ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

জনদুর্ভোগ হবে, তাই সংবর্ধনা নিলেন না হুইপ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২০৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৩, ২০১৯
জনদুর্ভোগ হবে, তাই সংবর্ধনা নিলেন না হুইপ হুইপ সামশুল হক চৌধুরী। ছবি: বাংলানিউজ

চট্টগ্রাম: স্বাধীনতার পর এই প্রথম চট্টগ্রাম থেকে আওয়ামী লীগের হুইপ নির্বাচিত হয়েছেন সামশুল হক চৌধুরী। এ কারণে তার নিজ নির্বাচনী এলাকা পটিয়াসহ চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের মধ্যে আনন্দ-উচ্ছ্বাস ছিলো চোখে পড়ার মতোই।

গেলো কয়েকদিনে আনন্দ মিছিল, মিষ্টি বিতরণ ছাড়াও প্রিয় নেতাকে অভিনন্দন জানিয়ে ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরব ছিলেন সবাই। স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা প্রস্তুতিও নেন, চট্টগ্রাম এলে তাকে ব্যাপক সংবর্ধনা দেওয়ার।

শনিবার (২ ফেব্রয়ারি) দুপুরে তার আগমনকে কেন্দ্র করে ৫ শতাধিক মোটর সাইকেল, ৪ শতাধিক কার-মাইক্রো এবং শতাধিক বাসসহ শোভাযাত্রা নিয়ে কয়েক হাজার নেতা-কর্মী উপস্থিত হন শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। কারও হাতে ফুলের মালা, কেউ দাঁড়িয়ে আছেন ফুলের তোড়া নিয়ে।

 

গার্ড অব অনার নেন সামশুল হক চৌধুরী। তিনি এলেন। সংবর্ধনা আয়োজনের সব প্রস্তুতি দেখলেন। নেতা-কর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানালেন। তবে জনদুর্ভোগ হবে- এ কারণে সংবর্ধনা নিলেন না। সবাইকে সরিয়ে দিয়ে একাই বেরিয়ে পড়লেন বিমানবন্দর থেকে।

এ প্রসঙ্গে হুইপ সামশুল হক চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, জনগণ আমাকে ভোট দিয়ে সংসদে পাঠিয়েছেন তাদের সেবা করার জন্য। আমৃত্যু তাদের সেবা করে যেতে চাই। আমার কোনো কাজে তাদের দুর্ভোগ হোক তা চাই না। ফুলের মালা গলায় দিয়ে ঘুরতে নয়, মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নিতে চাই।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে মহান জাতীয় সংসদের হুইপ নির্বাচিত করেছেন। চট্টগ্রামবাসীকে মূল্যায়ন করেছেন। এ কারণে চট্টগ্রামবাসীর পক্ষ থেকে তার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। নেত্রী জনদুর্ভোগ হয়, এমন কাজ থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। পাশাপাশি মানুষের কল্যাণে কাজ করে যেতে বলেছেন। নেত্রীর নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করবো।

দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, স্বাধীনতার পর এই প্রথম চট্টগ্রাম থেকে আওয়ামী লীগের একজন হুইপ নির্বাচিত হলেন। এ কারণে চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ সর্বস্তরের মানুষের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে আমরা কৃতজ্ঞতা জানাই।

তিনি বলেন, সংসদ সদস্য সামশুল হক চৌধুরী শুধু পটিয়ার নয়, তিনি চট্টগ্রামের আপামর জনসাধারণের নেতা। প্রধানমন্ত্রী তাকে হুইপ নির্বাচিত করে সম্মানিত করেছেন। আমরা তাকে সংবর্ধনা দিয়ে সম্মানিত করতে চেয়েছিলাম।  কিন্তু বিমানবন্দরে আসা যাত্রীদের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে তিনি কোনো সংবর্ধনা নেননি। নেতা-কর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বিমানবন্দর থেকে বিদায় নিয়েছেন।

‘অনেক নেতা-কর্মী নিজেদের আবেগ ধরে রাখতে পারেননি। হাতে থাকা ফুলের পাপড়ি হুইপের গাড়ির দিকে ছুড়ে মারেন। তিনি হাত নেড়ে তাদের অভিবাদনের জবাব দেন। ’ যোগ করেন মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী।

এ সময় সামশুল হক চৌধুরীর সঙ্গে তার ছেলে এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় অর্থ উপ কমিটির সদস্য নাজমুল করিম চৌধুরী শারুনসহ আওয়ামী লীগের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

নেতা-কর্মীদের ভিড় ঠেলে সামশুল হক চৌধুরী চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। বেলা তিনটায় সার্কিট হাউসে পৌঁছালে তাকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়।

পরে তিনি তার নিজ নির্বাচনী এলাকা পটিয়ার নিজ গ্রাম শোভনদন্ডীর রশিদাবাদে মা-বাবার কবর জেয়ারত করেন এবং পটিয়া হাউসে নেতা-কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।  

বাংলাদেশ সময়: ২১০০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২, ২০১৯
টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।