফায়েল আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, ‘মনিয়া পুকুরপাড় গেছিলাম তখন ছবি তুলছিল আর কি। এটা কোনো ব্যাপার না। বর্তমান ফেসবুকের যুগ তো বুঝেনই। ও তো আগে থেকে পরিচিত। ’

এসআই তোফায়েল আহমদের সঙ্গে আসামি হাবিবের সেলফি।  ছবিটি তোফায়েল আহমদের টাইমলাইন থেকে নেওয়া। পরক্ষণে ছবিটি পূর্বে তোলা বলে দাবি করেন এসআই তোফায়েল আহমেদ। তিনি বলেন, ‘ছবি হলো অনেক আগের। এখন যদি ছাড়ে (ফেসবুকে আপলোড দেয়) কিছু করার আছে নি?’

পরে ছবিটি নতুন করে তোলা স্বীকার করে তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘আসামিরা তো জামিনে আছে। তারা যদি একটা ছবি তোলে তাইলে সমস্যা কী? যদি জামিনে না থাকতো তাইলে সমস্যা হতো। সে কি আর ডাকাতি করছে নাকি? তদন্ত করে রিপোর্ট দিব। ’

পরে ফের যোগাযোগ করে এই প্রতিবেদকের কাছে এসআই তোফায়েল আহমেদ জানতে চান- ফেসবুকে ছবি দেওয়ার বিষয়টি কে বলেছে?

আসামিদের পক্ষে সাফাই গেয়ে এসআই তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘ঘটনা আমি জেনেছি। ঘটনা হলো-বাদি অযথা এদের (আসামি) সঙ্গে ঝামেলা করে। এটা নিয়ে আমি বাজার কমিটির সভাপতি-সেক্রেটারির সঙ্গে কথা বলেছি। ’

এসআই তোফায়েল আহমেদের সঙ্গে ছবি তোলা ও সেই ছবি ফেসবুকে আপলোড দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন আসামি মো. হাবিবুর রহমান।

হাবিবুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, ‘ফেসবুকে ছবি দিলাম তো। ছবি তুললে সমস্যা কোথায়? গতকাল উনি কল দিয়েছিলেন তখন দেখা করেছি। উনি বলেছিলেন ছবি ফেসবুকে না দিতে। আমি আসলে মজা করে দিয়েছি। ’

হাবিবুর রহমান তার ‘আদনান আহমেদ হাবিব’ নামে ব্যবহার করা ফেসবুকে ছবি আপলোড দিয়ে লেখেন-‘হাটহাজারী মডেল থানার এসআই তোফায়েল ভাইয়ের সাথে আড্ডা দেওয়ার সময়। ’

মামলা তদন্তে গিয়ে আসামির সঙ্গে ছবি তোলার বিষয়টি জানালে বিস্ময় প্রকাশ করেন চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (উত্তর) মশিউদ্দৌলা রেজা।

মশিউদ্দৌলা রেজা বাংলানিউজকে বলেন, ‘আসামির সঙ্গে ছবি! এরকম তো হতে পারে না। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৪, ২০১৯
এসকে/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।